Loading..

খবর-দার

২২ জুন, ২০২০ ১২:৩৪ পূর্বাহ্ণ

"যশোরে শিক্ষার্থীদের দুর্যোগকালীন অসুবিধা পুষিয়ে দিচ্ছে অনলাইন ক্লাস "

দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে অনলাইন ক্লাস। যশোরেও যথারীতি এ পদ্ধতিতে পাঠদান শুরু হয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা দুর্যোগকালীন সময়ে এর সুফল পেতে শুরু করেছে। তাই যশোরের ঘরে ঘরে দিন দিন প্রসার লাভ করছে এ শিক্ষা পদ্ধতি। তবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চান অচিরেই ক্যাম্পাসভিত্তিক পাঠদান চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে অচলাবস্থা কেটে আবারও প্রাণ ফিরে আসবে শিক্ষা ব্যবস্থায়। সরকারি সিদ্ধান্তে গত ১৭ মার্চ স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে বিপাকে পড়ে যশোরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী। শহরের দু’শ’ ৫০টি সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮০ হাজার এবং একশ’ পাঁচটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তিন লাখ ৩৭ হাজার ছয়শ’ ১৪ জন শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাসভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। বন্ধ হয়ে যায় শ্রেণিকক্ষের পাঠদান। অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়েন তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে। তবে পরবর্তীতে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম (সংসদ টিভি) চালু হওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন যাবত ঘরবন্দি শিক্ষাজীবনে খানিকটা আশার সঞ্চার হয়। কিছুটা হলেও অচলাবস্থা কেটে গিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় সুবাতাস বইতে শুরু করে। এর মধ্যে দিয়ে ঘরে বসে পাঠ নিয়ে শিক্ষার্থীরা দৈনন্দিন লেখাপড়ায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখার পাশাপাশি আগামী পরীক্ষার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতে পারছে। তবে যশোরের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চান অচিরেই স্কুল খুলে শিক্ষাব্যবস্থা সচল হয়ে উঠবে। সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহজাবীন আহসান অপ্সরা বলে, ‘অনলাইন ক্লাসে সময়ের অপচয়টা কম হচ্ছে। আমরা নির্বিঘ্নে শিক্ষকদের পাঠদান জানতে ও শিখতে পারছি। এটা খুব ভালো একটি দিক।’যশোর কালেক্টরেট স্কুলের শিক্ষার্থী সাফা ইসলাম প্রিয়ন্তি বলে, ‘অনলাইনের ক্লাস স্কুলের ক্লাসের মতোই মনে হচ্ছে। তবে আমরা খুব শিঘ্রই বিদ্যালয়ে ফিরতে চাই।’  এ বিষয়ে ইসলামিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক সায়েদা বানু শিল্পী বলেন, ‘অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতিতে শুধু ক্লাস নিলে হবে না। মূল্যায়ন থাকতে হবে। শিক্ষক কিছু এসাইনমেন্ট দেবেন ও হোম ওয়ার্ক থাকবে-যেগুলো শিক্ষার্থীরা চর্চার মাধ্যমে এগিয়ে যাবে। আমাদের দরিদ্র দেশ তাই সারাদেশের সব শিক্ষার্থী এ সুবিধা পাচ্ছে না। সে কারণে শ্রেণিকক্ষের পাঠদানই বেশি জরুরি।’যশোর কালেক্টরেট স্কুলের শিক্ষক মিনারা খন্দকার বলেন, ‘সপ্তাহে তিনদিন আমাকে অনলাইন ক্লাস নিতে হয়। শিক্ষার্থীরা পজেটিভ কমেন্টস করছে, ভালো সাড়া পাচ্ছি। অনলাইন ক্লাস শিক্ষার্থীদের বেশ কাজে লাগছে।’যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহসান হাবিব পারভেজ বলেন, ‘এই দুর্যোগের মাঝে অনলাইন ক্লাস কিছুটা আশার আলো জাগাতে পেরেছে। শিক্ষার্থীরা একেবারে বসে না থেকে নিজেদের এগিয়ে নিতে পারছে। এটা অবশ্যই খুব ভালো একটি দিক। তবে সে সাথে এটাও চাই যে পাঠদান বিদ্যালয়কেন্দ্রীক হয়ে উঠুক। এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম বলেন, ‘অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে। তবে অনলাইন ক্লাস যেহেতু শহরকেন্দ্রীক এবং যারা সচ্ছল তারাই কেবল এ সুবিধা পাচ্ছে। তাই আমরা এ মাস থেকে (জুন) শিক্ষকদের নির্দেশ দিয়েছি যেন তারা মোবাইলের মাধ্যমে হলেও সংসদ টিভির পাঠদানের বিষয় এবং তাদের নিয়মিত কোনো অনুশীলনীর বিষয়ে শিক্ষার্থীদের হোম ওয়ার্ক দিয়ে রাখেন। যাতে শিক্ষার্থীরা কেউ পিছিয়ে না থাকে।’জেলা শিক্ষা অফিসার এ এস এম আব্দুল খালেক বলেন, ‘এ শহরের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসের সুযোগ পাচ্ছে না। সবার সে ব্যবস্থা নেই। তার মাঝেও শিক্ষার্থীরা যারা এ সুবিধা পাচ্ছে, খানিকটা হলেও এগিয়ে যাচ্ছে।’