Loading..

খবর-দার

০১ এপ্রিল, ২০২০ ০৩:৪৬ অপরাহ্ণ

আজ ১লা এপ্রিল। এপ্রিল ফুল দিবস, প্রতি বছর এপ্রিল মাসের প্রথম দিন পালিত হওয়া একটি দিবস।

আজ ১লা এপ্রিল। এপ্রিল ফুল দিবস প্রতিবছর এপ্রিল মাসের প্রথম দিন পালিত হওয়া একটি দিবস। এপ্রিল ফুল মানে কি? এপ্রিল হল ইংরেজি সনের ৪র্থ মাস আর ফুল মানে বোকা। সুতরাং এর অর্থ দাড়ায় এপ্রিলের বোকা। মাঝে মাঝে একে সকলকে বোকা বানানোর দিন বলে উদযাপন করা হয়। এই দিন প্রতিবেশীদের উপর কৌতুক করার জন্য একটি দিন হিসাবে সর্বত্র স্বীকৃত। এপ্রিল ফুলস ডে এর কিছু প্রিকার্সর হলো, এটি রোমান হিলারিয়া উৎসব, ভারতের হোলি উৎসব, এবং এর মধ্যযুগীয় ফুল ফিস্ট জড়িত। যুক্তরাজ্যে এপ্রিল ফুলের দিন প্রাপককে অর্থাৎ যিনি এপ্রিলের বোকা হন তাকে "এপ্রিল ফুল!" বলে হাসি তামাশা ও চিৎকার করে প্রকাশ করা হয়।

ইরানে পার্সি ক্যালেন্ডার অনুসারে নববর্ষের ১৩তম দিনে আনন্দ মজা করা হয়। এই দিন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারে ১লা এপ্রিল ও ২রা এপ্রিল সদৃশ্য। ঐতিহাসিকদের মতে, ১৫৬৪ সালে ফ্রান্সে নতুন ক্যালেন্ডার চালু করাকে কেন্দ্র করে এপ্রিল ফুল ডে'র সুচনা হয়। ঐ ক্যালেন্ডারে ১লা এপ্রিলের পরিবর্তে ১লা জানুয়ারীকে নতুন বছরের প্রথম দিন হিসেবে গণনার সিদ্ধান্ত নেয়া হলে কিছু লোক তার বিরোধিতা করে। যারা পুরনো ক্যালেণ্ডার অনুযায়ী ১লা এপ্রিলকেই নববর্ষের ১ম দিন ধরে দিন গণনা করে আসছিল, তাদেরকে প্রতি বছর ১লা এপ্রিলে বোকা উপাধি দেয়া হতো।

#এপ্রিল ফুলের করুণ ইতিহাস:-
১৪৯২ খৃষ্টাব্দের ১লা এপ্রিল। স্পেনের রাজধানী গ্রানাডার খৃষ্টান রাজা ফার্ডিন্যান্ড ও পর্তুগীজ রানী ইসাবেলার বাহিনী আক্রমন করলে, মুসলমানদের তীব্র প্রতিবাধে তেমন সুবিধা করতে পারে না। তখন তারা মুসলমানদের অবরোধ করে রাখে। পরিশেষে সমঝোতা হিসেবে মুসলমানদেরকে আত্বরক্ষার সুযোগ দেওয়ার কথা বলে তারা ঘোষণা করে মুসলমানদের যারা অস্ত্র ত্যাগ করে মসজিদে আশ্রয় নিবে, তাদেরকে পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া হবে এবং যারা নৌ জাহাজে আশ্রয় নিবে তাদের অন্য মুসলিম দেশে চলে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। সরলপ্রাণ মুসলমানরা ধ্রুর্ত ফার্ডিন্যান্ড ও ইসাবেলার কুটচাল বুঝতে না পেরে অস্ত্র পরিত্যাগ করে মসজিদে ও জাহাজে গিয়ে আশ্রয় নেয়। তখন ফার্ডিন্যান্ডের নির্দেশে তার বাহিনী সমস্ত মসজিদ তালাবদ্ধ করে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং জাহাজগুলোকে সমুদ্রের মাঝখানে নিয়ে কোনোটাতে আগুন আর কোনোটা ডুবিয়ে দেয়। ফলে সেদিন আগুনে পুড়ে ও সাগরে ডুবে সাত লক্ষ স্পেনিস মুসলমান এক সাথে নির্মমভাবে মৃত্যুবরন করেন।   
ঈমানদীপ্ত প্রাণগুলো ছটফট করছিলো এবং গ্রানাডার আকাশ বাতাস তাদের আর্ত চিৎকারে ভারি ও প্রকম্পিত হচ্ছিলো। তখন আনন্দের অতিশয্যে পাষন্ড ফার্নিন্যান্ড ইসাবেলাকে জড়িয়ে ধরে বললো-''Oh, muslim's how fool you are! '' ''ওহে মুসলিম তোরা এতো বোকা! ''

বিখ্যাত দার্শনিক জর্জ বার্নাড’শ বলেছিলেন, ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা ইতিহাস থেকে মানুষ শিক্ষা গ্রহন করে না’ । আমরা কি দার্শনিক বার্নাড’শ এর মতের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে সামনে এগুচ্ছি ? যে মুসলমানদের হত্যা করে খ্রিষ্টানরা এপ্রিল ফুলের জন্ম দিল, জীবন উৎসর্গকারী সেই মুসলমানদের উত্তরসূরী হয়ে আমরা এপ্রিল ফুল অনুষ্ঠান পালন করছি, একজন আরেকজনকে বোঁকা বানাচ্ছি, শুভেচ্ছা বিনিময় করছি । ধিক্কার আমাদের এমন কর্মকান্ডের ওপর ! ধিক্কার আমাদের এমন হীন চিন্তা-চেতনার উপর !! যে দিনটিকে গভীর ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ১৪৯৩ সালের গ্রানাডা ট্রাজেডীসহ গোটা বিশ্বের নির্যাতিত নিপীড়িত মুসলমানদের কল্যান কামনা করে উদযাপন করা উচিত সেই দিনটিকে আমরা হাসি ঠাট্টার মধ্যে কাটাই । সেদিনের স্পেনের মুসলমানদের করুন আর্তনাদ কি আমাদের কানে ঝংকারিত হয় না ? আমাদের বোধশক্তি কি চিরতরের জন্য ঘুমিয়ে পড়েছে ? আমাদের আবেগ, অনুভূতি কি ভোঁতা হয়ে পড়েছে ? আসুন, পহেলা এপ্রিলসহ অন্যান্য বিজাতীয় সংস্কৃতিকে ত্যাগ করে ইসলামের সংস্কৃতি এবং দেশীয় সংস্কৃতির চর্চা করি । আর এ পরিচয় সর্ব যুগেই সম্মানের হবে । আজ থেকে যেন আমাদের বৌদ্ধিক চেতনা জাগ্রত হয় ।

 #সংগৃহীত

মোঃ আব্দুল মজিদ

 সহঃ শিক্ষক (গণিত)

ডাঃ চন্দনা উচ্চ বিদ্যালয়

কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট।