প্রধান শিক্ষক
২৭ জুলাই, ২০২১ ০৯:০৩ পূর্বাহ্ণ
টমাস আলভা এডিসন...; মোছাঃ মারুফা বেগম, প্রধান শিক্ষক, ডিমলা, নীলফামারী।
টমাস আলভা
এডিসন...
একজন মায়ের পজেটিভ চিন্তা-ভাবনায়, পজেটিভ সহযোগিতায় একজন সন্তান যে অনন্য
মর্যাদায় পৌঁছাতে পারে টমাস আলভা এডিসন তার জ্বলন্ত প্রমাণ।
টমাস আলভা এডিসন-এর
মোট ১০৯৩টি আবিষ্কারের পেটেন্ট ছিলো। এগুলোর মধ্যে বৈদ্যুতিক বাল্ব, আধুনিক
ব্যাটারি, কিনটোগ্রাম ক্যামেরা (প্রথম যুগের ভিডিও ক্যামেরা),
সাউন্ড রেকর্ডিং ইত্যাদি ছিল তার সেরা ও সবচেয়ে বিখ্যাত আবিষ্কার।
১৮৪৭ সালের ১১
ফেব্রুয়ারি জন্ম নেওয়া টমাস আলভা এডিসন একজন বিশ্ব বিখ্যাত আমেরিকান বিজ্ঞানী, আবিষ্কারক
ও সফল উদ্যোক্তা। খুবই সাধারণ অবস্থা থেকে প্রতিভা আর পরিশ্রমের জোরে তিনি সমাজের
সবচেয়ে ওপরের সারির একজন হিসেবে নিজের জায়গা করে নেন এবং ইতিহাস বদলানো একাধিক
আবিষ্কারের মাধ্যমে পৃথিবীর চেহারা পাল্টে দেন।
এ বিখ্যাত মানুষটির
জীবনী থেকে জানা যায়, ছোটবেলায় টমাসের ওপর তার মায়ের দারুণ প্রভাব ছিল।
একদম ছোটবেলায় লালজ্বরে আক্রান্ত হয়ে টমাসের দুই কানে ইনফেকশন হয় এবং বড়ো হয়েও
তিনি কানে প্রায় শুনতেনই না।
ছোটো টমাস এতটাই
দুষ্ট আর পড়াশোনায় অমনোযোগী ছিলেন যে, তার স্কুল থেকে প্রায়
প্রতিদিনই অভিযোগ আসতে শুরু করলো।
পিতৃহারা ৭-৮ বছর
বয়সের ছেলেটি স্কুল হতে বাড়িতে এসে মাকে বলল,
“মা,
প্রিন্সিপাল আমাকে আদর করে কিছু ক্যান্ডি দিয়েছে। আর তোমার জন্য এ
চিঠিটা।”
মা চিঠিখানা খুলে
পড়ে কেঁদে ফেললেন। মায়ের চোখে জল দেখে ছেলেটি বলল, “মা, কাঁদছ কেনো?”
চোখ মুছতে মুছতে মা
বললেন,
“বাবা, এটা আনন্দের কান্না!” বলেই ছেলেটিকে
চুমু দিয়ে বললেন, “আমার জিনিয়াস বাবা, তোকে
চিঠিটা পড়ে শোনাই।”
মা আনন্দের সাথে
চিৎকার করে স্যারের লেখার ভাষা বদলে নিজের মতো করে পড়তে লাগলেন,
“ম্যাম, আপনার ছেলেটি
সাংঘাতিক জিনিয়াস। আমাদের ছোট্ট শহরে ওকে শিক্ষা দেওয়ার মতো শিক্ষক আমাদের নেই।
তাই, যদি পারেন আপনার ছেলেকে বড়ো শহরে কোনো স্কুলে ভর্তি করে
দিলে ভালো হয়। এ ছেলেটি একদিন বিশ্বে প্রচুর সুনাম অর্জন করবে।”
পত্রখানা পড়েই মা, ছেলেটিকে
চুমু দিয়ে বললেন, “এ জিনিয়াস ছেলেটিকে আমি নিজেই পড়াব।”
মা ন্যান্সি এডিসন
টমাসকে স্কুল থেকে ছাড়িয়ে নিজেই বাসায় পড়াতে লাগলেন। উল্লেখ্য যে, টমাসের
স্কুল জীবন ছিল মাত্র ১২ সপ্তাহ বা ৩মাস। এডিসনের বয়স যখন ১১ বছর তখন মা ন্যান্সি
খেয়াল করলেন ছেলে নিজের ইচ্ছায়ই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আগ্রহের সাথে পড়াশোনা করছে। মা
ন্যান্সি টমাসকে তার নিজের যা পড়তে ভালো লাগে তা-ই পড়ার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। এবং
দেখা গেল, এতে করে টমাসের পড়ার প্রতি দারুণ একটি আগ্রহ
সৃষ্টি হয়েছে। ইচ্ছামতো জ্ঞান অর্জন করার এ স্বভাবই পরে ‘লিটল টমাস’কে ‘টমাস আলভা
এডিসন’ দি গ্রেট ইনভেন্টর হতে সাহায্য করেছে।
মা নিজেই শিক্ষা
দিয়ে ছেলেটিকে যুক্তরাষ্ট্রের তথা সমগ্ৰ পৃথিবীর অন্যতম সেরা মানুষ হিসেবে পরিচিত
করে তোলেন।
মায়ের মৃত্যর পর
টমাস এডিসন একদিন সেই ছোট্ট গ্রামে মায়ের সেই ছোট্ট বাড়িতে গিয়ে ঘর পরিষ্কারের সময়
স্কুলের প্রিন্সিপালের দেওয়া চিঠিটা পেল। চিঠিখানা পড়ে টমাস কেঁদে দিলেন।
তাতে লেখা ছিল,
“ম্যাডাম,
আপনার ছেলে টমাস এডিসন একজন মেন্টালি রিটার্ডেড। সে এতটাই
নির্বোধ যে, তাকে শিক্ষা
দেওয়ার মতো ক্ষমতা আমাদের নেই। কারও আছে বলেও আমাদের জানা নেই। আপনার ছেলের কারণে
আমাদের স্কুলটির সুনাম ক্ষুন্ন হবে। তাই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনার ছেলেকে
স্কুল থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হলো।”
# এ
থেকে বোঝা যায়, সন্তানের সাথে পজিটিভ আচরণ করলে সন্তানও পজিটিভলি রেসপন্স করবে। বাসস্থান
হলো সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মা হলেন সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক।
(সংগৃহীত)
মোছাঃ মারুফা বেগম (এম এ, এম এড)
প্রধান শিক্ষক
খগা বড়বাড়ী বালিকা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়
ডিমলা, নীলফামারী।
ICT4E জেলা অ্যাম্বাসেডর, নীলফামারী
ও সেরা কনটেন্ট নির্মাতা, a2i.gov.bd
Email
ID: lizamoni355@gmail.com