Loading..

ম্যাগাজিন

১৫ মে, ২০২০ ০২:৫১ অপরাহ্ণ

অনলাইন ক্লাসের নামে শিক্ষা-বাণিজ্য নয়

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ক্লাস না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে অনলাইন ক্লাস নেয়া শুরু করেছে। উল্লেখ্য, নভেল করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে বন্ধ আছে। সহসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলবে বলে মনে হচ্ছে না। এই অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার জন্য অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম বা পরীক্ষা গ্রহণ করা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। শুক্রবার (১৫ মে) সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অনলাইনে ক্লাস বা পরীক্ষা নেয়ার আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে তাদের এই আগ্রহের পেছনে বাণিজ্যিক স্বার্থ রয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অনলাইনে ক্লাস চালু রাখা মানেই তাদের নগদ প্রাপ্তি। অনলাইনে ক্লাসে অংশ নেয়ার মতো প্রযুক্তিগত সক্ষমতা সব শিক্ষার্থীর আছে কিনা সেটা ভেবে দেখা হচ্ছে না। অনেক শিক্ষার্থীরই কম্পিউটার এমনকি স্মার্টফোনও নেই। ইন্টারনেট সংযোগের খরচের প্রশ্নও রয়েছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুধু বিত্তশালীদের সন্তানরাই লেখাপড়া করে না। মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় একটি অংশ এখন তাদের সন্তানদের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ অনলাইন ক্লাসের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা নিতে পারবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর ক্লাসে অংশ নিতে না পারা মানে পরীক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব পড়া। এতে করে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শিক্ষা ব্যবসায়ীদের পকেট ঠিকই ভারি হবে।

অনলাইনে ক্লাস বা পরীক্ষা নেয়ার প্রশ্নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি অনলাইনে ক্লাস না নেয় আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ক্লাস ও পরীক্ষা নেয় তাহলে শিক্ষায় এক ধরনের বৈষম্য তৈরি হবে। অনেক শিক্ষার্থীই অনলাইনে ক্লাস করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। তারা তাদের সমস্যা-সংকটের কথা তুলে ধরেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এসব সমস্যা সমাধানে বাস্তব সম্মত পদক্ষেপ নিতে হবে।

অনলাইনের নামে বেতন বা অন্যান্য ফি নেয়ার কারসাজি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা হতে হবে সর্বজননীন। সরকারগুলোর বিভিন্ন সময়ের ভুল পদক্ষেপ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার এমনিতেই বহুধাবিভক্ত। এখন অনলাইনের নামে নতুন করে কোন বিভক্তি তৈরি হোক সেটা আমরা চাই না। শিক্ষা-সংক্রান্ত যে কোন সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া বা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সুবিথা-অসুবিধাকে বিবেচনায় আনতে হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে কম্পিউটার তুলে দেয়া হোক, অবাধ ইন্টারনেটে সুযোগ দেয়া হোক। তারপর অনলাইনে ক্লাস নিলে আপত্তি নেই। সেটা করা না গেলে এখন অনলাইন শিক্ষা-বাণিজ্য বন্ধ রাখাই শ্রেয়।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি