Loading..

পাঠসংশ্লিষ্ট ছবি/ইমেজ

১৩ মে, ২০২১ ১২:৩৫ অপরাহ্ণ

শেষ মুহূর্তে কেনাকাটায় মার্কেটে উপচে পড়া ভিড়

শেষ মুহূর্তে কেনাকাটায় মার্কেটে উপচে পড়া ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেষ মুহূর্তে কেনাকাটায় মার্কেটে উপচে পড়া ভিড়
নিউমার্কেটে গতকাল উপচে পড়া ভিড় -রোহেত রাজীব

ঈদুল ফিতর ঘনিয়ে আসায় জমে উঠেছে ঈদের কেনাকাটা। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় মার্কেটে মার্কেটে ছুটছে মানুষ। করোনা ঝুঁকির মধ্যেই গতকাল রাজধানীর বিপণিবিতান ও মার্কেটগুলোয় ছিল ক্রেতার উপচে পড়া ভিড়। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে পোশাকের দোকানগুলোয়। ক্রেতা টানতে অধিকাংশ দোকানে দেওয়া হয়েছে মূল্যহ্রাসসহ নানা লোভনীয় প্রস্তাব। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে কিছু বড় শপিং মল ও দোকানে জীবাণুনাশক টানেল ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হলেও অধিকাংশ স্থানেই উপেক্ষিত ছিল স্বাস্থ্যবিধি। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ঈদবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, পুরো রোজায়ই বাজারে ক্রেতা ছিল না। বসে বসে লোকসান গুনতে হয়েছে। গণপরিবহন চলাচল শুরুর পর মার্কেটে ক্রেতা আসছে। গত শুক্রবার থেকে ক্রেতার চাপ বাড়ছে। রোজা ২৯টি হলে ঈদ হবে বৃহস্পতিবার। আর ৩০টি হলে ঈদ হবে শুক্রবার। আর দু-তিন দিন বাকি ঈদের। এ স্বল্প সময়ে বেশি বিক্রি করতে দাম কমিয়ে দিয়েছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী। তাদের মতে অনেকে বেতনই পেয়েছে গতকাল। কেউ আজ পাবে। এজন্য শেষ মুহূর্তে ক্রেতাসমাগম বাড়ছে। চাঁদরাত পর্যন্ত ক্রেতা বাড়তে থাকবে বলে মনে করছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী। তারা বলছেন, প্রথম দিকে লোকসানের যে শঙ্কা ছিল তা কাটলেও খুব বেশি লাভের সুযোগ নেই। রাজধানী সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী আখতারুজ্জামান বলেন, ‘রোজার প্রথম ১০-১২ দিন বিক্রি একেবারেই ছিল না। গতবারের মতো এবারও লোকসানের আশঙ্কা করছিলাম। শুক্রবার থেকে ক্রেতা ভালোই আসছে। চাঁদরাত পর্যন্ত এমন ক্রেতাসমাগম থাকলে খরচটা তুলতে পারব। না হলে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের ঘরে ঈদের আনন্দ আসবে না।’

ওই মার্কেটে সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা রতনা ইসলাম বলেন, ‘গত ঈদও ঘরে কাটাতে হয়েছে। এবার সবার জন্য কেনাকাটা করে কুমিল্লায় শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ঈদ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যাওয়া নিয়ে সংশয় থাকায় আগেভাগে কেনাকাটা করিনি। শেষ পর্যন্ত যাওয়া হচ্ছে না। তাই এখন ছেলে ও ছেলের বাবার জন্য পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি।’

এদিকে ঈদবাজারে ক্রেতা বাড়ায় ব্যবসায়ীরা খুশি হলেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই ছিল না অধিকাংশ মার্কেট ও দোকানে। অনেক মার্কেটের প্রবেশদ্বারে স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে তোড়জোড় দেখা গেলেও মার্কেটের ভিতরে আর তা দেখা যায়নি। অনেক ক্রেতার মুখে ছিল না মাস্ক। আবার মাস্ক থাকলেও তা ছিল শুধু নিয়ম রক্ষার। শারীরিক দূরত্ব মানতে দেখা যায়নি প্রায় সব মার্কেটে। আবার কোনো দোকানের গেটে টুল বসিয়ে স্যানিটাইজার রাখা হলেও তা ব্যবহার করতে দেখা যায়নি ক্রেতাদের। মিরপুর-১ নম্বরের কো-অপারেটিভ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কিছুক্ষণ পরপরই মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। তবে মার্কেটের অনেক দোকানে ক্রেতাদের গায়ে গা লাগিয়ে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। মাস্কও দেখা যায়নি অনেকের মুখে। এ ব্যাপারে মার্কেটটির দোকান মালিক সমিতির নেতা হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মার্কেটে ঢোকার প্রতিটি গেটে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজারও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কেউ মার্কেটে ঢুকে মাস্ক খুলে ফেললে আমাদের সদস্যরা তাদের সতর্ক করছেন। তবে দোকানে ভিড় কমাতে আমরা দোকান মালিকদের বারবার সতর্ক করছি।’ এ ব্যাপারে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন-ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আমরা মার্কেট বন্ধ করে দিচ্ছি। চাঁদরাতেও শপিং সেন্টার বন্ধ হতে পারে।’

মূল্যছাড়ের ছড়াছড়ি : ক্রেতা টানতে রাজধানীর পোশাকের দোকানগুলোয় চলছে মূল্যছাড়ের প্রতিযোগিতা। কেউ একটা কিনলে একটা ফ্রি, আবার কেউ দিয়েছে বিভিন্ন অঙ্কের মূল্যছাড়। আবার মোবাইল ব্যাংকিং ও বিভিন্ন কার্ডের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধেও ছাড় পাচ্ছেন ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউনের কারণে কয়েকদিন দোকান বন্ধ ছিল। এরপর দোকান খুললেও গণপরিবহন না চলায় ক্রেতা তেমন ছিল না। গণপরিবহন চালু হওয়ার পাশাপাশি ঈদের সময় ঘনিয়ে আসায় ক্রেতা আসতে শুরু করেছে। ঈদে বিক্রির জন্য ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকার পণ্য কিনেছে। বিক্রি করতে না পারলে টাকাগুলো অলস বসে থাকবে। কর্মচারীর বেতন, দোকান খরচ উঠবে না। তাই মূল্যছাড় দিয়ে হলেও সবাই চাইছে বেশি বিক্রি করতে। ঈদবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব পোশাকের দোকানেই লাগানো হয়েছে মূল্যছাড়ের পোস্টার। মিরপুরে ফ্যাশন হাউস ‘জেন্টেল পার্ক’ পাঁচটি পণ্য কিনলে ৩০ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছে। মিরপুর ২ নম্বরের ‘রঙজয়ী বুটিক হাউস’-এর ব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম জানান, তারা পাঞ্জাবির ওপর ৫০ আর আনস্টিচ থ্রি পিসে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছেন। মিরপুর ২ নম্বরের ‘আঙিনা মেগা মল’-এ সব পণ্যের ওপর রয়েছে ২০ শতাংশ মূল্যছাড়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দোকান খরচ তুলে সামান্য লাভ পেলেই তারা পোশাক বিক্রি করে দিচ্ছেন।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি