শিক্ষা ব্যবস্থায় কোভিট-১৯ এর প্রভাব ও অনলাইন স্কুল
--------------------------------------------
ঘর যে কোন একদিন হঠাৎ স্কুলে পরিণত হবে, এটা আমাদের কল্পনার অতীত চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বের প্রায় ১৬৫ টি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। ১৭ মার্চ থেকে সরকার বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে।
ইউনেস্কো ঘোষণা দেন- "Learning Never Stops" এই শ্লোগানে বৈশ্বিক শিক্ষা সমঝোতা ঐক্য প্রতিষ্ঠা করে।
বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে সাথে সাথে অনলাইন স্কুল। শিক্ষা মন্ত্রনালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করলে আইসিটি ডিভিশনের এটুআই প্রোগ্রামের কারিগরি সহায়তায় টেরিটোরিয়াল চ্যানেল সংসদ টিভির মাধ্যমে ক্লাস সম্প্রচার শুরু হয়।
এছাড়াও অনলাইন ক্লাস - জুমে ক্লাস ,ফেসবুকে লাইভ ক্লাস, ইত্যাদির শুরু হয়। ডিজিটাল টুল ব্যবহার করে শিক্ষকের ক্লাস নেওয়া এবং তা টিভি কিংবা তার মাধ্যমে প্রচার করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
করোনা লকডাউনে বাসার চার দেয়ালে বন্দী শিক্ষার্থীরা এমনিতেই নিদারুণ বৈচিত্র্যহীন জীবন-যাপনে হাঁসফাঁস করছে প্রতিনিয়ত। আবার তাদেরই ল্যাপটপ কিংবা অ্যান্ড্রয়েড ফোন বন্দী স্কুলের নতুন ধারণার সঙ্গে মানিয়ে নেবার যুদ্ধ।
নতুন এই শিক্ষাদান পদ্ধতি কতদিনে তাদের বোধগম্য হবে সেটাই ভাবার বিষয় । তবে এই যুদ্ধ কিন্তু শিক্ষার্থীদের একার যুদ্ধ নয়। শিক্ষার্থীদের যতখানি, তার চাইতে কয়েকশ গুণ বেশি যুদ্ধ করছে শিক্ষক এবং অভিভাবক।
আজও এইচএসসি পরীক্ষা আরম্ভ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসএসসি পরীক্ষার রেজাল্ট হয়েছে দেরিতে।
পরিবারে বাড়তি কোনো ল্যাপটপ কিংবা অ্যান্ড্রয়েড ফোন আছে কি না, বাসায় ইন্টারনেট সংযুক্তি আছে কি না কিংবা সংযোগ থাকলেও ইন্টারনেটের স্পিড অনলাইন ক্লাস করার উপযুক্ত কি না!
অনলাইন ক্লাসের প্রযুক্তি এবং শিক্ষকের গতির সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীই তাল মিলাতে পারছে না। ফলে পড়া বুঝে উঠতে তাদের ভোগান্তি হচ্ছে।
পরিবর্তিত এই নতুন পরিস্থিতিতে সিলেবাসকে একটু নতুনভাবে ভাবা যেতে পারে। শিশুদের সৃজনশীল কাজকে উৎসাহিত করা যেতে পারে। বাসায় শিশুদের বই পড়ায় উৎসাহ দিতে হবে। বাগান করা, ছবি আকা ইত্যাদি নানাবিধ বিষয় গুলো চর্চা করলে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি পাবে।
তারপর ও বলতেই হয় এ মুহূর্তে অনলাইন স্কুলের বিকল্প কিছু ই নেই।
কারণ পরিস্থিতি কতদিনে স্বাভাবিক হবে ঠিক নেই।
আরজিনা খাতুন
সহকারী শিক্ষক
জামতৈল ধোপাকান্দি সরকারি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়
কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।