Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

২০ এপ্রিল, ২০২০ ০২:১৮ অপরাহ্ণ

চাল কুমড়ার চাষ

সবজি হিসাবে দেশে চালকুমড়ার জনপ্রিয়তা ব্যাপক। গ্রামে ঘরের চালে এ সবজি ফলানো হয় বলে এটি চাল কুমড়া নামে পরিচিত। তবে জমিতে (মাচায়) এর ফলন বেশি হয়। কচি চাল কুমড়া (ঝালি) তরকারী হিসেবে এবং পরিপক্ব কুমড়া মোরব্বা ও হালুয়া তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।

চালকুমড়ার উপকারিতা বলে শেষ করা সম্ভব নয়। এটি একটি পুষ্টিকর সবজি এতে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা ও ফাইবার রয়েছে। চালকুমড়ার বড়ি ও মোরব্বা ফুসফুসের জন্য উপকারী। চাল কুমড়ার বীজ কৃমি নাশ করে থাকে।

চালকুমড়ার উন্নত জাত
আমাদের দেশে কিছু উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন হয়েছে যা বার মাসই চাষ করা যায়। এর মধ্যে বারি চালকুমড়া-১ অন্যতম। সম্প্রতি আমাদের দেশে হাইব্রিড জাতের চালকুমড়ার বীজও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। এসব জাতের মধ্যে জুপিটার, ইউনিক, ভেনাস, পানডা, সুমাইয়া, বাসন্তী, নিরালা, মনি, দেব-১২০৩, মাধবী ইত্যাদি অন্যতম। উন্নত জাতের চালকুমড়া রোপণ করলে সারাবছর ফসল পাওয়া যায়। সারা বছর ফলন দানকারী জাতগুলোর মধ্যে বারি ১ সবচেয়ে ভালো ।

চালকুমড়ার বীজ থেকে চারা তৈরি
ভালো চারা তৈরি করতে হলে পলিব্যাগে চারা তৈরি করা সবচেয়ে উত্তম। সে ক্ষেত্রে চালকুমড়ার বীজ থেকে চারা তৈরির সময় প্রথমে বীজ গুলোকে ১২ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর একটি বীজতলা তৈরি করতে হবে। এর জন্য ৬০ ভাগ দোআঁশ মাটি ৪০ ভাগ শুকনো গোবর ও অল্প পরিমাণ ছাই মিশিয়ে বীজতলা টি তৈরি করে নিন। এবার ভেজানো বীজগুলোকে নতুন তৈরি করা বীজ তলায় বসিয়ে একটি পাটের ছালা অথবা সুতি কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন। এরপর কিছুদিন ওই কাপড় বা ছালার উপর কিছু কিছু করে পানি দিয়ে যান। তিন থেকে চার দিনের মধ্যেই বীজ গুলো অঙ্কুরিত হবে। এবার নতুন গজানো বীজ গুলো তুলে আপনার তৈরি করা পলি ব্যাগ গুলোতে স্থানান্তর করুন। পলিব্যাগের মাটি ও দোয়াশ মাটি এবং গোবর এর মিশ্রণ দিয়ে তৈরি হতে হবে। পলিব্যাগে থাকাকালে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ছোট চারাগুলো রোপণের জন্য উপযুক্ত হয়ে যাবে।

জমি তৈরি
বসতবাড়ির ক্ষেত্রে ঘরের কোণে চারা রোপণ করতে হবে। চারা কিছুটা বড় হলে বাঁশের কঞ্চি বা পাট কাঠি চারার গোঁড়ায় পুঁতে দিয়ে চারাগুলো চালায় তুলে দিতে হবে। আর জমিতে চাষ করা ক্ষেত্রে বন্যামুক্ত ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা আছে এমন দোআঁশ ও এটেল দোআঁশ মাটি হলে ভালো হয়। নির্বাচিত জমি ভালো করে ৩-৪টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। তারপর জমিতে মাদা তৈরি করে ২ থেকে ২.৫০ মিটার দূরে দূরে চারা রোপণ করতে হবে।

চালকুমড়ার ফলনে প্রয়োজনীয় সার
কুমড়া গাছে সবসময় বাড়িতে তৈরি জৈব সার দেয়া উচিত। যেমন তরকারীর খোসা, ময়লা আবর্জনা, হাস-মুরগীর বিষ্ঠা, কাঠ-কয়লা-ছাই ইত্যাদি। এছাড়াও অজৈব সার হিসেবে ইউরিয়া, টিএসপি, মিউরেট অব পটাশ, জিপসাম, জিংক অক্সাইড ইত্যাদি দেয়া যায়।

পরিচর্যার নিয়ম
নিয়মিত গাছের গোঁড়ার আগাছা পরিষ্কার ও গোঁড়ার মাটি কুপিয়ে আলগা করে দিতে হবে। জমির মাটিতে রস না থাকলে সেচ দিতে হবে। বর্ষার পানি নিকাশের জন্য নালার ব্যবস্থা করতে হবে। গাছ বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাচা তৈরি করে দিতে হবে।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি