Loading..

খবর-দার

০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:২৪ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষার চাহিদা

কারিগরি শিক্ষা বিশ্ব বনাম বাংলাদেশ

ভোকেশনাল এডুকেশন বা কারিগরি শিক্ষা এমন এক শিক্ষা পদ্ধতি যেখানে পাস-ফেল বলে কিছু নেই। বরং এটি একজন মানুষকে যোগ্য প্রতিযোগী করে গড়ে তোলার এক প্রয়াস, যেখানে হয় আপনি যোগ্য অথবা এখনও যোগ্য নন।তাই পরিপূর্ণ দক্ষতা অর্জনের জন্য এবং একজন যোগ্য প্রতিযোগী হতে আপনাকে যতবার প্রয়োজন ততবার পরীক্ষা দেবার এবং নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ দেয়া হয়।কারিগরি শিক্ষায় তত্ত্বীয় পড়াশুনার চেয়ে বাস্তব প্রয়োগে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়, যাতে করে একজন কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ব্যক্তি নিজের যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে সবচেয়ে ভালো কাজের সুযোগ খুঁজে নিতে পারে ।বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা থাকায় কারিগরি শিক্ষাকে চাকুরির ক্ষেত্রেও খুব গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। একজন চাইলে খুব সহজেই কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করে নিজের পূর্বের কাজ থেকে বেরিয়ে নতুন কাজ করতে পারে এবং নিজের ক্যারিয়ার কে সমৃদ্ধ করতে পারে।প্রতিযোগিতার বাজারে কারিগরি শিক্ষা যোগ্য প্রতিযোগী তৈরিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। সমমানের শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি এই পদ্ধতি কার্যকর এবং যুগোপযোগী। শিক্ষায় উন্নত দেশগুলোতে আমরা কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রমের প্রসারিত চিত্র দেখতে পাই।

***দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেইবাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার প্রয়োজন। এর মাধ্যমে প্রয়োজন মানবসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদের দক্ষতা বাড়িয়ে দারিদ্র্য বিমোচন, ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা। এ লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে কারিগরি শিক্ষার হার বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে ২০২১, ২০৩০ ও ২০৪০ সালের মধ্যে এ হার যথাক্রমে ২০, ৩০ ও ৪০ শতাংশে উন্নীত করবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য দেশে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন ও তার আলোকে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠনসহ নতুন নতুন কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হচ্ছে। তার পরও বলতে হচ্ছে, দেশে কারিগরি শিক্ষার হার কাক্সিক্ষত হারে বাড়েনি।

কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে পত্রপত্রিকায় নতুন যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তাতে হতাশার সুর রয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কারিগরি শিক্ষায় বিরাজ করছে শুভংকরের ফাঁকি। কারিগরি শিক্ষার্থীর বর্তমান হার ১৪ শতাংশ বলা হলেও আন্তর্জাতিক কারিগরি শিক্ষার সংজ্ঞা অনুযায়ী বাস্তবে এটা ৮.৪৪ শতাংশ। কারণ এ শিক্ষাব্যবস্থায় রয়েছে নানাবিধ সংকট। শ্রেণিকক্ষ, ল্যাবরেটরি ও শিক্ষকসংকট মারাত্মক। এক শিক্ষককে দিয়ে চালানো হচ্ছে দুই শিফট। এ নিয়ে শিক্ষকের মধ্যে ক্ষোভ বিদ্যমান। ফলে মানসম্পন্ন কারিগরি শিক্ষা যেনো সুদূরপরাহত। এই শিক্ষাব্যবস্থা হতে মেয়েরা কেনো বিমুখ হচ্ছে তা অনুসন্ধান করা উচিত। শ্রমবাজারের সঙ্গে অনেক কোর্স-কারিকুলামের কোনো সংগতি নেই। অর্থাৎ সিলেবাস এখনো যুগোপযোগী নয়। কারিগরি শিক্ষা লাভ করে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীরা তেমন একটা সুযোগ পাচ্ছে না, ফলে বাড়তেছে না তাদের সামাজিক মর্যাদা। এ কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কারিগরি শিক্ষায় ভর্তি করতে উৎসাহিত হচ্ছেন না।