কেয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের ছায়া পাবেন সাত শ্রেণির মানুষ

কেয়ামতের
দিন আল্লাহর আরশের ছায়া পাবেন সাত শ্রেণির মানুষ
প্রতিটি
মাখলুককেই কাল কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কিয়ামতের ময়দানের
সেই কঠিন মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে রাসুল (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন মানবমণ্ডলীকে
লাল শ্বেত মিশ্রিত এমন এক সমতল ভূমিতে একত্র করা হবে, যেন তা পরিচ্ছন্ন আটার রুটির
মতো। ওই জমিনে কারো (বাড়িঘরের বা অন্য কিছুর) চিহ্ন থাকবে না। (বুখারি ও মুসলিম)
কিয়ামতের
দিনটি প্রচণ্ড উত্তপ্ত থাকবে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, বিচার দিবসে সূর্যকে
মানুষের কাছে আনা হবে, তা হবে তাদের থেকে এক ফরসাখ (তিন মাইল) দূরে। ব্যক্তির আমল
অনুযায়ী ঘামের মধ্যে অবস্থান করবে। কারো ঘাম হবে টাখনুসমান, কারো হাঁটুসমান, কারো
কোমরসমান, কারো মুখসমান। (মিশকাত, পৃষ্ঠা : ৪৮৩)
সেই
বিভীষিকাময় মুহূর্তে মহান আল্লাহ কিছু মানুষকে তাঁর রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় দেবেন।
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যেদিন আল্লাহর (রহমতের) ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে
না, সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা তাঁর নিজের (আরশের) ছায়ায় আশ্রয় দেবেন।
(বুখারি, হাদিস : ৬৬০)
১. ন্যায়পরায়ণ শাসক বা রাষ্ট্র প্রধান : মহান আল্লাহ এই শ্রেণির লোকদের ভীষণ ভালোবাসেন। পবিত্র কোরআনে
ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন। (সুরা হুজরাত, আয়াত : ৯)
২. যে যুবকের জীবন গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের
ইবাদতের মধ্যে : যৌবন মহান আল্লাহর
অনেক বড় নিয়ামত। এই নিয়ামতকে যারা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, তারাই সফল হয়।
সাধারণত যৌবন মানুষকে বেপরোয়া বানিয়ে দেয়, যৌবনের তাড়নায় কেউ কেউ ডুবে যায় পাপের
সাগরে। এই যৌবনকে যারা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করবে, তারা কঠিন কিয়ামতের দিন আল্লাহর
আরশের ছায়াতলে আশ্রয় পাবে।
৩. যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে লেগে থাকে : আল্লামা নববী (রহ.) বলেন, মসজিদের সঙ্গে অন্তরের সম্পৃক্ততা
দ্বারা উদ্দেশ্য, মসজিদের প্রতি অগাধ ভালোবাসা। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ গুরুত্বসহকারে
মসজিদে পড়া। সার্বক্ষণিক মসজিদে বসে থাকা নয়। (উমদাতুল কারি : ৫/২৬১)
৪. ওই দুই ব্যক্তি, যারা পরস্পরকে ভালোবাসে
আল্লাহর জন্য : (তারা একত্র হয়
আল্লাহর জন্য এবং পৃথকও হয় আল্লাহর জন্য)। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন
মহান আল্লাহ বলবেন, সেসব মানুষ কোথায়, যারা আমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পরস্পর
পরস্পরকে ভালোবাসত। আজ আমি তাদের আমার আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দেব। আজকের দিনটা এমনই
যে আজ আমার ছায়া ছাড়া কোথাও কোনো ছায়া নেই। (মুআত্তায়ে মালিক, হাদিস : ১৭১৮)
৫.
সে ব্যক্তি, যাকে কোনো সম্রান্ত বংশের খুব সুন্দরী রূপসী নারী তাকে পাপ কাজের জন্য
আহ্বান জানায়, কিন্তু সে এ পাপ কাজে সাড়া
না দিয়ে প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে ‘আমি
আল্লাহকে ভয় করি’। সেই সব মুত্তাকিকে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাঁর আরশের ছায়াতলে
আশ্রয় দেবেন।
৬.
সে ব্যক্তি, যে এমন গোপনে দান করে যে তার ডান হাত যা খরচ করে বাম হাত তা জানে না।
এর দ্বারা উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান-সদকাকারীকে মহান আল্লাহ
কিয়ামতের দিন আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দেবেন।
৭.
সে ব্যক্তি, যে নির্জনে আল্লাহর জিকির করে, ফলে তার দুই চোখ দিয়ে অশ্রুধারা বইতে
থাকে।
কেয়ামতের দিন
ঈমানদারদের চেহারা উজ্জ্বল হয়ে ওঠবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘ওই দিন কিছু লোকের চেহারা
উজ্জ্বল হবে, আর কিছু লোকের চেহারা হবে কালো। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১০৬)
ঈমানদারদের চেহারা
হবে উজ্জ্বল এবং তারা হবে সফলকাম। আর পাপীদের চেহারা হবে কালো, কুৎসিত। আল্লাহ
তাআলা বলেন, ‘অপরাধীরা সেদিন নিজ নিজ চেহারা দ্বারাই চিহ্নিত হয়ে যাবে এবং তাদের
কপালের চুল ও পা ধরে টেনে-হিঁচড়ে নেওয়া হবে। ’ (সুরা আর-রাহমান, আয়াত : ৪১)
কেয়ামতের মাঠে সব
প্রাণীকে দুনিয়ার প্রতিশোধ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। অতঃপর জীবজন্তুকে বলা হবে—মাটি হয়ে যাও। তখন সবাই মাটি হয়ে যাবে। আর
পাপীরা যখন সামনে কঠিন বিপদ-মুছিবত দেখবে, তখন বলবে—হায়! যদি আমি মাটি হয়ে যেতাম, তাহলে অনেক ভালো হতো।
উপরোক্ত
গুণগুলো একজন খাঁটি মুত্তাকির মধ্যেই পাওয়া যায়। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে
পরিপূর্ণ তাকওয়া অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

সাম্প্রতিক মন্তব্য


মোঃ তারেকুন্নবী ICT4E জেলা অ্যাম্বাসেডর
লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। আমার এ পাক্ষিকে আপলোডকৃত কনটেন্টটি দেখে লাইক, গঠন মূলক মতামত ও রেটিং প্রদানের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

মোছাঃ জেসমিন আক্তার
লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো। আমার এ পাক্ষিকে আপলোডকৃত ৫২ তম কনটেন্টটি দেখে লাইক,গঠন মূলক মতামত ও রেটিং প্রদানের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

মোঃ নূরল আলম
পূর্ণ রেটিং সহ শুভ কামনা ও ধন্যবাদ। আমার কন্টেন্ট দেখার আমন্ত্রন রইল।
মতামত দিন