Loading..

প্রকাশনা

২৪ নভেম্বর, ২০১৪ ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সেরা হওয়ার অনুভূতি, চরিত্রবান সমাজপতি, সহকারি শিক্ষক জৈন্তাপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, জৈন্তাপুর, সিলেট।http://www.ittefaq.com.bd/print-edition/aunoshilon/2014/11/24/16398.html
আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে প্রতি নিয়ত নতুন নতুন জ্ঞান, তথ্য, তত্ত্ব ও দক্ষতার সংযোজন হচ্ছে। ডিজিটাল বিশ্বে টিকে থাকতে হলে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করতে হলে সর্বাগ্রে শিক্ষকদের ডিজিটাল হওয়া প্রয়োজন। এজন্য শিক্ষকদের পুরাতন রীতি ও ধারণার পরির্বতন করতে হবে। নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করে ডিজিটাল শিক্ষক হতে হবে। তবেই দেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন সম্ভব। শিক্ষক আগামি দিনের দক্ষ সুনাগরিক নির্মাণের কারিগর। তাই শিক্ষকতা পেশায় যোগদানের পর থেকেই নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রয়াস করে যাচ্ছি। ২০১৩ সনের পহেলা জানুয়ারীতে সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ সিলেটে বি এড প্রশিক্ষণে আসি। উক্ত প্রশিক্ষণে কন্টেন্ট উপস্থাপন ও প্রশিক্ষক মহোদয়ের ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান আমাকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদানে আগ্রহী করে তুলে। কম্পিউটারে যদিও আমার ছয় মাসের ডিপ্লোমা ছিল কিন্তু ডিজিটাল কন্টেন্ট কীভাবে তৈরি করতে হয় তা জানা ছিল না। তাই আমি আমার প্রশিক্ষক জনাব আরিফ হাসান চৌধুরী ও আমার এক ছোট ভাই রিপনের নিকট থেকে ধারণা নিয়ে ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরির কাজ শুরু করি। ফলে বি এড প্রশিক্ষণের বিভিন্ন কর্মকান্ডে এবং চূড়ান্ত পাঠদানে ডিজিটাল কন্টেন্ট প্রস্তুত করে ক্লাস উপস্থাপন করতে সক্ষম হই। আমার মনে হয়েছে বি এড প্রশিক্ষণে ডিজিটাল কন্টেন্ট এর বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা অতি আবশ্যক ছিল। বি এড প্রশিক্ষণে থাকা কালে সম্ভবত জুলাই মাসে সরকার ডিজিটাল ক্লাস রুম স্থাপন করার লক্ষ্যে প্রজেক্টর সামগ্রী বিতরণ করে এবং প্রজেক্টর সেটিং কর্মশালায় শিক্ষকরা সিলেট সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে আসেন । আগত শিক্ষকদের বিরূপ মনোভাব দেখে খুব হতাশ হই। অধিকাংশ শিক্ষকের আধুনিক পদ্ধতিতে পাঠদানে ও নতুন প্রযুক্তিকে গ্রহণে আগ্রহ কম। অবশ্য এর বাস্তবসম্মত কারণও আছে যা অনুসন্ধান করা প্রয়োজন। আমার স্কুলে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর সামগ্রী দেওয়া হলেও আমি বি এড প্রশিক্ষণ থেকে গিয়ে সেগুলোর ব্যবহার শুরু করি। এরূপ অবস্থা অনেক স্কুলেই বিরাজমান। যা গতিশীল করা প্রয়োজন এবং আমাদের ইতিবাচক দৃষ্টিতে আগ্রহের সাথে গ্রহণ করা প্রয়োজন। ক্লাস নিতে পর্যাপ্ত কন্টেন্ট না থাকায় আমি শিক্ষক বাতায়ন ও জাতীয়-ই-তথ্যকোষে সার্চ করি এবং অনেক ক্লাসের কন্টেন্ট পাই। কিন্তু শিক্ষক বাতায়নের সদস্য না হওয়ায় সেগুলো ডাউনলোড করতে পারিনি। শিক্ষক বাতায়নে কীভাবে সদস্য হতে হয় তাও জানতাম না। তাই ডিজিটাল কন্টেন্ট এ দক্ষতা অর্জনের জন্য আমি প্রশিক্ষণে যাওয়ার চেষ্টা করি। প্রথমে জেলা শিক্ষা অফিস থেকে নাম দেওয়া হলেও স্কুলে শিক্ষক সংকট দেখিয়ে আমাকে আইসিটি প্রশিক্ষণে যেতে দেওয়া হয়নি ফলে অনেকটা হতাশ হই। শিক্ষার্থীদের নিকট শিখনকে সহজ ও সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে এবং দ্রুত জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনে ডিজিটাল প্রযুক্তির দক্ষতা অর্জন শিক্ষকদের অত্যাবশ্যক। ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি করতে একজন শিক্ষককে পাঠদানের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হয়। পাঠদানকে সহজ ও সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলে এমন ছবি, আনিম্যাশন , ভিডিও ক্লীপ , বিশ্বের স্বনামধন্য শিক্ষকদের ক্লাশ খুজে ও দেখে বিষয় সম্পর্কে একজন শিক্ষকের জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। যার ফলে শিক্ষকের নিকট পাঠদান সহজ হয়। ফলে শিক্ষার্থীরাও বিষয়বস্তু সম্পর্কে সহজে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে পারে। তাই প্রত্যেক শিক্ষককে আধুনিক ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান করতে আগ্রহী ও সক্ষম হতে হবে এবং স্কুলের প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ যাতে ডিজিটাল হয় তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং সরকারকে দক্ষতার মূল্যায়ন করতে হবে তবেই শিক্ষার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে, প্রতিষ্ঠিত হবে আধুনিক ডিজিটাল বাংলাদেশ।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি