Loading..

প্রকাশনা

০২ নভেম্বর, ২০১৪ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে ICT প্রযুক্তির সফল বাস্তবায়ন - See more at: http://www.priyo.com/blog/2014/06/11/75061.html#sthash.ZuWAVqjK.9O1bDMoJ.dpuf
ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড আর মাধ্যমিক শিক্ষা শিক্ষার মেরুদন্ড। এখানেই একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যত নির্ধারিত হয়। তাই মাধ্যমিক শিক্ষার উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সফল ব্যবহার অত্যন্ত জরুরী। যার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতাকে বিকশিত করা সম্ভব হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশ্ব যেভাবে এগিয়ে চলেছে আমরা তাদের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে। মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কমছে। যা আমাদের অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ার প্রধান কারণ- ১. বিজ্ঞানের বিষয়সমূহ শিক্ষার্থীদের নিকট সহজে উপস্থাপন করতে না পারা। ২. শিক্ষকদের দক্ষতার অভাব। ৩. বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকের অভাব। ৪. শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস/কাজ না করানো। ৫. ব্যবহারিক ক্লাসে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব। শিক্ষকদের দক্ষতার উন্নয়নে বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে ২৩ হাজার স্কুলে ডিজিটাল ক্লাস রুম স্থাপন করার লক্ষ্যে প্রতিটি স্কুলে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর বিতরণ করা হয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস নেওয়ার লক্ষ্যে শিক্ষকদের ১৪ দিনের ICT ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ICT ট্রেনিং এ বিজ্ঞান (পদার্থ, রসায়ন, জীব) গণিত ও ইংরেজী বিষয়ের শিক্ষকদের প্রয়োগের ক্ষেত্র ও গুরুত্ব বেশী হলেও ট্রেনিং এ গেলে স্কুল চালাতে সমস্যা হয় এর কারণে শারিরিক শিক্ষা, ধর্মশিক্ষা, বাংলা এসব সহজ বিষয়ের শিক্ষকদের ট্রেনিং এ পাঠনো হচ্ছে। প্রয়োগের ক্ষেত্র কম থাকায় অনেকই ট্রেনিং নিয়েও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করেন না। ফলে জটিল বিষয়সমূহ জটিলই থেকে যাচ্ছে। এতে প্রযুক্তি ব্যবহারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তাছাড়া ICT প্রশিক্ষণকালীন সময়ে একজন শিক্ষক ২/৩ টি কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন যা প্রশিক্ষণার্থী তার বিষয়ের উপর যে কোন অধ্যায় থেকে তৈরি করেন। একজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত কম্পিউটার থাকলেও একটি কনটেন্ট তৈরি করতে অনেক সময় লাগে। কম্পিউটার না থাকলে অসম্ভব। কিছু কনটেন্ট জাতীয়-ই-তথ্যকোষ ও শিক্ষক বাতায়নে পাওয়া যাচ্ছে। তবে এগুলো সুবিন্যস্থ এবং পর্যাপ্ত নয়। এ কারনে প্রয়োজনীয় মানসম্মত কনটেন্ট পাওয়া ও তৈরি করা দূরহ। ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে পাঠদানের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে কনটেন্ট তৈরি করা। যা ১৪ দিনের ট্রেনিং নিয়ে অনেকেই তৈরি করতে পারছেন না। অনেকেই ২/১ টি কনটেন্ট তৈরি করে মাঝে মাঝে ক্লাস নিচ্ছেন। ফলে ডিজিটাল প্রযুক্তির সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তাই ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে পাঠদানের ক্ষেত্রে কনটেন্টকে তথ্যভান্ডার হিসাবে বিবেচনা করে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। যাতে শিক্ষকরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজেই ক্লাস নিতে পারেন। এজন্য প্রথমেই কনটেন্ট তৈরির একটি নিয়মাবলী ঠিক করতে হবে। যেমন- ১. পূর্বজ্ঞানের সাথে বর্তমান বিষয়বস্তুর সংশ্লিষ্ট ছবি/ভিডিও। ২. পাঠ শিরোনাম। ৩. প্রতিটি বিষয়বস্তুর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। ৪. প্রতিটি বিষয়বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট ছবি/ভিডিও/এনিম্যাসন ৫. মূল্যায়নের প্রশ্ন। ৬. বাড়ির কাজ। ৭. পাঠ সমাপ্তি ৮. শিখনফল। এবার প্রথমেই চিন্তা করতে হবে কোন কোন বিষয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্র ও গুরুত্ব বেশী। ব্যবহারিক ক্ষেত্র ও গুরুত্ব বিবেচনা করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বিষয়সমূহকে সাজাতে হবে। এবার প্রতিটি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের আওতায় কতজন বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক আছেন তার তালিকা তৈরি করতে হবে। এবার সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল বইসমূহের প্রতিটি বইকে ভাগ করে দিতে হবে যেন প্রতিটি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল বইয়ের একটি নির্ধারিত অংশ পায়। প্রতিটি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের দক্ষ প্রশিক্ষক মহোদয় নির্ধারিত অংশের কনটেন্ট প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের দিয়ে তৈরি করাবেন। যেমন- অষ্টম শ্রেণীর বিজ্ঞান বইয়ের ১৪টি অধ্যায় আছে। একটি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ১, ২, ৩ নং অধ্যায়ের সকল পাঠ সমূহের কনটেন্ট প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের দিয়ে তৈরি করাবেন। অন্যান্য সকল সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজও তাদের নির্ধারিত বিভিন্ন অংশের কনটেন্ট প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের দিয়ে তৈরি করাবেন। দুইটি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ একই ধরনের পাঠ সমূহের কনটেন্ট প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকদের দিয়ে তৈরি করানো যেতে পারে। এবার ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবহারিক ক্ষেত্র ও গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রথমে ১/২টি বিষয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য এনে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষককে দিয়ে ধারাবাহিকভাবে অধ্যায়ের ১/২টি পাঠ করে অধ্যায়গুলোকে (১,২,৩) ভাগ করে দিতে হবে। প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক প্রথম ০৮ দিনে তাদের কনটেন্ট তৈরির প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন পরবর্তী ০৬ দিনে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক মানসম্মত একটি কনটেন্ট তৈরি করবে সম্মানিত প্রশিক্ষকদের নির্দেশনায়। ট্রেনিং শেষে প্রতিটি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ তৈরিকৃত কনটেন্টগুলো সমন্বয়কারী কতৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করবেন। এক্ষেত্রে একটি সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজকে সমন্বয়কারী কতৃপক্ষের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। প্রতিটি কনটেন্ট এ উপস্থাপনায় ও নির্দেশনায় উল্লেখ থাকতে হবে। এভাবে ১৪ দিনের একটি প্রশিক্ষণ ব্যাচ থেকে 6০০টি কনটেন্ট তৈরি করা সম্ভব। তখন একটি বইয়ের কয়েকটি অধ্যায়ের একই কনটেন্ট তৈরি হবে না সমগ্র বইয়ের কনটেন্ট তৈরি হবে। প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষকের উপর দায়িত্ব থাকবে পরবর্তীতে তার তৈরিকৃত কনটেন্টটিকে আর কি উন্নত করা যায়। কতৃপক্ষ কনটেন্টগুলো বিষয়ভিত্তিক বইয়ের অধ্যায় ও পাঠ অনুসারে ওয়েবসাইট তৈরি করে সাজিয়ে রাখবেন। যাতে সকল শিক্ষকরা সহজেই download করে ক্লাস নিতে পারেন। প্রয়োজনে পরিবর্তন করে নিজের পছন্দ মত সাজিয়ে/উন্নত করে ক্লাস নিতে পারেন। এভাবে অতি দ্রুত সব বিষয়ের কনটেন্ট তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে শিক্ষকদের ডিজিটাল প্রযুক্তি প্রয়োগের প্রসার দ্রুত হবে। ফলে জটিল বিষয়সমূহ শিক্ষার্থীরা সহজে বুঝতে পারবে। শিক্ষার্থীদের জ্ঞান ও দক্ষতা দ্রুত বিকশিত হবে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শিক্ষায় এগিয়ে যাবে দেশ ও জাতি এবং গঠিত হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। লেখক: সহকারি শিক্ষক(ভৌত বিজ্ঞান),জৈন্তাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, জৈন্তাপুর,সিলেট। - See more at: http://www.priyo.com/blog/2014/06/11/75061.html#sthash.ZuWAVqjK.wTn6drS0.dpuf

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি