Loading..

খবর-দার

৩১ অক্টোবর, ২০২০ ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ

সিলেট জাফলং এ যেতে হলে
জাফলং
প্রকৃতি কন্যা হিসাবে সারাদেশে এক নামে পরিচিত সিলেটের জাফলং।খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তূপ জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়। সীমান্তের ওপারে ইন্ডিয়ান পাহাড় টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম ধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি ব্রীজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেলপানি,উঁচু পাহাড়ে গহিন অরণ্য ও শুনশান নিরবতার কারণে এলাকাটি পর্যটকদের দারুণভাবে মোহাবিষ্ট করে। এসব দৃশ্যপট দেখতে প্রতিদিনই দেশী-বিদেশী পর্যটকরা ছুটে আসেন এখানে। প্রকৃতি কন্যা ছাড়াও জাফলং বিউটি স্পট, পিকনিকস্পট, সৌন্দর্যের রাণী- এসব নামেও পর্যটকদের কাছে ব্যাপক পরিচিত। ভ্রমন পিয়াসীদের কাছে জাফলং এর আকর্ষণই যেন আলাদা। সিলেট ভ্রমনে এসে জাফলং নাগেলে ভ্রমনই যেন অপূর্ণ থেকে যায়।সিলেটনগরী থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলং এরঅবস্থান। জাফলংয়ে শীত ও বর্ষা মওসুমের সৌন্দর্যের রুপ ভিন্ন। বর্ষায় জাফলংএর রুপ লাবণ্য যেন ভিন্ন মাত্রায় ফুটে উঠে। ধূলি ধূসরিত পরিবেশ হয়ে উঠেস্বচ্ছ। স্নিগ্ধ পরিবেশে শ্বাস-নি:শ্বাসে থাকে ফুরফুরে ভাব। খাসিয়া পাহাড়ের সবুজাভ চূড়ায় তুলার মত মেঘরাজির বিচরণ এবং যখন-তখন অঝোর ধারায় বৃষ্টিপাহাড়ি পথ হয়ে উঠে বিপদ সংকুল-সে যেন এক ভিন্ন শিহরণ। সেই সঙ্গে কয়েক হাজারফুট উপর থেকে নেমে আসা সফেদ ঝর্ণাধারার দৃশ্য যে কারোরই নয়ন জুড়ায়। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, হাজার বছর ধরে জাফলং ছিল খাসিয়া জৈন্তা-রাজার অধীন নির্জন বনভূমি। ১৯৫৪ সালে জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর খাসিয়া জৈন্তা রাজ্যের অবসান ঘটে। তারপরও বেশ কয়েক বছর জাফলংয়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পতিত পড়ে রয়েছিল। ব্যবসায়ীরা পাথরের সন্ধানে নৌ পথে জাফলং আসতে শুরু করেন। পাথর ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকায় গড়ে উঠে নতুন জনবসতিও। আশির দশকে সিলেটের সাথে জাফলং এর ৫৫ কিলোমিটার সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে জাফলংয়ের নয়না ভিরাম সৌন্দর্যের কথা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের পাশাপাশি প্রকৃতি প্রেমীরাও ভিড় করতে থাকেন জাফলংয়ে। জাফলং এখন দেশের সেরা পর্যটনস্পট।
পাশাপা‌শি আর কী কী দেখ‌তে পার‌বেন-
জাফলং এর কাছাকাছি দর্শনীয় স্থান
১। লালাখাল
২। তামাবিল স্থলবন্দর
৩। জৈন্তা রাজার বা‌ড়ি
৪। সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা
৫। সাইট্রাস গ‌বেষণা কেন্দ্র ও
৬। Jaflong Valley Boarding School.
জাফলং ভ্রমণ টিপস:
১। গ্রুপ করে গেলে ভাল, খরচ কম হবে।
২। কিছু কিনতে বা খেতে চাইলে দরদাম করে নিন।
৩। ভারতীয় বর্ডার কাছেই, তাই সীমানার ব্যপারে সতর্ক থাকুক।
৪। গাড়ি ঠিক করার সময় দরদাম করুন।
৫। জাফলং এর পানিতে নামার সময় সতর্ক থাকুন, পাথর উত্তোলনের ফলে অনেক যায়গা অনেক গভীর।
কোথায় থাকবেন
গেষ্ট হাউজ ও রেষ্ট হাউজের তথ্যঃ
১।জেলা পরিষদের রেষ্ট হাউজ ,উপজেলা হেড কোয়ার্টার। যোগাযোগ: ইউএনও ০১৭৩০ ৩৩১০৩৬। কেয়ারটেকার: ০১৭৩৭৬৯৬৭৮১।
২। নলজুরী রেষ্ট হাউজ- নলজুরী, জাফলং। যোগাযোগ: প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ, সিলেট- ০১৭১১-৯৬৬০১৯, কেয়ারটেকার: ০১৭৫২-২২৬৩৭৫৩।গ্রীণ পার্ক রেষ্ট হাউজ, নলজুরী, জাফলং। যোগাযোগ: বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, সিলেট- ০১৭১১-১৮০৫৭৪, কেয়ারটেকার: ০১৭৬৬-৮৫৭১৬৮৪।সওজ বাংলো, জাফলং- যোগাযোগ- নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, সিলেট-০১৭৩০ ৭৮২৬৬২।
রেস্টুরেন্ট জাফলং এ পর্যটকদের খাওয়ার জন্য বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে।
১।পর্যটন রেস্তোরা,জাফলং, তামাবিল জিরো পয়েন্ট; যোগাযোগ: ম্যানেজার ০১৮১৯ ৯০৪০৭৫
২।পিকনিক সেন্টার রেস্টুরেন্ট,জাফলং বল্লাঘাট। যোগাযোগ: ম্যানেজার- ০১৭১২ ৭৪৬৪২৫।
৩।ক্ষুধা রেস্টুরেন্ট, জাফলং বল্লাঘাট। যোগাযোগ: ম্যানেজার; ০১৭২১-৯১২৫১৭।
কিভাবে যাওয়া যায়:
অবস্থান: সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। সিলেট জেলা সদর হতে সড়ক পথে দুরুত্ব মাত্র ৫৬ কি.মি।
সিলেট থেকে যাতায়াতঃ
সিলেট থেকে আপনি বাস/ মাইক্রোবাস/ সিএনজি চালিত অটোরিক্স্রায় যেতে পারেন জাফলং এ। সময় লাগবে ১ ঘন্টা হতে ১.৩০ ঘন্টা। সিলেটে থেকে বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা বা লেগুনায় যাওয়া যায় জাফলংয়ে। জাফলং যেতে জনপ্রতি বাসভাড়া পড়বে ৮০ টাকা। যাওয়া-আসার জন্য মাইক্রোবাসের ভাড়া পড়বে ৩০০০-৩৫০০ টাকা। সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া পড়বে ১০০০-১২০০ টাকা। সিলেট শহরের যে কোনো অটোরিকশা বা মাইক্রোবাস স্ট্যান্ড থেকে গাড়ি রিজার্ভ করে যাওয়া যাবে জাফলং এ।