সহকারী শিক্ষক
১৭ জানুয়ারি, ২০২১ ০৮:৩০ অপরাহ্ণ
সুস্বাদু মধুবৃক্ষ খেজুর রস ও গুড়ের ১৫ উপকারিতা:
সুস্বাদু মধুবৃক্ষ খেজুর রস ও গুড়ের ১৫ উপকারিতা:
হায়রে শিশির তোর কী লিখব যশ!
কালগুণে অপরূপ কাঠে হয় রস।
পরিপূর্ণ সুধাবিন্দু খেজুরের কাঠে!
কাঠ কেটে উঠে রস যতবার কাটে।
বাংলাদেশের মাটি ও কোমল প্রকৃতি খেজুর গাছ বেড়ে ওঠার জন্য বেশ
উপযোগী। রাস্তা, বাঁধ, পুকুর পাড়, খেতের আইল এবং আবাদি জমিতে এ বৃক্ষ বেশ ভালো
জন্মে। তবে নদীর তীর, আংশিক লবণাক্ত এলাকা, বরেন্দ্র এলাকাসহ চরাঞ্চলেও জন্মে।
বাংলাদেশের সব জেলা বিশেষ করে বৃহত্তর যশোর, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল,
রাজশাহী ও নাটোর অঞ্চলে খেজুর গাছ বিজ্ঞানভিত্তিক চাষ করা হয়। যশোর ও ফরিদপুর
দেশের সর্বাধিক খেজুর রস ও খেজুর গুড় উৎপন্ন অঞ্চল।
শীত পড়তে না পড়তেই বাঙালি উৎসুক হয়ে থাকে খেজুরের গুড়ের জন্য। আর
পায়েসে যদি খেজুরের গুড় দেওয়া হয় তাহলে তো তার স্বাদই বদলে যায়। শীতকালে গুড়ের
স্বাদ বাঙালির কাছে মধুর সমান। আমাদের দেশে খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি হয়। বছরের
শেষে গুড় দিয়ে তৈরি পিঠে, পুলি, পায়েস, মিষ্টি নিয়ে মজে থাকে বাঙালি। পুষ্টিবিদরা
বলছেন গুড়ের উপকারিতা অনেক।
এবার জানুন এই সস্তা গুড়ের ১৫ অনবদ্য সব গুণাগুণ:
১. কোষ্ঠকাঠিন্যের যম-
গুড় হজমশক্তি বাড়ায়। সেই সঙ্গে এর ভিতরে থাকা শর্করা কোষ্ঠও সাফ
করে। আপনি যদি দীর্ঘ দিন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন, তবে রোজ এক চামচ গুড়
আপনাকে স্বস্তি দিতে পারে।
২. লিভার ভাল রাখে-
গুড় লিভার থেকে যাবতীয় টক্সিন দূর করে শরীরকে সুস্থ রাখে। ফলে, শরীর
থেকে টক্সিন বের করতে চাইলে রোজ এক কামড় গুড় হতে পারে আপনার সহায়!
৩. সর্দি-কাশি তাড়ায়-
গুড় সর্দি-কাশিও তাড়ায়। সর্দি হলে একটু গুড় খেয়ে দেখুন। স্বস্তি
পাবেন।
৪. রক্ত পরিষ্কার রাখে-
গুড় যেহেতু লিভার থেকে টক্সিন বের করে দেয়, সেই জন্য রক্তও সাফ
থাকে।
৫. শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়-
গুড় কোষ্ঠ সাফ করে, রক্ত সাফ রাখে। ফলে, আপনা থেকেই শরীরের
প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়ে।
৬. শরীর সাফ রাখে-
শুধু লিভারই নয়, তার পাশাপাশি অন্ত্র, ফুসফুস এবং শরীরের অভ্যন্তরের
অনেক যন্ত্রই পরিষ্কার রাখে গুড়।
৭. মেনস্ট্রুয়াল ব্যথা কমায়-
যাদের মেনস্ট্রুয়েশনের (পিরিয়ড) সময় পেটে ব্যথা হয়, তারা সেই সময়ে
গুড় খেয়ে দেখতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে স্বস্তি পাবেন!
৮. রক্তাল্পতা রোধ করে-
গুড় হিমোগ্লেবিনের সংখ্যা বাড়ায়! ফলে, রক্তাল্পতা রোধে এর বিকল্প
নেই বললেই চলে!
৯. মিনারেল ম্যাজিক-
গুড় শরীরের মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করে। ১০ গ্রাম গুড় প্রায় ১৬
মিলিগ্রাম মিনারেলের জোগান দেয়!
১০. স্টমাক ঠাণ্ডা রাখে-
গুড় সারা শরীর তো বটেই, বিশেষ করে স্টমাক ঠাণ্ডা রাখে। ফলে,
কর্মক্ষমতা বাড়ে।
১১. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রক-
গুড়ে সোডিয়াম আর পটাসিয়াম থাকে, যা ব্লাড প্রেসারের ভারসাম্য বজায়
রাখে!
১২. শ্বাসকষ্ট কমায়-
গুড় যেহেতু শরীর ঠাণ্ডা রাখে, সেহেতু আপনা থেকেই শ্বাসকষ্টে স্বস্তি
মেলে। অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিসের মতো অসুখে রোজ গুড় খেলে উপকার পাওয়া যায়।
১৩. গাঁটের ব্যথা কমায়-
গাঁটের ব্যথায় গুড় স্বস্তি এনে দেয়। এমনি-এমনি বা এক গ্লাস দুধের
সঙ্গে খান দেখবেন উপকার পাচ্ছেন!
১৪. মেদ ঝরায়-
গুড় শরীর থেকে টক্সিন বের করার পাশাপাশি মেদ গলাতেও সাহায্য করে।
ফলে, রোজ গুড় খেলে শরীর ঝরঝরে থাকে।
১৫. ক্লান্তি নিরোধক-
গুড় রক্ত পরিষ্কার করে, শ্বাসকষ্ট কমিয়ে, মেদ গলিয়ে শরীরকে ঝরঝরে
রাখে। ফলে, কর্মক্ষমতা যেমন বাড়ে, তেমনই ক্লান্তিও কমে!
(তথ্যসূত্র- কৃষি ও পুষ্টি ওয়েবসাইট)