প্রধান শিক্ষক
২৭ নভেম্বর, ২০১৯ ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ
একজন রফিকুল স্যা’রের স্বপ্নের স্কুলের গল্প
একজন রফিকুল স্যা’রের স্বপ্নের স্কুলের গল্প
এমন কিছু মানুষ
আছেন, যাঁরা স্বল্প সময়েই
আলোচিত ও সমালোচিত হন,
আপন মনের আলোর রশ্নিতে
আলোকিত করেন চলমান সমাজ সভ্যতা। কর্মক্ষনে
স্বপ্ল সময়ে সাদা মনের
মানুষ হয়ে মনে দাগ
কাটেন তারা।
এমনই একজন শিক্ষাবান্ধব প্রধান
শিক্ষক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। আধুনিক
শিক্ষা বিপ্লবে তিনি এক বীর
যুদ্ধা হিসাবে অখ্যায়িত।
১৯৯৫ সালে তাহের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু
হয়। মানসম্মত
ও আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের
জন্যে বিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত
কাজ করে যাচ্ছেন এই
ব্যক্তি।
বিদ্যালয় আঙ্গিনায় পরিষ্কার
পরিচ্ছন্নতা, ফুলের বাগান, স্কাউটিংসহ সহপাঠ্যক্রম এবং প্রতি নিয়ত সকল কার্যক্রম সুন্দর
ভাবে পরিচালনাই ধার কাজ। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের কাঙক্রমের ভিডিও চিত্র । বিদ্যালয়ের
ছাঁদে দাঁড়িয়ে ঘন্টাখানিক আলাপ ঘটে তার
সাথে। ওই
সময় গরমের অনেক তাপ
থাকলেও প্রাকৃতিক নৈসর্গের সবুজ বৃক্ষ আমাদের
শীতল হাওয়া দিচ্ছিল।
কথার ফাঁকে তিনি তার
অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন ।
সময় আর কর্মব্যস্ততার জন্য
সেদিন কথার ইতি টানতে
হয় আমাদের।
অন্য এক বিকেলে আবার
গল্প জুড়ে দিয়েছিলাম সে
আর আমাদের দল।
গল্পটা বেশ লম্বা হচ্ছে
স্যারের মুখের হাসি সেদিন ও শোভা পাচ্ছে।
অন্যদিকে জেনেনিই, কুষ্টিয়া জেলার পদ্মা- পাশে সোলেমান বাবার ভেড়ামারা উপজেলা। এখানকার
পীর আউলিয়ারা তাদের ধর্মীয় শিক্ষার
পাশাপাশি এ অঞ্চলে মানব
শিক্ষা প্রচারে এবং বিস্তারে অগ্রনী
ভূমিকা রেখেছেন। আধাঁর এছাড়া এখানকার
পদ্মা নদে দেখেছি আমাদের
মাঝির ভাটিয়ালীর সুর ভাসে, কবির
প্রতিচ্ছবিতে অংকিত হয়েছে কাব্য,
কবিতা, এছাড়াও রয়েছে শিক্ষা,সাহিত্য,শিল্পসহ অসংখ্য ব্যক্তিত্ব।
অন্যদিকে পদ্মা নদীর পাশের কাঁশবন আপনাকে বদলে দিতে
পারে। সৌন্দর্যবোধের
পাশাপাশি ও এখানকার জনগোষ্ঠী
গর্ববোধ করেন কুষ্টিয়া জেলা নিয়ে।
নানা ইতিহাস আর ঐতির্য্যরে
ধারক বাহক হিসাবে অংলঙ্কিত
আমাদের কুষ্টিয়া জেলার লালনের ইতিহাস।। জেলার
সবুজে সমারেহের পথ ধরে আপনি
ও আসতে পারেন এখানে।
ফিরে আসি, আধুনিক জন-জীবনে নগর সভ্যতার
মত উদ্ভাবন আর প্রযুক্তির ছোয়া
সদরপুরে তেমন প্রভাব পড়েনি। তবে
এখানে কিছু আলোকিত মানুষের
পদযাত্রা হয়েছে। একজন
রফিক স্যার ও তার শিক্ষার
গল্প আজ আপনাদের সামনে
তুলে ধরছি। আমার
সৌভাগ্য হয়েছে তার সান্নিধ্যে
আসার মত। অদ্ভুদ
এ শিক্ষানুরাগী মানুষের গল্প লেখতে একদিকে
কাঁচা হাত অন্যদিকে সময়
ও ব্যস্ততা নামের কালক্ষেপনতা আমাকে
তাড়া করছে অসংখ্যবার।
ক্ষমা করে দিবেন কোথাও
কোনো ভূল হলে স্যার। আশির
দশকের সদরপুরের শিক্ষা ব্যবস্থা আর
আজকের শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা
ভাবলে অনেক অবাক লাগে।
তার সর্ম্পকে,২০০২,২০০৩,২০০৬
,২০১৫.২০১৬.২০১৭,২০১৮,২০১৯ সালে উপজেলাএবং
২০১৬,২০১৯ সালে জেলা সেরা প্রতিষ্টান প্রধান এবং ২০১৪ সালে জাতীয় ভাবে সেরা পুরস্কার
লাভ এবং এছাড়া ডিজিটাল উদ্ভবনী মেলায় ২০১৫,২০১৬ সালে সেরার পুরষ্কার লাভ করেন। সাদাকালো
মানুষটার প্রধান প্রথমত একটি
অভ্যাস খুজে পাই বাঙালির
ঐতিহ্য কাজ ভাগল, যেমন
নিবিড় সর্ম্পক গড়ে উঠেছে ঠিক
তেমনি শিক্ষা ও রফিকুল
স্যার সর্ম্পকযুক্ত হয়েছে। উপজেলার
প্রধান কর্নধর ও সাদা
মনের থাকায় আরও শিক্ষার
আলো জ্বালাতে সহায়ক হয়েছে তার
পদযাত্রা কে। প্রশাসন
ও শিক্ষা দু’ইয়ে
মিলে এখানে যেনো মাতৃশিক্ষার
প্রসার ঘটেছে ব্যাপক।
ধন্যবাদ জানাই ভেড়ামার উপজেলা নির্বাহী
অফিসার মো: সোহেল মারুফ স্যার কে। গতিশীল
এ পৃথিবীর গতিময় জীবনের গল্পগুলোর
বাইরেই এ উপজেলার গল্প। যোগাযোগ
ব্যবস্থা বলেন, আর প্রযুক্তির
ব্যবস্থাই বলেন, কোনো দিক
দিয়ে এখানে পুরোপুরি উন্নত
না হলেও অগ্রগামী মানুষ
গুলোর চেষ্ঠার ঘাটতে নেই বলা
চলে ভেড়ামারার জন্যে
তাদের উম্মুক্ত হৃদয়ের ভালোবাসা।
ফলে পুরোদমে কাজ চলছে একটি
আধুনিক উপজেলা গড়তে লেখার
মাঝে ধন্যবাদ জানাই সে-সব
গুনী মানুষদের।
স্কুলেই এখন মাল্টিমিডিয়া শ্রেনি
কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
বিদ্যালয়ে ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীরোধ করতে তিনি আন্দোলন গড়ে তুলেছেন বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশের মাধ্যমে। শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় মুখী করা ও ভয়াল মাদকের হাত থেকে তাদের রক্ষা করার জন্যে বিদ্যালয় ও পরিবারের সাথে শিক্ষকদের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে দিয়েছেন বিশেষভাবে। শুধু একজন শিক্ষক হিসাবে নয় শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থীদের পিতার দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে উদ্ধৃত করেছেন শিক্ষার্থীদের জন্যে শিক্ষকদের। উপজেলার তৃনমূল বিদ্যাপীঠে তার পদযাত্রায় বিদ্যালয় ও তার শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তন হয়েছে ব্যাপক। এক ফাঁকে একজন শিক্ষার্থী মাহির কথা বলি, টিফিন শেষে বাসা থেকে খাবার শেষ করে ফিরছিল স্কুলে, জিজ্ঞাস করছিলাম, এখন তোমাদের কোন ক্লাশ হবে? জবাবে বলছিল কম্পিউটার, আরো জানতে চাইলাম যন্ত্রের ব্যবহারবিধি সর্ম্পকে ও অনেক কিছুই জেনেছে বিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে কম্পিউটার শিক্ষা নিয়ে। ভাবতে বড়ই অবাক লাগে আমাদের তৃনমূল বিদ্যালয় গুলো থেকে হাতে ঘড়ি শিক্ষার্থীদের চলমান জীবনের প্রধান সহায়ক কম্পিউটারের কথা। আর এ সবের পেছনে যে মানুষটি সবচেয়ে বেশী ঘাম ঝরিয়ে যাচ্ছেন অকাতরে,তিনি হলেন রফিকুল স্যার। একজন সাহিত্য শিক্ষানুরাগী মানুষও তিনি। কয়েক প্রচেষ্ঠায় পরিবর্তন এনেছেন এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা। বিদ্যালয়ে জ্বালিয়েছেন শিক্ষার প্রদীপ হিসাবে শিক্ষার জন্যে শিক্ষক। সে প্রদীপ থেকে প্রতিনিয়ত জ্বলছে আলোর প্রদীপ। আঁধার সরিয়ে আলোর মিছিলে তিনি আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা বান্ধব ব্যক্তিত্ব।
বিদ্যালয়ে এবং প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের হাতে ছড়িয়ে পড়েছে ল্যাপটপ। আগে রেজাল্টের জন্যে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করা হতো বিদ্যালয়ে। স্যার’রা অনেক কষ্ট করে রেজাল্টসীট নিয়ে আসতেন বিদ্যালয়ে। নোটিশ বোর্ডে হাতে লিখে অনেক সময় টাঙিয়ে দিতেন ফলাফল। সহপাঠীদের সাথে আনন্দ ভাগিভাগি করে হুড়মুড় খেয়ে দেখা হতো পরীক্ষার রেজাল্ট নিতে। বাতায়নের দুনিয়ায় আজ স্বপ্নের বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঘরে বসেই ইন্টানেট ব্যবহারকারীরা দেখতে পাচ্ছেন তাদের রেজাল্ট। চরাঞ্চল ও বিদ্যুৎহীন বিদ্যালয়ে এখন বসেই শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে রেজাল্টের সুবিধা। এছাড়াও রেজিষ্টেশন, মাল্টিমিডিয়া ক্লাশ, সততা ষ্টোর, দেশপ্রেম, মানবসেবা, শিক্ষা ও মনুষত্ব পুরোটাই গড়ে উঠছে বিদ্যালয় গুলোতে। স্বপ্ন যেমনটি জেনে ছিলাম রফিকুল স্যার ও তার স্বপ্নের স্কুলের মত।
স্কুলে
সরজমিনে ঘুরে শিক্ষকদের সাথে
আলাপ-চারিতায় জানা যায়,তার শিক্ষাবাতি জ্বালানোর
গল্প। মনুষত্ববোধের
আলোর নীড়ে তিনি আপন
আলো জ্বালাতে সব শিক্ষককে নিয়ে
একযোগে কাজ করছেন। বিদ্যালয়ে
শিক্ষার পরিবেশ, সংস্কৃতি,আলোকিত মানুষ তৈরী,বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও
বিশেষ করে সততা স্টোর
নামের মালিকহীন দোকান আয়োজন করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের
শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্যে সবুজ বিদ্যালয়ে
সবুজ বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীও
চালু রয়েছে অব্যাহত।
আরও জানাগেল, শুধু শিক্ষাই নয়,
তিনি বাল্যবিবাহ,শিল্প,সাহিত্য ও
শরীরচর্চার জন্যে খেলাধুলা এবং
স্বেচ্ছাসেবী সমাজ গড়তে স্কাইটিং
ব্যবস্থা সর্বদা প্রস্ফুটিত।
দিনরাত পরিশ্রমি এ মানুষের জীবনে
কবি গুরু রবীন্দ্র নাথের
শান্তি নিকেতনের বানীগুলো, ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো
প্রভু,পথে যদি পিছিয়ে
পড়ি কভু।এই-যে হিয়া থরথর,কাঁপে আজি এমনতরো,এই বেদনা ক্ষমা
করো,ক্ষমা করো প্রভু।এই
দীনতা ক্ষমা করো প্রভু,পিছন-পানে তাকাই
যদি কভু। দিনের
তাপে রৌদ্রজ্বালায়,শুকায় মালা পূজার
থালায়,সেই ম্লানতা ক্ষমা
করো,ক্ষমা করো প্রভু
রবীন্দ্র সংগীত তার কর্মক্ষনে
প্রতীয়মান বড়উ মিল দেখাযায়।
১৯৯৫ সালে প্রধান শিক্ষক হিসাবে
চাকুরী জীবনে প্রবেশ করেন। চাকুরী
হওয়ার পর থেকেই তিনি
উপলব্ধি করেন যে মাধ্যমিক
পর্যায়ে অনেক শিক্ষার্থীই ঝড়ে
পড়ে। এর
পেছনে কারন খুজতে গিয়েই
তিনি মূলত শিক্ষার মাধ্যমে
আরও এক অন্য শিক্ষাকে
তৈরি করেন। অন্যশিক্ষা
তৈরি করতে নেশায় পড়ে
যান তিনি। আপন
স্বপ্ন লালিত করে শিক্ষারব্রত
ছড়াতে থাকেন এ মানুষটি। যেখানেই
ছিলেন সেখানকার শিক্ষানুরাগী
প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু তাহের স্থানীয় সুধিজন,এবং স্থানীয় প্রশাসনের
সহায়তায় সৃষ্টি করেছেন এক
শিক্ষার অন্যজগৎ। বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে করে শিক্ষার্থীদের সমস্যা
ও বিদ্যালয়ের সমস্যা খুজে বের
করে শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষন নিশ্চিতকরন
করেন ট্রেনিং এর মাধ্যমে।
শুধু তাই নয়,ঝড়ে
পড়া শিক্ষার্থীদের সন্ধান করতে অভিযান
চালাচ্ছেন তিনি। বর্তমান
সভ্যতার আরেক ধাপ বিজ্ঞানের
জন্যে এ উপজেলা থেকে
ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের তিনি বের করেছেন
বিজ্ঞান মেলার পদযাত্রায়।
শ্রেষ্ঠত্ব হিসাবে আজ তারা
দেশসেরা ক্ষুদে বিজ্ঞানের চতুর্থস্থানে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন করার জন্যে
বিদ্যালয় পরিদর্শন, বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং
অভিভাবক সাক্ষাৎকার,মাসিক মিটিং।
এছাড়াও গরীব ও মেধাবী
শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বিস্তারের জন্যে
বাড়তি সুবিধা করে দিয়েছেন। তার
নেতৃত্বে বিদ্যাপিঠে
অভিভাবক সমাবেশ, আলোচনা সভা, উৎসাহব্যঞ্জকপত্র,
অধিকার সচেতনতা, দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধুর
সোনার বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থার
উন্নয়নে তার যাত্রা অক্ষুন্ন
রয়েছে।
আজকের এই আলোকিত মানুষের গল্প শেষ করছি কবি গুরু রবীন্দ্র নাথের আরেক টি সংগীত আগুনের পরশমনি, ছোঁয়াও প্রানে, এ জীবন পূর্ণ্য করো দহন-দানে.........।