Loading..

খবর-দার

১৮ জানুয়ারি, ২০২১ ০৯:৩২ অপরাহ্ণ

কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস খরচ,মতলববাজদের অপপ্রচার ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা ,শাহজাহান সাজু
কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস খরচ,মতলববাজদের অপপ্রচার ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা
আমরা লক্ষ করছি কিছু দিন পর পর শিক্ষক নামদারি একটি মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে মিথ্যা,ভিত্তিহীন ও আজগুবি কল্পকাহিনির মাধ্যমে গুজব সৃষ্টি করে শিক্ষক সহ সমাজে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। একজন শিক্ষক অন্ধকারের বাতিঘর। তারা সমাজকে, দেশকে সঠিক পথের সন্দান দিবে এটাই জাতি প্রত্যাশা করে। দুঃখজনক হলেও সত্য শিক্ষক নামদারি কতিপয় ব্যক্তির অশিক্ষক সুলভ আচরণ, একই ব্যক্তি বিভিন্ন নামে ফেইসবুকে ফেইক আইডি খুলে কিংবা কখনো কখনো স্বনামেও এমন সব গুজব ছড়াচ্ছেন যা শিক্ষকতার মহান পেশার সাথে কোন ভাবেই মানায় না। এতে করে শিক্ষকদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। আসলে এরা শিক্ষক নামদারি মতলববাজ,গুজব সৃষ্টিকারি। তারা বিভিন্ন সময় গুজব ছড়িয়ে শিক্ষকদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে তাদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এসব মতলববাজদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন এদের রাজনৈতিক পরিচয় বের করা প্রয়োজন।
সম্প্রতি এইসব মতলববাজরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস খরচের মনগড়া কল্পকাহিনী ও গুজব ছড়িয়ে শিক্ষকদের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে ( এরকম তারা অতীতেও অনেক করেছে)।
সফল রাষ্ট্রনায়ক, জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার প্রতিটি সরকারি অফিসে কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য 'এ্যানুয়েল পারফরমেন্স এগ্রিমেন্ট' ব্যবস্হা চালু করেছেন। এর ফলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয়ের এবং মন্ত্রী পরিষদ সচিবালয়ের সাথে সকল মন্ত্রণালয়ের এবং মন্ত্রনালয়ের অধীনস্থ সংস্থা সমুখ স্ব স্ব মন্ত্রনালয়ের সাথে চুক্তি সম্পাদন করে থাকে। উক্ত বার্ষিক কর্মসম্পাদক চুক্তির আওতায় প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর সকল কর্মকান্ডের বিবরণ মন্ত্রনায়ে পাঠাতে হয় এবং বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি মোতাবেক হালনাগাদ তথ্য স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের ওয়েব সাইটে দিতে হয়। এতে করে সরকারি সব অফিসের কর্মকান্ডের সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা অনেক গুণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
কল্যাণ ট্রাস্ট শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের অধিনস্হ বেসরকারি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীদের একটি সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান। কল্যাণ ট্রাস্টে অর্থ ও নিজস্ব অফিস সংকট,স্বল্প জনবল সহ নানাবিধ সমস্যা মোকাবেলা করে আমরা সর্বোচ্চ সততা,আন্তরিকতা ও একাগ্রতার মাধ্যমে সেবা প্রদান করে যাচ্ছি। বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও কল্যাণ ট্রাস্টের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা জীবনের ঝুকি নিয়ে সেবা প্রদান করেছেন। এজন্য মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী,উপমন্ত্রী,সচিব মহোদয় কল্যাণ ট্রাস্ট কতৃপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ।
বার্ষিক কর্ম পরিকল্পনার অংশ হিসাবে শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের এক বছরের কর্ম পরিকল্পনা ও গত তিন মাসের সম্পদিত কর্মকান্ড ট্রাস্টের ওয়েব সাইডে দেওয়া হয়। উক্ত তথ্যে গত তিন মাসের খরচ বাবাদ ২৬ লক্ষ এবং এক বছরের সম্ভাব্য খরচ হিসাবে ১ কোটি ৮২ লক্ষ টাকার বিবরণ রয়েছে। কিন্তু আমরা লক্ষ করছি রাতারাতি গড়ে উঠা ফেইসবুক ভিত্তিক দুই একটি সংগঠনের পেইজে কতিপয় শিক্ষক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত তিন মাসের খরচ এবং এক বছরের সম্ভাব্য খরচ সম্পর্কে সম্পুর্ন মনগড়া ও আজগুবি অভিযোগ তুলে শিক্ষক সহ সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। গত তিন মাসের খরচ ২৬ লক্ষ টাকা নাকি শুধু অফিস খরচ করা হয়েছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ এই খরচের মধ্যে রয়েছে কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন (প্রতি মাসে প্রায় সাত লক্ষ টাকা), আবেদনের ডাটা এন্ট্রির খরচ,বোর্ড সভা ও বিভিন্ন উপ-কমিটির সভার সম্মানী,স্টেশনারি,বিভিন্ন ক্রয়সহ অফিসের দৈনন্দিন যাবতীয় খরচ।
এছাড়া এক বছরের জন্য সম্ভাব্য বাজেটে যে টাকা রাখা হয়েছে সেটাতো সম্ভাব্য খরচ। যে টাকা খরচ হবে না সেটাতো কল্যাণ ট্রাস্টের কোষাগারেই থাকবে। তারা আরো অপপ্রচার করছে শিক্ষকদের প্রদত্ত চাঁদার টাকা থেকে নাকি অফিসের খরচ মিটানো হয়। কিন্তু তারা তো এটা জানার কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ ট্রাস্টের আর্থিক সংকট নিরসনে----- টাকা বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছেন। অতিতে কোন সরকারের সময় কল্যাণ ট্রাস্টে একটি টাকাও বরাদ্দ দেয়নি। এছাড়াও মানবতার জননী,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ৩৫ কোটি টাকা বিশেষ অনুদান নিয়েছেন। এই টাকার স্হায়ী আমানতের মুনাফার টাকায় কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস খরচে ব্যয় নির্বাহ করা হয়। একজন শিক্ষকের নিশ্চয় এটা জানা থাকার কথা সরকারি বিধিমালার বাইরে একটি টাকা খরচ করার কোন সুযোগ নেই। কারণ কল্যাণ ট্রাস্ট একটি সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। প্রতি বছর একাধিক সরকারি সংস্থা কল্যাণ ট্রাস্টে অডিট করে থাকে।
এখন প্রশ্ন হলো যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা,ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক তথ্য দিয়ে গুজব ছড়িয়ে জনমনে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করে ওরা কারা? ওদের উদ্দেশ্য কি? সরকারি বেতনভোগী একজন শিক্ষক কি মনগড়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারি একটি সংস্হার বিরুদ্ধে এরূপ নৈতিকতা বিবর্জিত কর্মকান্ড পরিচালনা করতে পারে? আমরা কেউ কি আইনের উর্ধে?
উল্লেখ্য গত বছর আমার হার্টে রিং প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। করোনার এই মহামারীর মধ্যে আমাকে ডাক্তার বার বার সতর্ক করা সত্বেও দেশের এই দুঃসময়ে করোনার এই পুরো সময়টিতে আমার সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং আমার সংগঠনগত ভাবে শিক্ষকসহ সমগ্র জাতির পাশে দাঁড়িয়েছি। যা শিক্ষক সমাজ এবং দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছেন। করোনায় মহাদুর্যোগ আমিই প্রথম বেসরকারি শিক্ষকদের একদিনের বেতন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তখনো শিক্ষক নামদারি এই অংশটি সেদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অকথ্য ভাষায় আমাকে আক্রমণ করেছিল। তাদের কারো কারো ভাষা এতটাই কদার্য ছিল যা কোন শিক্ষক কেন সমাজের নিকৃষ্ট শ্রেনীর মানুষরাও ব্যবহার করে না। দেশের শিক্ষক সমাজ কিন্তু সেদিন এই অপশক্তির কথায় কসন না দিয়ে স্বেচ্ছায় উদার মনে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতন দান করে সর্ব মহলে প্রসংশিত হয়েছেন।
দেশের শিক্ষার উন্নয়ন,শিক্ষক সমাজের বৃহৎ স্বার্থে বিশেষ করে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের স্বপ্ন পুরণে তথাকথিত এসব শিক্ষক ও শিক্ষক নেতা নামদারি বর্ণচোরা ও মতলববাজদের চিহ্নিত করে এখনই ওদের মুখোশ উম্মোচন করতে হবে।
ঐতিহাসিক মুজিব জন্মশতবর্ষেই হোক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের স্বপ্ন পুরণ। জয় বাংলা।