প্রভাষক
০৫ জুলাই, ২০২০ ০১:৩৭ পূর্বাহ্ণ
কাঁঠালের স্বাস্থ্য উপকারিতা
কাঁঠালের স্বাস্থ্য উপকারিতা
বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। দেশের সর্বত্রই কম-বেশি এই কাঁঠাল পাওয়া যায়। বসন্ত ও গ্রীষ্মের প্রথমে কাঁচা অবস্থায় এবং গ্রীষ্ম ও বর্ষায় পাকা অবস্থায় পাওয়া যায়। ফলটি আকারে বেশ বড় হয়। নানান পুষ্টিগুণে পুরোপুরি ভরপুর কাঁঠাল।
কাঁঠালের ৪-৫ কোয়া থেকে ১০০ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়। এর হলুদ রঙের কোষ হচ্ছে ভিটামিন 'এ' সমদ্ধ। ২-৩ কোয়া কাঁঠাল আমাদের এক দিনের ভিটামিন 'এ' এর চাহিদা পূরণ করে।
সেজন্য কাঁঠাল অপুষ্টিজনিত সমস্যা রাতকানা এবং রাতকানা থেকে অন্ধত্ব প্রতিরোধ করার জন্য খুবই উপযোগী ফল। শিশু, কিশোর, কিশোরী এবং পূর্ণ বয়সী নারী-পুরুষ সব শ্রেণির জন্যই কাঁঠাল খুবই উপকারী ফল। গর্ভবতী এবং যে মা বুকের দুধ খাওয়ান তাদের জন্য কাঁঠাল দরকারি ফল।
শরীরে ভিটামিন 'এ' এর অভাব দেখা দিলে ত্বক খসখসে হয়ে যায়। শরীরের লাভণ্যতা হারিয়ে ফেলে এজন্য কাঁঠাল প্রতিরোধ করতে পারে। এছাড়া কাঁঠালের মধ্যে ভিটামিন 'সি'এবং কিছুটা 'বি' আছে। পাকা কাঁঠাল যেমন উপকার রয়েছে, তেমনি কাঁচা কাঁঠালও কম উপকারী নয়। কাঁচা কাঁঠাল আমিষ ও ভিটামিন সমদ্ধ তরকরি। পাকা কাঁঠালের বিচি বাদামের মতো ভেজে যেমন খাওয়া যায়, তেমনি তরকারি হিসেবেও খাওয়া যায়।
১০০ গ্রাম কাঁঠালের বিচিতে ৬.৬ গ্রাম আমিষ আছে ও ২৫.৮গ্রাম শর্করা আছে। সবার জন্যই আমিষসমদ্ধ কাঁঠালের বিচি উপকারী। এজন্য কাঁঠাল গাছ বেশি লাগানো উচিত। সেই সঙ্গে কাঁঠাল ফলটি খেয়ে ভিটামিন 'এ' এর ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
আসুন জেনে নেই কাঁঠালের উপকারিতা কি কি...
শক্তির উৎস কাঁঠাল
কাঁঠালে পর্যাপ্ত পরিমাণে শর্করা,
ক্যালোরি, ফ্রুক্টোজ ও
সুক্রোজ রয়েছে,
যা
আমাদের
শরীরে
দ্রুত
শক্তি
বাড়ায়।
একই
সঙ্গে
কাঁঠালে কোন
কোলেস্টেরোল জাতীয়
উপাদান
নেই
যা
আমাদের
শরীরের
জন্য
খুবই
উপকারী। সে
কারণে
এ
ফলটিকে
বেশ
স্বাস্থ্যকর ফলের
তালিকায় আমরা
স্থান
দিয়ে
থাকি।
কাঁঠাল রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
আমাদের
সর্দি-কাশি, জ্বরের মতো
সাধারণ
নানা
রোগকে
প্রতিহত করে
এই
রসালো
কাঁঠাল। সাধারণত ভিটামিন সি
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের দারুণ
উৎস
কাঁঠাল।
রক্তস্বল্পতা রোধে কাঁঠাল
কাঁঠালে রয়েছে
প্রচুর
পরিমাণে ভিটামিন এ,
সি,
ই,
কে,
নিয়াচিন, ফলেট,
এবং
ভিটামিন বি-৬। এছাড়াও আছে
বিভিন্ন ধরণের
মিনারেল সমৃদ্ধ
উপাদান
যেমনঃ
কপার,
ম্যাংগানিজ, ম্যাগনেসিয়াম যা
রক্ত
তৈরিতে
বিশেষ
ভূমিকা
রাখে।
তাই
এটি
রক্তস্বল্পতা রোধে
দারুণ
কাজ
করে
থাকে।
তাই
যারা
রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন
তাদের
জন্যে
এই
রসালো
ফল
কাঁঠাল
উপকারি
হবে
এতে
কোন
সন্দেহ
নেই।
দুরারোগ্য ব্যাধি প্রতিরোধে
কাঁঠালে বিদ্যমান প্রচুর
পরিমাণে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস- যা
কিনা
আমাদের
শরীরে
আলসার,
ক্যান্সার, উচ্চ
রক্তচাপ এবং
বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম।
কাঁঠালে আছে
প্রয়োজনীয় পরিমাণে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা
আমাদের
দেহকে
ক্ষতিকর ফ্রির্যাডিকেলস থেকে রক্ষা করে।
এছাড়াও আমাদের
সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে
রক্ষা
করে।
চোখ ভালো রাখে
কাঁঠালে রয়েছে
পর্যাপ্ত পরিমাণ
ভিটামিন-এ,
যা
আমাদের
চোখের
জন্য
অপরিহার্য একটি
পুষ্টি
উপাদান। আপনারা
হয়ত
অনেকেই
জানেন
না
যে,
কাঁঠাল
খাওয়ার
অভ্যাসে দৃষ্টিশক্তি ভালো
হয়
এবং
এটি
আমাদের
ত্বকের
বলিরেখা বা
ভাঁজ
প্রতিহত করতে
সক্ষম।
যেহেতু,
রসালো
ফল
কাঁঠালে প্রচুর
পরিমাণ
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান
থাকে,
তাই
এটি
চোখের
রেটিনা
বা
অক্ষিপটের ক্ষতি
প্রতিহত করে
থাকে।
হাড় মজবুত ও শক্ত করে
কাঁঠালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে।
এই
ক্যালসিয়ামের আধিক্যের জন্যে
এটি
হাড়ের
গঠন
সুদৃঢ়
ও
মজবুত
করে।
এটি
অস্টেওপরোসিস (osteoporosis) নামে হাড়ের
ক্ষতিকর রোগ
প্রতিরোধ করতে
বিশেষ
ভূমিকা
পালন
করে
থাকে।
তাই
আপনি
যে
কেউ
হাড়
মজবুত
করার
জন্যে
খাবারের তালিকায় নিতে
পারেন
জাতীয়
ফলের
সাহায্য।
মোঃ সাখাওয়াত হোসেন
প্রভাষক
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
আগানগর ডিগ্রি কলেজ,
বরুড়া, কুমিল্লা।
(সূত্রঃ অনলাইন বিডি প্রতিদিন/০৪ জুলাই ২০১৮)