Loading..

প্রকাশনা

০৪ অক্টোবর, ২০১৮ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

''কিন্ডার গার্টেনে এতো বই কেন?''
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্খাপন করা মহান কাজই বটে! সেটি যদি শিশুদের জন্য হয় তাহলে তো অারো উত্তম কাজ ৷ কিন্তু প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পিছনে যদি ব্যবসায়িক মন-মানসিকতা থাকে তাহলে তো কাউকে বিপদে ফেলে তার উপর ইচ্ছেমত জুলুম করারই সামিল ৷ তারা মনেই করেনা যে , মহান কাজটি জুলুমে পরিনত হয় ও মানুষের মনে অাঘাত দেয়া হয় ৷ সে রকমই ঘটনা ঘটছে দেশের কিন্ডারগার্টেন ভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ৷দেশ বরন্যে শিক্ষাবিদ কলামিষ্ট তাদেরকে অতিরিক্ত বই পাঠ্য না করার জন্য ও শিশুদের উপর মানসিক চাপ না দেয়ার জন্য বারবার পরামর্শ দিলে ও তা তাদের কানের কাছেও যেন যাচ্ছে না! শুধু তাই নয় সরকার কিন্ডারগার্টেনগুলো খতিয়ে দেখতে ও তাদেরকে নিয়ন্ত্রনে অানার জন্য ৫৫৯টি টাস্কফোর্স গঠন করলে সেগুলো দৃশ্যমান কার্যক্রম কোন কিছুই না দেখার কারনেই মনে হয়ে তারা অারো বেশি পাখা নাড়ছে ৷ সর্ব শেষ মহামান্য হাইকোর্ট শিশুদের ওজনের ১০% এর বেশি ব্যাগের বোঝা না দেয়ার জন্য রায় দিলেও কিন্ডার গার্টেন যেন সে রায়ের প্রতিও শ্রদ্ধা দেখাচ্ছে না ৷ তারা এক গাদা বই পাঠ্য করে, এক গাদা হ্যান্ড নোট শিশুদের কাছে বিক্রি করে শিশুদেরকে ব্যাগের বোঝা বহন করিয়ে কুজো বানিয়ে দিচ্ছে ৷ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদেরকেই সরকার নির্ধারীত তিনটি বই ছাড়াও অারো ৭-৮ টি বই কিনতে বাধ্য করছে ৷ যেগুলোর নাই কোন এনসিটিবির অনুমোদন, এমনকি সে বইগুলো অধিক নিম্নমানের ও ভুলে ভরপুর ৷ সেগুলোর দামও অাকাশচুম্বি ৷ দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য পাঠ্য করা ২৬ পাতার একটি বইয়ের লিখিত মূল্য ১২০ টাকা, ১৫% কমিশনে বিক্রি করা হয় ১০০ টাকা ৷ প্রথম শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্তু তাদের পাঠ্যকৃত ৫-৭ টি বইয়ের দাম ৬০০-১০০০ টাকা ৷ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি একটু খতিয়ে দেখেন এত ছোট বইয়ের দাম এত বেশি কেন তাহলে থলের বিড়াল বেড়িয়ে অাসতে পারে ৷ প্রশ্ন হতে পারে অভিভাকেরা কেন সেখানে শিশু ভর্তি করান? সবাই জ্ঞাত যে, স্বাভাবিকভাবেই বাড়ির কাছে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকলে কিংবা বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ভালো না হলে সচেতন অভিভাবকেরা সস্তানদের ভালো শিক্ষা দেবার অাশায় অনেক টাকা ব্যয় করে হলেও কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি করান ৷ অার কিন্ডারগার্টেনগুলো সে দুর্বলতার সুযোগটা গ্রহণ করে নিজেদের পন্ডিতি জাহির করতে অতিরিক্ত বই পাঠ্য করে শিশুদের উপর মানসিক নির্যাতন চালায় ৷ অনেক শিশুরাই অতিরিক্ত পড়ার চাপে খাওয়া দাওয়া বন্ধকরে দেয় ও শারীরিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়ে ; এমনকি শিশুরা মানসিক চাপে কারো সাথে মিশতে চায় না ও মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে ৷ একটি কিন্ডার গার্টেনে দেখা গেল দ্বিতীয় শ্রেণির প্রথম মাসিক পরীক্ষার জন্য তাদের নির্ধারীত হ্যান্ড নোট থেকে Reading Room, Yourself, Your Mother, Mango, The Cow এবংOur School এই ছয়টি Paragraph দেয়া হয়েছে অন্তত ৫০ Word সংবলিত লেখার জন্য ৷ শুধু তাই নয় অারো অাছে Gender পরিবর্তন ৷ অার গনিতের জন্য দেয়া হয়েছে মেট্রিক পদ্ধতির, ব্রিটিশ পদ্ধতির, দেশিয় পদ্ধতির সূত্রসহ পরিমাপের সকল সূত্রাবলী মুখস্থ করন ৷ এ Lesson গুলো কি দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য উপযোগী? অভিভাবকেরা অভিযোগ দিলেও তারা তা কোন অামলেই নিচ্ছে না ৷ কারন তারা তো অধিক পন্ডিত! তারা মনে হয় এটা জানেন না যে তাদের পন্ডিতির কত যে বহর তা কিন্তু অভিভাবকেরা ভালোভাবেই জানেন ৷ সরকার মুখস্থ বিদ্যা থেকে বেরিয়ে অাসতে শিক্ষা ব্যবস্থায় অামুল পরিবর্তন অানছে, অার কিন্ডার গার্টেনগুলো মুখস্থ বিদ্যা অারো বাড়িয়ে ও ব্যাগের বোঝা বাড়িয়ে দিয়ে শিশুদের উপর অারো চাপ বাড়িয়ে তাদের উপর শারীরিক মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে ৷ পরিশেষে কিন্ডার গার্টেন নিয়ন্ত্রণে ও স্থাপনে বিশেষ কার্যত পদক্ষেপ গ্রহণ করে শিশুদের শিক্ষালয়কে অানন্দালয়ে পরিনত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি অাকর্ষণ করছি ৷ মো. মহসিন মিয়া শিক্ষক

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি