Loading..

প্রকাশনা

০১ অক্টোবর, ২০১৪ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আরেকবার রক্ত দেখতে চাই
পুরোনো কাগজপত্তর ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে গাইবান্ধার 'দৈনিক পলাশ' এর এই কপিটি পেলাম। সাহিত্য পাতায় আমার অকাল প্রয়াত প্রিয় সহকর্মী ঝুমুরকে উৎসর্গ করে লেখা 'আরেকবার রক্ত দেখতে চাই' কবিতাটি তখন ছাপা হয়েছিল। ২০০১ সালে সরকারি চাকরির সুবাদে আমার পুরো বছরটি গাইবান্ধায় থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল। গাইবান্ধা গভঃ গার্লস হাই স্কুল এ আমার ফার্স্ট পোস্টিং হয়েছিল। অই বছরের ১২ জানুয়ারি সহকর্মী ঝুমুর (অগ্রনী স্কুল ও কলেজ এর টিচার ছিল) স্কুল এর ছাত্রীদের সাথে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মতিঝিল গভঃ বয়েজ হাই স্কুল এ যাওয়ার পথে বাসের নিচে চাপা পড়ে রিকশাওয়ালা সহ দুর্ঘটনা স্থলেই নিহত হয়। গভঃ স্কুল এ জয়েন করার আগে আমি অই স্কুলেই ছিলাম। সেদিন ওখানে আমার ই যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এক ই দিনে জাতীয় টিভি বিতর্কের ফাইনাল অনুষ্ঠান থাকায় মডারেটর ছাড়া টিম সেদিন টিভিতে যেতে চায় নি কারন ওটাই আমার অই স্কুল এর ছাত্রীদের নিয়ে শেষ ডিবেট ছিল। তাই আমার স্থলে ঝুমুর আপা গিয়েছিল। যদিও মেইনলি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের দায়িত্ব তার ই ছিল। যাই হোক বিধি বাম ! সেই থেকে ঝুমুর আপার মৃত্যু্র কারনটা আমাকে প্রতিটি মূহুর্তে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। সবাই তার আত্মার শান্তির জন্য মাগফেরাত কামনা করি। আরেকবার রক্ত দেখতে চাই ইসমত আরা মমতাজ উৎসর্গঃঅকাল প্রয়াত সহকর্মী ফেরদৌসী ঝুমুর এবং সকল শহীদ আমি রক্ত দেখেছি রমনার বটমূলে হায়েনারূপী নরপশুর বিষ্ফোরিত বোমার আঘাতে লাশ হয়ে পড়ে থাকা শত মানুষের বুকে। আমি রক্ত দেখেছি মিছিলের মধ্যিখানে অশান্ত ক্রোধে ফেটে পড়া নরপিশাচের গুলি খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা বেওয়ারিশ টোকাইটার বুকে। আমি রক্ত দেখেছি শান্তিনগর চৌরাস্তার মোড়ে যমদুত বাসের চাকায় পিষ্ট সহকর্মী ঝুমুরের বুকে নিশ্চল-নিথর, থেতলানো দেহে-মস্তকে। আমি আরেকবার রক্ত দেখতে চাই তাবত রক্তচোষা হিংস্র নরপশুদের বুকে। হায়েনার বেড়ে ওঠা কালো হাত দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙ্গে দিতে চাই গুড়িয়ে দিতে চাই অপরাধের আর অত্যাচারের কালো পাহাড় যারা দেশটাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায় নিজের পকেটে পুরে, স্বাধীনতার সুখটুকু কেড়ে নিতে চায় স্বেচ্ছাচারিতার বশে তাদের এবং তাদের দোসরদের বুকে আমি আরেকবার রক্ত দেখতে চাই আরেকবার…… ২০ বৈশাখ ১৪০৮ বঙ্গাব্দ, ৩ মে ২০০১ খ্রিঃ,শুক্রবার,গাইবান্ধা

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি