Loading..

উদ্ভাবনের গল্প

০১ এপ্রিল, ২০২০ ০১:১৮ অপরাহ্ণ

গ্রামে টাকা তোলার হিড়িক ঢাকায় গ্রাহক নেই।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাধারণ ছুটির মধ্যে সারা দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে চলছে সীমিত আকারে লেনদেন। এর সঙ্গে মঙ্গলবার থেকে যুক্ত হয়েছে সরকারি চার ব্যাংকের প্রায় সব শাখা খোলার বিষয়টি। এদিন ঢাকায় ব্যাংকের শাখাগুলোতে গ্রাহকদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। কোনো কোনো শাখায় একটিমাত্র লেনদেনের নজিরও রয়েছে। ঠিক এর বিপরীত চিত্র গ্রামের শাখাগুলোতে। গ্রামে প্রায় সব ব্যাংকের শাখাগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক পড়েছে। এ কারণে ব্যাংকগুলোও গ্রামে টাকার সরবরাহ বাড়িয়েছে।

এর কারণ হিসাবে জানা গেছে, করোনার বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১০ দিন সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছুটি আরও বেড়ে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত হয়েছে। মোবাইল ফোন অপারেটরদের তথ্যের ভিত্তিতে ন্যাশনাল টেলিকম মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসান জানিয়েছেন, ছুটির শুরুতেই ঢাকা থেকে গ্রামে চলে গেছে প্রায় ১ কোটি মানুষ।

ঢাকা থেকে মানুষ চলে যাওয়ার কারণে রাজধানীর ব্যাংকের শাখাগুলোতে গ্রাহক বলতে গেলে নেই। যেগুলো আছে তারা এটিএম বুথ থেকে নগদ টাকা তুলতে পারছেন। আবার অনেকে অনলাইনে লেনদেন সেরে নিচ্ছেন। কেনাকাটাও সারছেন অনলাইনে। এদিকে ঢাকার বাইরে যারা গেছেন তারাসহ স্থানীয় গ্রাহকরা নগদ টাকা তুলতে ব্যাংকে ভিড় করছেন। এখন সব ব্যাংকের বেশির ভাগ শাখা অনলাইন হয়ে যাওয়ায় যে কোনো শাখার গ্রাহক যে কোনো শাখায় গিয়ে টাকা তুলতে পারেন। যে কারণে শহর থেকে যারা গ্রামে গেছেন তারাও এখন গ্রামের শাখাগুলোতে টাকা তোলার জন্য ভিড় করছেন। এছাড়া গ্রামে এটিএম বুথ ও অনলাইন ব্যাংকিং ও অনলাইনে কেনাকাটার সুবিধা কম থাকায় শাখার ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে।

ঢাকার শাখাগুলোতে স্বাভাবিকের তুলনায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ লেনদেন হয়েছে। আবার এমনও অনেক শাখা আছে, যেখানে এক টাকাও লেনদেন হয়নি। তবে পুরো উল্টো চিত্র ঢাকার বাইরে। জেলা, উপজেলা এবং থানা পর্যায়ে অবস্থিত ব্যাংক শাখায় লেনদেন হয়েছে অনেক।

জানা গেছে, মঙ্গলবার রাজধানীতে অন্যান্য দিনের তুলনায় শাখাগুলোতে গ্রাহক উপস্থিতি ছিল খুবই কম। এর মধ্যে কয়েকজন যা এসেছেন সবাই তুলেছেন টাকা, কিন্তু কেউ জমা দেননি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর গ্রাহকদের বড় একটি অংশ ঢাকা ছেড়েছেন। আর যারা ঢাকা আছেন, চলাচলে কড়াকড়ি আরোপে তারাও ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তাই ঢাকায় ব্যাংকে গ্রাহক উপস্থিতির পাশাপাশি লেনদেনের অঙ্কও খুবই কম।

সোনালী ব্যাংক সূত্র জানায়, মঙ্গলবার পুরান ঢাকার বিভিন্ন শাখায় লেনদেন হয়েছে নামমাত্র। আবার কয়েকটি শাখায় নতুন কোনো লেনদেন হয়নি, তবে পুরনো কিছু চেক ক্লিয়ারিং হয়েছে। এর মধ্যে নাজিরাবাজার, বাবুবাজার, নয়াবাজার, মিটফোর্ড, আরমানিটোলা, ঈশ্বচন্দ্র স্ট্রিট শাখা, নর্থসাউথ রোড শাখা এবং ডিস্ট্রিলারি শাখা উল্লেখযোগ্য। একটি শাখায় নতুন কোনো লেনদেন হয়নি, শুধু তিনটি পুরনো চেক ক্লিয়ারিং হয়েছে। যার অর্থের পরিমাণ ২৩ লাখ টাকা। সোনালী ব্যাংকের একজন শাখা ব্যবস্থাপক যুগান্তরকে জানান, ঢাকার বেশির ভাগ শাখায় লেনদেন হয়েছে খুবই কম। একই ব্যাংকের অপর এক ভিআইপি শাখার সেকেন্ড অফিসার যুগান্তরকে বলেন, মঙ্গলবার দুই ঘণ্টায় মাত্র ৪৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। তবে স্বাভাবিক দিনে এ শাখায় লেনদেন হতো দেড় থেকে পৌনে দুই কোটি টাকা। সে হিসাবে পাঁচ ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে দৈনিক লেনদেন।