Loading..

ভিডিও ক্লাস

০৮ এপ্রিল, ২০২০ ০৯:৩৮ পূর্বাহ্ণ

কপোতাক্ষ নদ_মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (সৃজনশীল নমুনা প্রশ্নোত্তর)।। Kopotakkho Nod_Michel Modhusudon Dotta _(Part-২)

কপোতাক্ষ নদ_ মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত (নমুনা প্রশ্নোত্তর) আজ আমরা আলোচনা করব মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য বইয়ের 'কপোতাক্ষ নদ' কবিতাটির নমুনা প্রশ্নোত্তর। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতাটি কবির চতুর্দশ কবিতাবলি থেকে গৃহীত হয়েছে। এই কবিতায় কবির স্মৃতিকাতরতার আবরণে তাঁর অত্যুজ্জ্বল দেশপ্রেম প্রকাশিত হয়েছে। কবি যশোর জেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে মধুসূদন এই নদের তীরে প্রাকৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন। যখন তিনি ফ্রান্সে বসবাস করেন, তখন জন্মভূমির শৈশব, কৈশোরের বেদনা-বিধুর স্মৃতি তাঁর মনে জাগিয়েছে কাতরতা। দূরে বসেও তিনি যেন কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। কত দেশে কত নদ-নদী তিনি দেখেছেন, কিন্তু জন্মভূমির এই নদ যেন মায়ের স্নেহডোরে তাঁকে বেঁধেছে, কিছুতেই তিনি তাকে ভুলতে পারেন না। কবির মনে সন্দেহ জাগে, আর কি তিনি এই নদের দেখা পাবেন ! নদের কাছে তাঁর সবিনয় মিনতি-বন্ধুভাবে তাকে তিনি যেমন স্নেহডোরে স্মরণ করেন, কপোতাক্ষও যেন একই প্রেমভাবে তাঁকে স্বস্নেহে স্মরণ করে। কপোতাক্ষ নদ যেন তার স্বদেশের জন্য হৃদয়ের কাতরতা বঙ্গবাসীদের নিকট ব্যক্ত করেন-যিনি প্রবাসজীবনেও গানে, কবিতায় শৈশবে-কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত নদীর কথা লিখেছেন।) (সুপ্রিয় শিক্ষার্থী এ পর্যায়ে আমরা কপোতাক্ষ নদ কবিতার উপর সৃজনশীল প্রশ্নের নমুনা তুলে ধরছি। তোমরা আগামী পরীক্ষাগুলোতে এই নমুনা উত্তর অনুযায়ী লিখতে পারলে আশা করি সর্বোচ্চ নম্বর পাবে। চলো দেখে নেয়া যাক নমুনা প্রশ্নোত্তর। ) “কপোতাক্ষ নদ”- সৃজনশীল নমুনা প্রশ্ন দৃশ্যকল্প-1: “কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই আজ আর নেই কোথায় হারিয়ে গেল সোনালী বিকেলগুলো সেই আজ আর নেই ।” দৃশ্যকল্প-2: “ঋতু বৈচিত্র্যের সুন্দর জন্মভূমি আমার বিচিত্র রূপতার; শস্য শ্যামল ক্ষেত খামার প্রিয় জন্মভূমি মা তোমায় ভালোবাসি বেশুমার।” ক. চতুর্দশপদী কবিতার প্রথম আট চরণের স্তবককে কী বলে ? খ. ‘জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে’ - বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন ? গ. দৃশ্যকল্প-1 এর বক্তব্য ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার কোন বৈশিষ্ট্যটিকে ফুটিয়ে তুলেছে ব্যাখ্যা কর ? ঘ. ‘দৃশ্যকল্প-২ ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা একই চেতনার সৃষ্টি’- উক্তিটির যথার্থতা বিশ্লেষণ কর ? “কপোতাক্ষ নদ”- সৃজনশীল নমুনা প্রশ্নোত্তর ক. চতুর্দশপদী কবিতার প্রথম আট চরণের স্তবককে অষ্টক বলে। খ. ‘জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে’- বলতে কবি ভুলের ছলনাকে বুঝিয়েছেন। কবি স্বপ্নের ঘোরে বিভোর হয়ে অবচেতন মনে কপোতাক্ষ নদের কলকল ধ্বনি শুনতে পান। জন্মভূমির এই নদের কথা কবি কিছুতেই ভুলতে পারেন না। তাঁর এ মানসিক অবস্থাকেই মূলত তিনি 'জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে'- বলে উল্লেখ করেছেন। গ. দৃশ্যকল্প-1 এর বক্তব্য ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার স্মৃতিকাতরতার বিষয়টিকে ফুটিয়ে তুলেছেন। শৈশবের নানা স্মৃতি কবিকে ভারাক্রান্ত করে তোলে। ফেলে আসা নদের সঙ্গে বিজড়িত স্মৃতি নানাভাবে তাকে নাড়া দেয়। কত দেশে কত নদ-নদী তিনি দেখেছেন কিন্তু জন্মভূমির এই নদ যেন মায়ের স্নেহডোরে তাঁকে বেধেছে, কিছুতেই তিনি তাকে ভুলতে পারেন না। তেমনই দৃশ্যকল্প-1 এর গানের মধ্য দিয়ে গীতিকার তার জীবনের স্মরণীয় দিনগুলো কে স্মরণ করেছেন। স্মৃতিময় দিনগুলো গীতিকারের মনে বেদনার সৃষ্টি করে। অতীত জীবনে বন্ধুদের সাথে কফি হাউজে আড্ডার দিনগুলো তাকে বেদনাতুর করে তোলে। তিনি হাজারো চেষ্টা করে সেই সোনালী দিনগুলো ফিরে পান না। গীতিকার অতীতের সেই দিনগুলোর কথা মনে করে স্মৃতিকাতর হন। উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দৃশ্যকল্প-১ ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার মধ্যে স্মৃতিকাতরতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। ঘ. ‘‘দৃশ্যকল্প-২ ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা একই চেতনার সৃষ্টি’- উক্তিটি যথার্থ। মা, মাটি ও মাতৃভাষার সবার নিকট প্রিয়। ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি নদকে উপলক্ষ্য করে স্বদেশের জন্য হৃদয়ের কাতরতাকে বঙ্গবাসীর নিকট ব্যক্ত করেন। দীর্ঘ প্রবাস জীবনে দেশের স্মৃতি বিজড়িত নদকে তিনি কল্পনায় অনুভব করেন। নদকে সখা বলে সম্বোধন করেন। নদকে জননী মনে করে নদের জলে মাতৃস্নেহের তৃষ্ণা মেটান। বহু দেশে বহু নদ দেখলেও কবির নিকট নিজ জন্মভুমির বুকে বয়ে যাওয়া নদের মত কাউকে সুন্দর মনে হয় নি । এক কথায় ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় কবি স্মৃতিকাতরতার আবরণে স্বদেশপ্রেমের অত্যুজ্জ্বল বহিঃপ্রকাশকে ফুটিয়ে তুলেছেন। দৃশ্যকল্প-২ এ কবি বাংলার ঋতু বৈচিত্র্যের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে দিয়ে মূলত স্বদেশ প্রেমের বিষয়টিকে ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে বিমোহিত আমাদের এই জন্মভূমি। সবুজ শস্য-শ্যামল ভরা ক্ষেত, মাঠ-ঘাট, সবকিছুকে তিনি গভীরভাবে অনুভব করেন। জন্মভূমি বাংলাকে জননী রূপে অভিহিত করেছেন। প্রকৃতির মধ্য দিয়ে কবি দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসাকে প্রকাশ করেছেন। উপর্যুক্ত আলোচনায় দেখা যায়, দৃশ্যকল্প-২ ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতায় মূলত প্রকৃতির নানা বিষয়ের সৌন্দর্যের মধ্য দিয়ে স্মৃতিকাতরতার আবরণে স্বদেশপ্রেমের চেতনার বিষয়টি প্রস্ফুটিত হয়েছে। তাই বলা যায়, ‘দৃশ্যকল্প-২ ও ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতা একই চেতনার সৃষ্টি’- উক্তিটি যথার্থ। বাড়ির কাজ দৃশ্যকল্প-১: রুপালী নদীরে রূপ দেইখা তোর হইয়াছি পাগল ও তোর রূপের সোনায় নয়ন কোনায় নামছে রূপের ঢল বাকা গায়ের পথে পথে রুপালি তোর জলের স্রোতে উজান ভাটির ধারার সাথে রূপ করে ঝলমল তাইতো তারে দেখলে বাচি, না দেখিলে মরি ত্রিভুবনে তোর মত আর না দেখি সুন্দরী। দৃশ্যকল্প-২: বাংলার নদী কি শোভাশালিনী কি মধুর তাহার কুলুকুলু ধ্বনি দু'ধারে তাহার বিটপির শ্রেণি হেরিলে জুড়ায় হিয়া। ক. ‘বারি-রূপকর’- কথাটির অর্থ কী ? খ. চতুর্দশপদী কবিতার কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর? গ. দৃশ্যকল্প -১ এর সাথে ‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার ভাবগত সাদৃশ্য নির্ণয় কর। ঘ. “‘কপোতাক্ষ নদ’ কবিতার পরিণতির দিকটি দৃশ্যকল্প-২ এ অনুপস্থিত” - উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। সকল শিক্ষার্থীকে ধন্যবাদ