Loading..

খবর-দার

২২ নভেম্বর, ২০১৮ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

শ্রেণি ব্যবস্থাপনার কৌশল:

শ্রেণি ব্যবস্থাপনার কৌশল:

এক সময় শিক্ষাদান পদ্ধতি ছিল শিক্ষক কেন্দ্রিক। বর্তমানে তা পাল্টে গিয়ে শিক্ষাদান পদ্ধতি শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক হচ্ছে। তবে বর্তমানে মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক পাঠদান বা অংশগ্রহণমূলক শিক্ষাদান পদ্ধতি জোরদার হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ করে কলেজগুলোতে অধিকাংশ পাঠদান পদ্ধতি শিক্ষক কেন্দ্রিক। যেখানে পাঠদান কালে শিক্ষক মূল ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তবে একথা মনে করার কোনো সঙ্গত কারণ নেই যে, শিক্ষক কেন্দ্রিক পদ্ধতি অনুসরণে শিক্ষাদান কর্মকে বাস্তবায়িত করলে শিক্ষার্থীর সম্পূর্ণভাবে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। শিক্ষক কেন্দ্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষাদান কর্মকে সজীব করে তুলতে শিক্ষকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে শিক্ষার্থীগণ তাদের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সজাগ রেখে শিক্ষক যা বলেন তা যদি বুঝতে বা অনুধাবন করতে কিংবা অনুসরণ করতে চেষ্টা না করে তবে শিক্ষকের ভূমিকা যতোই গুরুত্বপূর্ণ হোক, শিক্ষাদান সেখানে ব্যর্থ হতে বাধ্য। সুতরাং শিক্ষক কেন্দ্রিক শিক্ষাদান পদ্ধতিতেও শিক্ষার্থীর ভূমিকা রয়েছে, তবে শিক্ষার্থীর ভূমিকা সেখানে প্রধান নয়। যে শিক্ষাদান পদ্ধতিতে শিক্ষকের ভূমিকাই মুখ্য আর শিক্ষার্থীর ভূমিকা গৌণ, সেই শিক্ষাদান পদ্ধতিই বহুদিন থেকে আমাদের দেশে প্রচলন হয়ে আসছে। এ কারণেই শিক্ষক কেন্দ্রিক এ শিক্ষাদান পদ্ধতিকে সনাতন নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। শিক্ষাদান কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য উপযুক্ত শ্রেণিকক্ষ এবং সেখানকার অনুকূল পরিবেশ প্রয়োজন। শিখনকে প্রয়োগমুখী করে গড়ে তোলার জন্য শ্রেণি ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যাবলি শ্রেণিকক্ষের সার্বিক বিন্যাস শিখনের উত্তম পরিবেশ তৈরির নির্ধায়ক। শিক্ষার্থীরা যতোক্ষণ বিদ্যালয়ে অবস্থান করে তার অধিকাংশ সময় শ্রেণি কক্ষে কাটান। তাই শ্রেণি কক্ষের সার্বিক পরিবেশ যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করে। সাধারণ অর্থে শ্রেণি ব্যবস্থাপনা বলতে শিক্ষাক্রমের আলোকে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের শিখন প্রক্রিয়াকে বুঝায়। সুষ্ঠু শ্রেণি শৃঙ্খলা এবং শ্রেণি ব্যবস্থাপনা ব্যতীত উত্তম পাঠদান তথা আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি প্রবর্তন করা সম্ভব নয়। তাই পাঠদান পদ্ধতিকে শিক্ষার্থীর হৃদয়গ্রাহী, তথ্যনির্ভর এবং আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে হলে শিক্ষককে শ্রেণি ব্যবস্থাপনার ওপর জোড় দিতে হবে। উপযুক্ত পদ্ধতি ও কৌশলের মাধ্যমে পাঠদানকে ফলপ্রসূ করা এবং কার্যকরি পাঠ পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণকে শ্রেণি ব্যবস্থাপনা বলে। শিক্ষাবিদদের মতে, দেশের সকল শিক্ষার্থীকে সুষম ও মানসম্মতন শিক্ষণ প্রদানের জন্য শ্রেণি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অনেক বেশি। শ্রেণি কক্ষে শিক্ষকদের ক্ষমতা প্রয়োগ ও নিয়ন্ত্রণ সহযোগিতামূলক হবে। অংশগ্রহণমূলক শিক্ষণ শিখন পদ্ধতি চালু করে শিক্ষার্থীর শিক্ষণ শিখনের আংশিক দায়িত্ব অর্পণের মাধ্যমে শ্রেণি কক্ষে শিক্ষক তার একচ্ছত্র আধিপত্য কমাবেন। এই প্রক্রিয়ায় শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীগণ শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক- শিক্ষার্থী পারস্পারিক মিথস্ক্রিয়ার জ্ঞান অর্জন করে থাকে। শ্রেণি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে কোনো ক্রটি শিক্ষণ শিখনের আধুনিক এ পদ্ধতির সফল বাস্তবায়নে ব্যাঘাত ঘটবে। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষ এমনভাবে স্থাপন ও সাজানো উচিত যাতে শ্রেণি কক্ষটি সহজেই শিক্ষার্থীদের নিকট আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে। নিজ গৃহে ছেলেমেয়েরা যেমন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে ঠিক তেমনি আনন্দদায়ক ও আকর্ষণীয় করে শ্রেণিকক্ষ তৈরি করা দরকার।

শুভেচ্ছান্তে,

মোঃ আবু আব্দুর রহমান সিদ্দিকী

সিনিয়র শিক্ষক (ইংরেজী)

জাগরণী বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যাবীথি

নেওয়াশী, নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম।