Loading..

ম্যাগাজিন

১৯ মার্চ, ২০২০ ১১:৩১ পূর্বাহ্ণ

শিক্ষকতা পেশায় কৌশল

শিক্ষকতা পেশায় কৌশল

 

মোঃ আবু আব্দুর রহমান সিদ্দিকী

সিনিয়র শিক্ষক (ইংরেজী)

জাগরণী বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যাবীথি

নেওয়াশী, নাগেশ্বরী, কুড়িগ্রাম।

 

  শিক্ষা, সভ্যতা একই সূত্রে গাঁথা। মানব সভ্যতা শিক্ষার অনুকূল। আর তিনটি উপাদানের (শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাক্রম) সমন্বয়ে শিখন-শেখানো কার্যক্রম সংঘটিত হয়ে থাকে। আর আমরা শিক্ষক জাতি গড়ার কারিগর। এখনকার সময়ে সবকিছু ডিজিটাল হয়ে গেছে। আমরা তথ্য-প্রযুক্তির যুগে বাস করছি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল কারিগর না হলে ঐ শিক্ষা বর্তমানে অচল অর্থাৎ শিখন-শেখানো কার্যক্রম টেকসই হবে   না। ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষনার পর আর আমাদের বসে থাকার উপায় নেই। খাপ খাওয়াতে গেলে নিতে হবে প্রশিক্ষন, দিতে হবে অগাধ শ্রম। তা না হলে আমাদের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে মনোযোগি হবে না। গতানুগতিক শ্রেণি পাঠদান নিঃসন্দেহে বাতিল করতেই হবে। আসুন আমরা সবাই ডিজিটাল শিক্ষক হয়ে যাই। বদলে যাই, বদলে দেই এদেশ, এ জাতিকে।  

এ যুগে পাঠদান পদ্ধতি আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত হতেই হবে। বহুকাল  ধরে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় পুস্তক পাঠ ও বক্তৃতা পদ্ধতি ছিল পাঠদানে মূল সূত্র। বর্তমানে বিজ্ঞানসম্মত শিক্ষাদানের জন্য নানা কৌশল আবিষ্কৃত হয়েছে, সেই কৌশলগুলো প্রয়োগ করে যথাযথ ভাবে শিক্ষককে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। বর্তমান শিক্ষাদান পদ্ধতি হাতে কলমে উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে করতে হয়। প্রসঙ্গত বলা যায়-

"I hear and I forget. I see and I remember. I do and I understand."

(Lao Tsu, Chinese Philosopher, 6th Century B.C.)

 

গবেষণায় দেখা যায়, শুধুমাত্র শোনা বা কোন কিছু পড়ার মাধ্যমে মানুষ যতটুকু শেখে তার চেয়ে কার্যকরভাবে অনেক বেশি শেখে কোন কিছু দলীয় আলোচনা, পরীক্ষণ, হাতে-কলমে কাজ করার মাধ্যমে। অনুশীলন ও অংশগ্রহণমূলক কার্যাবলীর মাধ্যমে জ্ঞান, দক্ষতা এবং মানসিকতা উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিতে হয় বিষয়বস্তুর সাথে মিল রেখে শিখনফল মাফিক শিক্ষক নিজেই উপকরণ তৈরি করে শিক্ষাদান কার্য পরিচালনা করবেন। শিক্ষকতা হলো এক ধরনের সৃষ্টিধর্মী প্রক্রিয়া, শিক্ষকতা কোনো  যান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ভিত্তিক কর্ম পরিচালনার সময় শিক্ষককে যান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হলে চলবে না। শিক্ষকের নিজস্ব বুদ্ধি-বিবেচনা ও চিন্তা শক্তি প্রয়োগের অবকাশ থেকে যায়। শিক্ষকতা তখনই সার্থক ও সফল হবে যখন শিক্ষার্থীর  শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং যাত শিক্ষক ছাড়া আরো অনেক শিক্ষক আছেন যাদের শিক্ষাদান সর্ম্পকে যথাযথ জ্ঞানাজর্নের জন্য প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। তাদের জন্য পদ্ধতি সংক্রান্ত জ্ঞান অপরিহার্য। তাছাড়া, ভাল শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দিলে তিনি আরো ভাল শিক্ষক হতে পারেন। তাই বৃত্তি বিচারে সকল প্রকার শিক্ষকের  বিষয়বস্তু সর্ম্পকে যেমন গভীর জ্ঞানার্জন করা প্রয়োজন, তেমনি শিক্ষাদান পদ্ধতি সর্ম্পকে ব্যবহারিক গবেষণাও নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনে আত্মনিয়োগ করা উচিত। পরিশেষে, একথা বলা যায় যে, একজন আদর্শ জাত শিক্ষক তার মেধা ও মনন শক্তি খাটিয়ে বুঝতে পারবেন কোনো পদ্ধতিতে পাঠদান করলে শতভাগ সফল হবেন। ঠিক তিনি সে পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করবেন ইহাই-যথার্থ। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে শিক্ষকের নিজস্ব কৌশল হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম কৌশল।  তবে শিক্ষককে খেয়াল রাখতে হবে যে, শ্রেণি শাসন কিংবা শ্রেণি নিয়ন্ত্রণের জন্য শিক্ষার্থীদেরকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে আঘাত বা চাপ দেয়া উচিত নয়। প্রয়োজনে বডিল্যাঙ্গগুয়েজ ব্যবহার করে শিক্ষাদান কার্যক্রমকে আনন্দ, শ্রুতিমধুর এবং প্রাঞ্জল করে তুলবেন। শুভ কামনা রইল নিরন্তর।             

 

 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি