Loading..

নেতৃত্বের গল্প

২৪ মে, ২০২০ ০১:৫০ অপরাহ্ণ

নির্দয় আম্পান

উত্তরাকাশে ঘনকালো মেঘের ঘনঘটা। আরিয়ানের চোখ পলকহীন ভাবে আকাশপানে, কি যেন তার হৃদয় মাঝে একটা অজানা কষ্ট কাঠে পেরেক মারার মতো ঠকঠক করে বিধঁছে। 

     সেতু পিছন থেকে বললো- কি হে ভাবুক সাহেব,শুনি, আজ আবার কি ভাবটা জমেছে  তোমার মনের আকাশে?  নারে কিচ্ছু না, একথা বলেই আরিয়ান অন্যদিকে চলে যেতে লাগলো। কিচ্ছু না মানে? তুমি বললেই হলো-?আমি তোমাকে জানি সেই এত্তোটুকু থেকে। তুমি নিশ্চয়  আমার কাছে  কিছু লুকাচ্ছ? যদি তাই হয়..... ।   সেতুর কথা শুনে আরিয়ান  থমকে দাঁড়িয়ে বললো-সব সময় তুমি শুধু শুধুই বিরক্ত করো।সেতু রেগে টং হয়ে বললো -কি? কি বললে? আমি, এই আমি  তোমাকে বিরক্ত করি?  তার মানে তুমি.....। ঠিক আছে এই সেতু আর কোনদিন তোমাকে বিরক্ত করবে না।  অবিষ্ফরিত আগ্নেয়গিরির মতো  একথা বলেই হনহন করে সেতু কয়েক পা ফেলতেই আরিয়ান তার কাছে গিয়ে হাত ধরে বলল- সেতু তুমি। এইটুকু কথা শেষ হতে না হতেই  মাথার উপরে মুরগীর ছানার চিঁ চিঁ শব্দ শুনে আকাশে দিকে তাকিয়ে দেখলো একটি কাক জীবন্ত মুরগির ছানাকে ঠোঁটে করে নিয়ে যাচ্ছে অন্যের ভবিষ্যৎকে হত্যা করে, তার পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। কি করুণ বাস্তবতা? এই আজব দুনিয়ার? 

 দুজনেই বেশ কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছিল আর নিশ্চুপ মনের আকাশে অনেক কথা ডানা মেলে উড়ছিল। কিন্তু সে কথার জবাব কে দিবে হয়তোবা একদিন মনের আকাশ হতেই বিলীন হয়ে যাবে।

আরিয়ান বললো -দ্যাখো, বাস্তবতা এটাই। আর আমি এই আমাদের বাস্তবতাকে নিয়েই ভাবছি।চারদিকে তাকালে শুধুই নিস্তব্ধতা নেই কারো  মুখে হাসি দু'দিন পর ঈদ তবুও। গ্রামের ঘর-বাড়ি গুলো যেন যুদ্ধ পরবর্তী অবস্থা।শত্রুপক্ষ যেন নির্দয়ভাবে মাটির সাথে গূঁড়িয়ে দিয়েছে। গাছের মগডালে  হতভাগা সারোস পাখির বাসাটি অর্ধ ভাংগা  গাছে ঝুলে আছে তার মধ্যে কচি ছানার আর্তচিৎকার।

    এই হলো ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ভয়াবহতা। ভাবছি এটাই যে, গ্রামে একটা যুব সংঘ গড়বো আর সবাই মিলে হত দরিত্র অসহায় মানুষের পাশে থেকে কিছু করবো। 

যেই ভাবা সেই কাজ  গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে ১২ থেকে ২৫ বছর যাদের বয়স তাদের নিয়ে গড়া হলো একটা সংংঘ নাম দেয়া হলো -"নতুন দিগন্ত"। শুরু হলো কাজ সিদ্ধান্ত এই যে  বিধবা অপির ঘর মেরামত দিয়েই শুরু হোক আমাদের আগামীর পথচলা।