Loading..

প্রকাশনা

২১ জুন, ২০২২ ০১:০৪ অপরাহ্ণ

ছোট ছোট অভ্যাস থেকেই বড় সাফল্য

ছোট ছোট অভ্যাস থেকেই বড় সাফল্য

কোনো একটা বিষয়ে নিয়মিত অনুশীলন করতে থাকলে তা একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। তখন এই কাজকে আর বাড়তি কিছু বা আলাদা কাজ বলে মনে হয় না। ছোট ছোট অভ্যাস তৈরির জন্যে খুব একটা আয়োজনের দরকার নাই। তবে এই ছোট ছোট অভ্যাসের মাধ্যমেই আপনি বড় কিছু আয়ত্ত করতে পারবেন সহজেই।

আপনি যদি আসলেই বড় কোনো সাফল্য চান তাহলে ছোটখাটো অভ্যাস ও অর্জনকে গুরুত্ব দিতে হবে।

#১. অর্থবহ জিনিসগুলি সময় নিয়ে আসে

রাতারাতি সাফল্য অসম্ভব ব্যাপার। কোনো কিছুর পেছনে যথেষ্ট পরিশ্রম না দিলে তা থেকে আপনি ভাল ফলাফল পাবেন না। দীর্ঘদিনের যেকোনো অভ্যাস মানেই সেটা আপনার দীর্ঘদিনের ছোট ছোট সিদ্ধান্তের ফল।

প্রতিদিন কিছু নিয়ম মনোযোগের সাথে অনুশীলন করলে সেটা পরবর্তীতে সাফল্য হিসাবে দেখা দেয়। বিপরীতভাবে, কিছু ভুল প্রতিদিন করলে সেটাই পরবর্তীতে বড় ব্যর্থতা হিসাবে দেখা দেয়।

একজন দক্ষ পেশাদার ব্যক্তির সাথে গতানুগতিক পেশাদার ব্যক্তির পার্থক্য কোথায় জানেন? পার্থক্য হলো, দীর্ঘদিনের অধ্যবসায়ে। পারফরমেন্স ভালো করার উদ্দেশ্যে কিছু একটার পিছনে লেগে থাকা।

বিশ্ববিখ্যাত গলফ খেলোয়াড় টাইগার উডসের উদাহারণ দেওয়া যাক। টাইগার উডস গলফ খেলা শুরু করেছিলেন মাত্র ২ বছর বয়সে। বিখ্যাত টেনিস খেলোয়াড় সেরেনা উইলিয়ামস শুরু করেছিলেন ৩ বছর বয়সে। আর তার ছোট বোন, আরেক বিখ্যাত টেনিস খেলোয়াড় ভেনাস উইলিয়ামস শুরু করেছিলেন ৪ বছর বয়সে।

আমেরিকার বিখ্যাত লেখক কার্ট ভনেগার্ট টানা ২৫ বছর প্রতিদিন লিখেছেন। ২৫ বছর পরে তিনি প্রথম তার বেস্টসেলার বই এর দেখা পান। আইনস্টাইন তার জীবদ্দশার অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন একটা জিনিসের পোছনে, সেটা হল থিওরি অব রিলেটিভিটি।

তারা আজ এতদূরে আসতে পেরেছেন কারণ তারা লক্ষ্যের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। প্রতিদিনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অর্জনের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন।

#২. হঠাৎ করে কেউ বিরাট সাফল্য পায় না

বেশিরভাগ মানুষই এই ভুলটা বার বার করে। শুরুতেই বড় অর্জনের জন্যে জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করে। কিন্তু একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, কোনো কিছু অর্জন সম্ভব হয় একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। সেই প্রক্রিয়া হল প্রোডাক্টিভিটি বা কাজ করা।

আপনি যত সফল লোক দেখেছেন বা সফল লোকেদের সম্পর্কে পড়েছেন তাদের কেউই হঠাৎ করে সফল হয়নি। ধীরে ধীরে খুব অল্প অল্প করে উন্নতি করেছে।

#৩. ধীরে ধীরে উন্নতি করার জাপানি পদ্ধতি
কাইজেন

ভালো অভ্যাস তৈরি করার জন্যে অথবা খারাপ অভ্যাস বদলানোর জন্যে জাপানি পদ্ধতি কাইজেন খুব কার্যকর। ব্যবসা শুরু বা নতুন কিছু শেখার ক্ষেত্রেও কাইজেন খুব কাজে লাগে।

এই পদ্ধতির মূল কথা হলো, নতুন কিছু শুরু করলে শুরুটা ভুলের সঙ্গে ও অসম্পূর্ণভাবে করা ভাল। এরপর প্রতিদিন আগের দিনের চেয়ে শতকরা ১ শতাংশ করে ধীরে ধীরে উন্নতি করতে হবে।

পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে বা গবেষণা করে কোনো কাজে নামার চেয়ে প্রতিদিন খুব সামান্য উন্নতি করতে করতে আগানোটাই কার্যকর পদ্ধতি। এটাই কাইজেনের মূল কথা।

কারণ অভ্যাস একদিনে বদলায় না বা একদিনে তৈরি হয় না। কিন্তু অল্প অল্প করে আগালে সেটা কাজে লাগে। অনুশীলনের মাধ্যমেই অভ্যাস তৈরি হয়।

যদি নিজের ওপর জোর খাটিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে কোনো অভ্যাস বদলে ফেলতে চান বা নতুন অভ্যাস তৈরির চেষ্টা করেন, তাহলে নির্ঘাত ব্যর্থ হবেন।

কিন্তু প্রতিদিন যদি ১ শতাংশ করে আগান, তাহলে একটা সময়ে গিয়ে এটাকে আপনার রুটিন কাজে পরিণত করে ফেলতে পারবেন।

যে পরিস্থিতিতেই থাকুন না কেন, প্রতিদিন বা নিদেনপক্ষে প্রতি সপ্তাহে ১ শতাংশ পরিবর্তন বা ১ শতাংশ উন্নতি করা খুবই সম্ভব।

একটা কথা মাথায় রাখবেন। আজকে যদি শুরু না করেন, আজ থেকে এক বছর পরে আপনাকে এই আফসোস করতে হবে যে কেন ওইদিন শুরু করেন নাই! তারচেয়ে আজ থেকে শুরু করাই ভালো।

সৌজন্যে -সিবি

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি