Loading..

খবর-দার

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০৫:৪৮ অপরাহ্ণ

আজ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদ্বিশতবর্ষ

হাতেখড়ির পরেই বাঙালির হাতে প্রথম যে বইটি উঠে আসে, সেটা ‘বর্ণপরিচয়’। তার বর্ণপরিচয়ের হাত ধরেই বাংলা দেখেছিল শিক্ষার নবজাগরণ। আজ বাঙালির নবজাগরণের প্রধান পুরুষ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মদিন। ১৮২০ সালের আজকের এই দিনেই (২৬ সেপ্টেম্বর) অবিভক্ত ভারতের মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে জন্ম নেন তিনি। বিদ্যাসাগর ছিলেন একাধারে দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, সমাজ সংস্কারক, লেখক, অনুবাদক ও প্রকাশক। বিদ্যাসাগরের জন্মদ্বিশতবর্ষ উপলক্ষ্যে আগামীকাল রবিবার বাংলা একাডেমি আলোচনাসভার আয়োজন করেছে।

বাঙালির জাগরণে, বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা অতুলনীয়। তিনি বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার। বাংলা গদ্যকে সরল ও আধুনিক করার ক্ষেত্রে তার অবদান অতুলনীয়। বিশেষ করে নারীদের দুর্গতির যুগে তিনি নেমেছিলেন উদ্ধারকর্তার ভূমিকায়। রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের প্রচণ্ড বিরোধিতা উপেক্ষা করে বিধবাবিবাহ চালু করেছিলেন, রোধ করেছিলেন বহুবিবাহ। নিজের সন্তান নারায়ণকেও বিধবা কন্যার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।

১৮৫৬ সালে ভারতে বিধবাবিবাহ আইন পাশের পক্ষে তিনি জোরালো ভূমিকা পালন করেন। নারীর জন্য সে আমলে ৩৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। জাত, ধর্ম, বর্ণ প্রথা ও সংস্কারমুক্ত একজন প্রকৃত মানব হয়ে উঠবার শিক্ষা ধারণ করে ঈশ্বরচন্দ্র হয়ে উঠেছিলেন বাঙালির সর্বকালের অন্যতম বড় সমাজ সংস্কারক।

জনপ্রিয় শিশুপাঠ্য বর্ণপরিচয়সহ একাধিক পাঠ্যপুস্তক, সংস্কৃত ব্যাকরণ গ্রন্থ ও সংস্কৃত, হিন্দি ও ইংরেজি থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই বাংলায় অনুবাদ করেছেন। সংস্কৃতি শিক্ষা এবং দর্শনে অসাধারণ অবদানের জন্য তাকে ক্যালকাটা সংস্কৃত কলেজ বিদ্যাসাগর উপাধিতে ভূষিত করে। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ :‘বর্ণপরিচয়’, ‘সংস্কৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা’, ‘ব্যাকরণ কৌমুদী’, ‘বিধবা বিবাহ চলিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব’ প্রভৃতি। এছাড়া তিনি অনুবাদ করেন ‘বেতালপঞ্চবিংশতি’ (হিন্দি থেকে), ‘শকুন্তলা’, ‘সীতার বনবাস’, ‘ভ্রান্তিবিলাস’ (শেকসপিয়ারের কমেডি অব এরস)। ১৮৯১ সালের ২৯ জুলাই কলকাতার মাটিতে পরলোকগমন করেন তিনি।