সহকারী শিক্ষক
২০ মে, ২০২২ ০৯:৩৬ অপরাহ্ণ
আমের উপকারিতা
আমের উপকারিতা
এখন প্রশ্ন
হল,আম কেন খাবেন? কারণ, এটি একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন
অস্বাভাবিকতার বিরুদ্ধে কাজ করে, আমের উপকারিতা ব্যাপক । যেমন-
কর্মশক্তি বৃদ্ধি:
আমে রয়েছে
প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, যা কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের
জন্য পরিমিত পরিমাণ আম শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা
যদি ৫-৬টি আম পাতা ধুয়ে একটি পাত্রে সেদ্ধ করে নিয়ে সারারাত রেখে সকালে এর ক্বাথ
ছেকে নিয়ে পান করে করেন তাহলে এটা ইন্সুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেন।
এছাড়া, এই ফলে রয়েছে উচ্চ মাত্রার গ্লুটামাইন এসিড নামক প্রোটিন যা মনোযোগ ও
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মর্নিং সিকনেস দূরীকরণ:
কাঁচা আম
গর্ভাবস্থার উপসর্গের তীব্রতা কমাতে এবং ঘন ঘন মর্নিং সিকনেস হওয়ার প্রবণতা কমাতে
সাহায্য করে । নিয়মিত কাঁচা আম খেলে মর্নিং সিকনেস পুরোপুরি দূর হয়।
স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধে:
আম থেকে
ভিটামিন সি পাওয়া যায় যা স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। দাঁত, মাড়ি,
ত্বক ও হাড়ের সুস্থতা রক্ষা করতেও সাহায্য করে ভিটামিন ‘সি’। এছাড়া, আমে ভিটামিন
‘সি’ ‘এ’ এবং বিভিন্ন ধরনের প্রায় ২৫টি ক্যারোটিনয়েড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে
খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
চোখের যত্নে:
আমে রয়েছে
প্রচুর ক্যারোটিন যা চোখ সুস্থ রাখে, সর্দি-কাশিও দূর করে। শুধুমাত্র এক কাপ
পাকা আম খেয়ে সারাদিনের ভিটামিন এর চাহিদার ২৫% পূরণ করা সম্ভব। এটা দৃষ্টিশক্তিকে
উন্নত করতে সাহায্য করে, চোখের শুষ্কতা ও রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করতেও সাহায্য করে।
হাড় গঠনে:
আমে রয়েছে
ক্যালসিয়াম, যা হাড় গঠনে সাহায্য করে। সুতরাং প্রতিটি মানুষের আম খাওয়া প্রয়োজন।
তাহলে হাড় ও দাঁত সুস্থ থাকবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণ এবং হজমে সাহায্য করে:
আম প্রচুর
খাদ্য আঁশ, ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর। আম উচ্চ আঁশযুক্ত হওয়ায় তা স্বাস্থ্যের জন্য
খুবই উপকারী। এটা হজমের জন্য ভালো এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে খুবই কার্যকর। তাই
যাদের হজমের সমস্যা আছে, তারা আম খেলে অনেক উপকার পাবেন।
কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায়:
আমে থাকা
উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘সি’, পেকটিন ও আঁশ কোলেস্টেরলের ক্ষতিকর মাত্রা কমাতে
সাহায্য করে। আম পটাশিয়ামের খুব ভালো উৎস যা উচ্চ রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে
সাহায্য করে। ঘামের কারণে শরীর থেকে সোডিয়াম বের হয়ে যায়। আর, কাঁচাআম শরীরের সেই
সোডিয়ামের ঘাটতি পূরণ করতে পারে। কাঁচাআমের পেকটিন গ্যাস্ট্রোইন টেস্টাইনাল রোগের
চিকিৎসায়ও অত্যন্ত উপকারী। আমে উচ্চ আঁশ ও এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় তা হৃদরোগের
সম্ভাবনাকে কমায় এবং এর বিদ্যমান পটাশিয়াম রক্তস্বল্পতা দূর করে ও হৃদযন্ত্র সচল
রাখতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ:
আম ক্যান্সার
প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান পালন করে। গবেষকরা বলেছেন যে, আমে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও
উচ্চ পরিমাণ খাদ্য আঁশ থাকার কারণে এটা কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সার,
রক্তস্বল্পতা, লিউকেমিয়া ও প্রোস্টেট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।
এছাড়াও ক্যারোটিন, আইসো-কেরোটিন, এস্ট্রাগ্যালিন, ফিসেটিন, গ্যালিক এসিড ইত্যাদি
এনজাইম ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।
তারুণ্য ধরে রাখতে:
আমে থাকা
ভিটামিন ‘সি’ কোলাজেনের উৎপাদনে সাহায্য করে যার ফলে ত্বক সতেজ ও টানটান হয়। এতে
রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘ই’ যা ত্বক ও চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া,
ভিটামিন ‘ই’ থাকাতে এটা সেক্স হরমোনকেও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
নাছিমা আক্তার
সহকারী শিক্ষক
মহেশপুর আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
বরুড়া, কুমিল্লা।
[সুত্রঃ
অনলাইন ডেক্স]