Loading..

ম্যাগাজিন

০২ জুলাই, ২০২২ ০৪:০৯ অপরাহ্ণ

কমলা ভট্রাচার্য

 কমলা ভট্রাচার্য

বিশ্বের প্রথম ও একমাত্র নারী ভাষা শহিদ কমলা ভট্রাচার্য। তিনি মাতৃভাষা বাংলাকে রক্ষা করতে গিয়ে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন।

আসামের বরাক উপত্যকার বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল আসাম সরকারের অসমীয়া ভাষাকে রাজ্যের একমাত্র দাপ্তরিক ভাষা করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ,যেহেতু ওই অঞ্চলের জনসংখ্যায় সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ছিল বাংলাভাষী।

কমলা ভট্রাচার্যের জন্ম বর্তমান বাংলাদেশের সিলেট (শ্রীহট্র) জেলায় ১৯৪৫ সালে। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর পাকিস্থান আমলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার জেরে ১৯৫০ সালে কমলাদের পরিবার সিলেটের  পাশবর্তী আসামের কাছাড় জেলার শিলচরে  আশ্রয় নেন। শৈশবেই বাবার মৃত্যুর পর মা ও সাত ভাই-বোনের সংসারে নেমে আসে চরম আর্থিক অনটন । কমলা স্কুলে ভর্তি হন,কিন্তু তাঁর বই কেনার টাকা ছিল না। অনেক কষ্ট করে ,সহপাঠীদের থেকে বই ধার করে পড়ে তিনি ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় বসেন। ম্যাট্রিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার একদিন পরেই ১৯৬১ সালের ১৯শে মে মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার দাবিতে শিলচর রেলওয়ে স্টেশনে শান্তিপূর্ণ পিকেটিংয়ের সময় বিনা প্ররোচনায় পুলিশের গুলিতে মাত্র ১৬ বছর বয়সে (১১ জন সহ) তিনি শহিদ হন ।গুলি চালনার ঘন্টাদেড়েক পূর্বে (দুপুর ১  টায়) মা রেলওয়ে স্টেশনে গিয়েছিলেন তাঁকে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু কমলা মাকে বুঝিয়ে ,আশ্বস্ত  করে বাড়িতে ফেরত পাঠান। আর তিনি ফেরেন মাতৃভাষার জন্য নিজের প্রাণ উৎসর্গ করে।

এই ঘটনার পর আসাম সরকার বাংলাকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দিতে বাধ্য হয়। কমলা ভট্রাচার্য শহিদ হওয়ার পর তাঁর ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়, সেখানে মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি ভালোভাবেই পাশ করেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি অর্জন।তিনি বেঁচে থাকলে এখন তাঁর বয়স হত ৭৭ বছর। কমলা ভট্রাচার্য ও সকল ভাষা শহিদের প্রতি আমাদের অতল শ্রদ্ধা ।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি