Loading..

প্রকাশনা

০৯ মে, ২০২০ ১০:২৯ অপরাহ্ণ

সহপাঠির সহায়তা

ছাত্র হিসাবে ততটা ভালো ছিলোনা তবে চলাফেরা ছিলো ভালো ছাত্রদের সাথে। যার কথা বলছি তার নামটা মোহাম্মদ হোসেন। পিডার স্কুল ও প্রাইমারী ভালো ভাবে পার হয়েছিল। তখন ছিলো 1999 সাল প্রাথমিক শেষে ভর্তি হলো পাশের গ্রামে অবস্থিত পঞ্চগ্রাম আজিজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়। ইহা চাঁদপুর জেলায় শাহরাস্তি থানায় নাওড়া গ্রামে অবস্থিত। অত্যান্ত মনোরম পরিবেশে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত করে ছিলেন ড.এম.এ সাত্তার। ৬ষ্ঠ শ্রেণি হতে একে একে দুএক বিষয় ফেল করে 2002 সালে ৯ম শ্রেণিতে উর্ত্তীন্ন হয় নিজে ব্যবসায় শিক্ষা শাখাতে পড়া চেষ্টা করে। তার মা নাম মাত্র পড়ালেখা জানতো আর বাবা একেবারে নিরক্ষর।পড়া লেখায় অমনোযোগি মোহাম্মদ হোসেনের আরো একটি বছর শেষ ১০ম শ্রেণির প্রিটেষ্ট পরিক্ষার ফলাফল সেই আগের মতই  ১ (গনিত) বিষয় ফেল এবং  প্রধান শিক্ষক ঘোষনা দিলো যে টেষ্ট  পরিক্ষায় যদি তোমরা কোন বিষয়ে ফেল করো তাহলে এস.এস.সি.-2004 সালের পরিক্ষা অংশগ্রহন করতে পারবে না। এই কথা শুনে মোহাম্মদ হোসেন চিন্তায় পড়ে গেলো। তখন গ্রামের এক সহপাঠি আলঝুম শাহাদাতকে বললো দোস্ত আমি কি করবো সব বিষয় পাস করলেও অংক তো বুঝিনা । তখন শাহাদাত বললো ক্লাসে ভালো করে মনোযোগ দিলে তুই বুঝবি। এই দোস্তর কথা মতো ক্লাসে মনোযোগি হওয়ার চেষ্টা করতেছে মোহাম্মদ হোসেন। তবে গনিতের বেসিক  না জানা থাকলে  মনোযোগ দিয়ে লাভ হবে না এত অল্প সময়ে। তখন শাহাদাত বললো যে তুই আমাকে যদি স্কুল ছুটির পরে একটু গনিতটা দেখিয়ে দিতি তাহলে মনে হয় আমি বুঝতাম। এই মোহাম্মদ হোসেনের কথায় শাহাদাত রাজি হয়ে গেলো, কারণ তারও আবার গনিত রিভিশান হবে। ঐ দিনটায় অনেক বৃষ্টি আশা শর্তে ও তারা দুজন ষ্কুল ছুটির পরে ও থাকলো । শাহাদাত প্রথমে সেট বাস্তব সংখ্যা নামক অধ্যায় দিয়ে শুরু করলো ও এই অধ্যায়ে কিছু বেসিক ধারনা,শটকাট টিপসের কথা বললো। ৫দিন সেট বাস্তর সংখ্যার অধ্যায় করার পরে সে মোহাম্মদ হোসেনকে বললো এই অধ্যায়ের উপর আগামিকাল পরিক্ষা দিবি। মোহাম্মদ হোসেন পরিক্ষার প্রস্ততি নিয়ে পরিক্ষা দিলো পরিক্ষার কাগজ দেখে শাহাদাতের মন্তব্য হলো যে এই অধ্যায় থেকে যত কঠিন প্রশ্ন আসুক না কেন তুই পারবি। এই ভাবে একমাস দেড়মাস ভিতরে মান নির্ণয়,উৎপাদক,লগসূচক ও জ্যামিতির কিছু কমন বিষয় গুলো করালো। এর মধ্যে টেষ্ট পরিক্ষার সময়সূচি দিয়ে দিলো। টেষ্ট পরিক্ষা শেষ হলো তবে গনিত নিয়ে এত ভয় নেই। টেষ্ট পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশের সময়সূচি ঘোষনা করলো। ফলাফল ঘোষনার দিন ফলাফল দিলো। প্রথমে প্রধান শিক্ষক ঘোষনা করলো যে তোমরা ৯০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১৫ জন সব বিষয়ে পাস করছো । একে একে এই ১৫ জন শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশ করলো ও মোহাম্মদ হোসেনের নামটাও বললো তার ফলাফল হলো  জিপিএ-2.50। এই খবর শুনে মহান আল্লাহর নিকট শুকরিয়া করে বাড়িতে আসলো বাবা মাকে জানালো। এর পরে জীবনে কখনো ফেল নামক কথাটি শুনতে হয়নি। এস.এস.সি.-2004-3.38,এইচ.এস.সি.-2006-3.60 বি.বি.এস.-2010-১ম বিভাগ ও এম.বি.এস.(হি.বি.)-2012-২য় বিভাগ ক্রমান্নয়ে উর্ত্তীন্ন হই। 2012তে ব্যবসায় শিক্ষাতে 9ম নিবন্ধন ও 2013তে কম্পিউটারে 10ম নিবন্ধন,একই বছরে বি.এড শেষ করে বর্তমানে যে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম সেই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (আই.সি.টি.) তে কর্মরত আছি। ভবিষ্যতে জেনো  ভালো থাকতে পারি  সবার কাছে দোয়া চেয়ে এই প্রত্যাশায়-

মোহাম্মদ হোসেন এমবিএস (হি.বি),বি.এড.

সহকারী শিক্ষক (আই.সি.টি.)

পঞ্চগ্রাম আজিজুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়

নাওড়া ,শাহরাস্তি ,চাঁদপুর।

মোবাইল নাম্বার : 01671-025599

ইমেইল:-mdhossain599@gmail.com

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি