Loading..

প্রকাশনা

১৫ অক্টোবর, ২০১৯ ০৬:৪১ অপরাহ্ণ

সামান্য একটু সহানুভুতি
একদিন এক ভিক্ষুক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ তার ভীষণ ক্ষুধা পেল। সে কিছুদূর যাবার পর বিশাল গেটওয়ালা একটা বাড়ি দেখতে পেল। মনে মনে খুব খুশী হল এই ভেবে যে, বড়োলোকের বাড়ী আজকে একটু মজার কিছু খেতে পারবে। ভাবতে ভাবতে সে বাড়ির দারওয়ানকে বলল, সে অনেক ক্ষুধার্ত কিছু খেতে দিবে? দারওয়ান বলল, ঠিক আছে তুমি বাহিরে বস। আমি মেমসাবকে জিজ্ঞাসা করে আসি। ভিক্ষুক বলল ঠিক আছে ভাই। যখন দারওয়ান ভেতরে গেল, ভিক্ষুক দেখল একটা বড় সুন্দর খাঁচার ভেতর খুব সুন্দর একটা কুকুর। তার সামনে একটা প্লেটে অনেক মাংস দিয়ে রাখা হয়েছে। সে দেখে মনে মনে আরও খুশী হল। ভিক্ষুক মনে মনে ভাবল, কুকুরকে এতো মাংস দিছে তাহলে তো আমাকেও অনেক ভালো খাবার দিবে। এদিকে দারওয়ান যখন গৃহকর্ত্রীর কাছে গিয়ে ভিক্ষুককে খাবার দিবার কথা বলল, তখন গৃহকর্ত্রী তার উপর রেগে গিয়ে বলল, খাবার কি আকাশ থেকে পড়ে যে চাইলেই খাবার দিতে হবে? তোর কাজ গেটে দাঁড়িয়ে থাকা, তুই এই খানে কেন এলি? আর যদি এই ভাবে কাজ ফেলে আসবি তাহলে বিদায় করে দেব।’ সামান্য একটু খাবার চাইতে এসে এত কথা শুনতে হল তাকে। দারোয়ান মনে মনে খুব কষ্ট পেল। এই ভেবে আরও দুঃখ হচ্ছিল তা্র, ভিক্ষুকটা ক্ষুধা পেটে বসে আছে, কিভাবে তাকে গিয়ে বলবে, এত বড় বাড়ি দেখলে কি হবে তোমাকে একবেলা খাওয়ানোর মতন খাবার তাদের নেই। ভাবতে ভাবতে সে ভিক্ষুকের কাছে আসলো এবং বলল, ভাই ওনারা ধনী মানুষ তো খাবার কম খায় শরীর ভাল রাখার জন্য। তাই খাবার রান্নাও করে কম, এজন্য তোমাকে দেবার মতন খাবার নাই। এই কথা বলে নিজের পকেট থেকে ৫ টাকা বের করে বলল আমার কাছে এই কয়টা টাকাই আছে, তুমি কিছু খাবার কিনে খেয়ে নিও। ভিক্ষুকের মনটা খারাপ হয়ে গেল। সে দারওয়ানের টাকাটা নিয়ে হাত তুলে দোয়া করল, হে আল্লাহ্ যে আমাকে ক্ষুধা নিবারণের জন্য তার যা ছিল তাই আমাকে দিয়ে দিল তাকে তুমি দুনিয়া এবং আখিরাতের ধনী বানিয়ে দিও। এই কথা বলে সে চলে গেল। কিছুদিন পর দারওয়ান একটা লটারির ১ম পুরস্কার পেল। সে ঐ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করল, কিছুদিনের মধ্যেই তার অনেক টাকা হয়ে গেলে। সেই টাকা দিয়ে সে একটা আশ্রম বানাল। যেখানে অসহায়, অনাথ, বয়স্ক লোকজন থাকত। এদিকে যে বাড়িতে সে কাজ করতো সেই বাড়ির কর্তা হঠাৎ মারা যায়। ছেলেমেয়েরা সবাই যার যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত। বাড়ির কর্ত্রী সবার কাছে বোঝা হয়ে উঠল। সবাই মিলে তাকে ওই দারওয়ানের আশ্রমে রেখে আসলো। আসার পর দেখল তার বাড়ির এক সময়ের দারওয়ান এই আশ্রমের মালিক।

ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস এই আশ্রমে সেদিনের সেই ভিক্ষুকটাও থাকে।

অসহায় ক্ষুধার্তকে কখনো ফিরিয়ে দিবেন না। কতো সময় কতো খাবার আমরা ডাস্টবিনে ফেলে দিই অথচ একটু খাবারের জন্য কতো মানুষ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আপনার সামান্য একটু সহানুভুতি কারো মুখে হাসি ফুঁটাতে পারে। যার যা আছে তাই দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। অসহায় মানুষকে সাহায্য করতে পারলে দেখবেন মনটা খুশিতে ভরে উঠবে। ভাগ্য কখন কাকে কোথায় কোন অবস্থায় রাখে কেউ জানে না।


আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি