Loading..

খবর-দার

২৭ মার্চ, ২০২০ ০৭:১১ অপরাহ্ণ

শাবান থেকেই রমযানের প্রস্তুতি

বছর ঘুরে আবার আমাদের মাঝে এসেছে শাবান মাস। এ মাস মুমিনদের নব চেতনায় উজ্জীবিত ও আলোড়িত হওয়ার মাস। আল্লাহর নৈকট্য ও ইবাদতে মশগুল হওয়ার মাস। নবীজি (সা.) এ মাসে রমজানের প্রস্তুতি নিতেন। রমজান পর্যন্ত হায়াত লাভের জন্য দোয়া করতেন। বলতেন, আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজব ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।

eidul azha

অর্থ: ‘হে আল্লাহ, রজব ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন; রমজান আমাদের নসিব করুন।’ মুসনাদে আহমাদ।

রাসুল (সা.) শাবান মাসকে নিজের মাস বলেছেন। তিনি বলেন, ‘শাবানু শাহরি অর্থাৎ শাবান হল আমার মাস।’ তিনি এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত করতেন। নামাজ পড়তেন এবং রোজা রাখতেন।

হযরত উম্মে সালামা (রা.) বলেন, আমি হজরত (সা.)- কে শাবান ও রমজান মাস ছাড়া অন্য কোনো দুই মাস একাধারে রোজা রাখতে দেখিনি। আবু দাউদ।

হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি নবী করিম (সা.)-কে শাবান মাসের মতো এত বেশি রোজা রাখতে অন্য কোনো মাসে দেখিনি। এ মাসের অল্প কয়েক দিন ছাড়া বলতে গেলে পুরো মাসই তিনি রোজা রাখতেন। তিরমিজি।

হযরত আনাস (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, রমজানের পরে কোন মাসের রোজা সবচেয়ে বেশি ফজিলতপূর্ণ? উত্তরে তিনি বললেন, রমজানের সম্মানার্থে শাবানের রোজা। তিরমিজি।

এ মাস এলে নবীজি (সা.) খুব সতর্ক হয়ে যেতেন। দিনক্ষণ গণনা করতে থাকতেন। কখন রমজান আগমন করবে এ প্রতীক্ষায় থাকতেন। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) শাবান মাসের দিন-তারিখের হিসাবের প্রতি এত অধিক লক্ষ রাখতেন, যা অন্য মাসে রাখতেন না। আবু দাউদ।

হযরত উসামা বিন যায়দ (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.) কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল, আপনাকে শাবান মাসে যে পরিমাণ রোজা পালন করতে দেখি অন্য মাসে তা দেখি না কেন? তিনি বললেন, রজব এবং রমজানের মধ্যবর্তী এ মাস সম্পর্কে মানুষ বেখবর থাকে। অথচ এ মাস এত গুরুত্বপূর্ণ যে, এ মাসে আল্লাহ তায়ালার কাছে মানুষের আমলগুলো উপস্থাপন করা হয়। আমি চাই রোজা অবস্থায় আমার আমলগুলো আল্লাহর কাছে উপস্থাপন করা হোক। মুসনাদ আহমাদ।

পবিত্র শাবান মাসের গুরুত্ব অনুধাবন করে আল্লাহর রাসুলের সাহাবিরাও অধিক পরিমাণে নেক আমলে মনোযোগী হতেন। হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) এর প্রাণপ্রিয় সাহাবিরা শাবান মাসের চাঁদ দেখে পবিত্র কোরআনুল কারিম বেশি বেশি তেলাওয়াত করতেন। যাকাতের সম্পদ আলাদা করে ফেলতেন। ব্যবসায়ীরা এ মাসে তাদের ঋণ পরিশোধ করে ফেলতেন। শ্রমিকদের বেতনাদি পরিশোধ করে ফেলতেন। গুনিয়াতুল তালেবিন।

শাবান হল নিজেকে পূতপবিত্র করার মাস। যেন সমাগত রমজান আমাদের নেকভাবে কাটে এবং আমল ও ইবাদাতে পরিপূর্ণ থাকে। হযরত আবু উমামা বাহেলি (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, যখন শাবান মাস আগমন করত তখন রাসুল (সা.) বলতেন, এ মাসে তোমরা তোমাদের অন্তর্জগৎকে পবিত্র করে নাও এবং নিয়তকে পরিশুদ্ধ ও সঠিক করে নাও। তাবরানি শরিফ।