সিনিয়র শিক্ষক
২১ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১০:০২ পূর্বাহ্ণ
শীতের সকাল
ধরন: সাধারণ শিক্ষা
শ্রেণি: অষ্টম
বিষয়: বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি
শীতের সকাল
আলস্যের চাদর অবমুক্ত করে কুয়াশার ধূম্রজাল চিরে পুব আকাশে সূর্য নিজেকে
জানান দেওয়ার কাজে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। কোমল সূর্যরশ্মিতে ঘাসের ডগায় জমে থাকা
শিশিরবিন্দুগুলো মুক্তোদানার মতো ঝলমল করে। গাছের পাতা থেকে শিশির ঝরে
পড়ার টুপটাপ শব্দ আর পাখিদের কলরব আন্দোলিত করে গ্রামীণ জীবনযাত্রাকে। কী
স্নিগ্ধময় গ্রামবাংলার শীতের সকাল!
এক শীতে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাই।
পুবের জানালা চিরে সূর্যের আলোর ছোঁয়ায় ভোরবেলা ঘুম থেকে জেগে উঠি। কিন্তু
কনকনে শীতের কারণে লেপ মুড়ি দিয়ে বসে আছি। হঠাৎ হিমেল বাতাসে ভেসে আসা
মিষ্টি গন্ধ আমাকে মুগ্ধ করে। কৌতূহল নিয়ে বাইরে এসে দেখি উনুনে খেজুর রস
জ্বাল দেওয়া হচ্ছে। তৈরি হচ্ছে শীতের নানা পিঠাপুলি।
শিশিরভেজা মেঠো পথে
একদল শিশু খালি পায়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। আমিও তাদের সঙ্গী হলাম। কিছুটা পথ
এগোতেই চোখ দুটি জুড়িয়ে গেল সরিষাখেত দেখে। যেন হলুদের চাদর বিছিয়ে রাখা
হয়েছে খোলা আকাশের নিচে। কী অপরূপ প্রকৃতি!
ছোটবেলায় খুব দুরন্ত
প্রকৃতির ছিলাম। ফলে শীতের প্রভাব আমাকে খুব একটা বিচলিত করতে পারেনি। আবার
আমার বেড়ে ওঠা শহরে। শহরে ইট-কাঠ-পাথরের দেয়াল আর অহরহ গাড়ির অবিরাম
ছুটোছুটিতে শীতের প্রভাবটা গ্রামের তুলনায় একটু কম অনুভূত হয়। আধুনিক
প্রতিযোগিতার যুগে জীবনগাড়িকে সচল রাখতেই শহুরে যান্ত্রিক ছুটে চলা। কিন্তু
শহরের তুলনামূলক কম শীতকে উপেক্ষা করে গ্রামের হাড়কাঁপানো শীত অনেক বেশি
উপভোগ্য। শীত এলেই মনে পড়ে ফেলে আসা সেই দিনগুলোর কথা। গ্রামের সেই শীতের
সকাল আজও হৃদয়কে টানে। ফিরে যেতে ইচ্ছে করে প্রকৃতির খুব কাছে।