নাসায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে প্রথম বাঙালি নারী

মফিজুল ইসলাম ২৩ জুলাই,২০২০ ৩৭৫ বার দেখা হয়েছে লাইক ১০ কমেন্ট ৫.০০ ()

বাংলাদেশ ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি দেন সবাই বুকে স্বপ্ন নিয়ে। কারও সেই স্বপ্ন পূর্ণতা পায়, কারও অধরাই থেকে যায়। মাহজাবিন হক ২০০৯ সালে বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথম আমেরিকায় এসেছিলেন। অধ্যবসায় ও কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে তিনি স্বপ্নকে বাস্তবরূপ দিয়েছেন। নিয়োগ পেয়েছেন ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (নাসা) সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। তিনি গত বছর [২০১৯] মিশিগানের ওয়েইন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

ওয়েন স্টেট ইউনিভার্সিটিতে তাঁর সময়কালে মাহজাবিন নাসার দুটি বিভাগে ইন্টার্ন বা শিক্ষানবিশ ছিলেন। তিনি প্রথমে টেক্সাসের হিউস্টনে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে ডেটা বিশ্লেষক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। পরে তিনি মিশন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রটিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তাঁর ইন্টার্নশিপ শুরু করেছিলেন। তিনি কেন্দ্রে প্রোগ্রামিং, সফটওয়্যার ডিজাইন, পরীক্ষা এবং রক্ষণাবেক্ষণে কাজ করেছিলেন। উভয় পদে চার মাসের ইন্টার্নশিপ তাঁকে একটি আকর্ষণীয় কাজের শুরু এবং কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করেছে। 


মাহজাবিন বলেন, ‘নাসায় কাজ করতে হলে আপনাকে সব্যসাচী হতে হবে। আপনার নেতৃত্ব দানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং পাঠ্যক্রমের বাইরের বিভিন্ন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি অনেক সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। আমি বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএ) সভাপতি ছিলাম। বিএসএর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচের কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছি। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্পিউটিং মেশিনারির নারী কাউন্সিলের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ছিলাম।

নাসা মানে শুধু নভোযাত্রীই না। আপাতদৃষ্টিতে যা অসম্ভব মনে হয়, সব বাধা ভেঙে তা অর্জন করতে নাসায় বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে প্রকৌশলী, আইটি স্পেশালিস্ট, মানবসম্পদ স্পেশালিস্ট, হিসাবরক্ষক, লেখক ও অনেক ধরনের মানুষ একসঙ্গে কাজ করেন।

অল্প বয়স থেকেই মাহজাবিন নাসার হয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি তার সাফল্যের সর্বোচ্চ কৃতিত্ব দেন তাঁর মা ফেরদৌসী চৌধুরীকে, যিনি সব সময় তাঁকে উৎসাহিত করেছিলেন। ছোটবেলা থেকেই আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসায় কাজ করার স্বপ্ন ছিল মাহজাবিনের। শৈশবে শুনেছিলেন, নাসার মহাকাশযান অ্যাপোলো-১১–এর চন্দ্রাভিযানের গল্প। সেখান থেকেই নাসায় কাজ করার অনুপ্রেরণা পান তিনি। গত বছরের [২০১৯] শুরুর দিকে নাসায় দ্বিতীয় দফায় ইন্টার্নশিপ শেষ করেন বাংলাদেশের মাহজাবিন। এই সময়েই কাকতালীয়ভাবে অ্যাপোলো-১১ –এর চাঁদে অবতরণের ৫০ বছর পূর্তি হয়।

মাহজাবিন বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে তাঁর সহপাঠী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে  বাংলাদেশ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএসএ) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রথমে তিনি ছিলেন সংগঠনের সেক্রেটারি এবং তারপরেই তাকে প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

মাহজাবিন বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের বলব, কোনো ভয় ছাড়াই স্বপ্নের পেছনে ছুটতে হবে। এখানে ব্যর্থ হওয়া স্বাভাবিক। আমিও অনেকবার ব্যর্থ হয়েছি, কিন্তু তা আমাকে স্বপ্নের পেছনে ছুটতে এবং আরও কঠোর পরিশ্রম থেকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। আপনি পরিশ্রম করলে ও নিজের প্রতি সৎ থাকলে স্বপ্ন সত্যি হবে।

চিত্রাঙ্কন ও ডিজাইনিংয়ে দক্ষ মাহজাবিন বাবা–মায়ের সঙ্গে আমেরিকায় আসলেও পেশাগত কারণে বাবা এনামুল হক বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তারা সিলেট নগরের কাজীটুলার হক ভবনের স্থায়ী বাসিন্দা। তাদের গ্রামের বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার আমুড়া ইউনিয়নের কদমরসুল গ্রামে। তিনি মা ও ভাইয়ের সঙ্গে মিশিগানে থাকেন।

©Prothom Alo

মতামত দিন
সাম্প্রতিক মন্তব্য
মো মারুফুল হক
১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০৯:০৭ পূর্বাহ্ণ

লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ শুভকামনা। আমার এ পাক্ষিকের কনটেন্ট দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।


মোঃ রওশন জামিল
২৭ জুলাই, ২০২০ ১১:০৬ অপরাহ্ণ

পূর্ণ রেটিংসহ শুভ কামনা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। সুস্থ্য থাকুন।


মোঃ শফিকুল ইসলাম
২৩ জুলাই, ২০২০ ১০:২৩ অপরাহ্ণ

পূর্ণ রেটিং সহ শুভকামনা ও অভিনন্দন । আমার আপলোডকৃত কন্টেন্ট দেখে লাইক ও রেটিংসহ মূল্যবান মতামত প্রদানের অনুরোধ রইল।


মফিজুল ইসলাম
২৬ জুলাই, ২০২০ ১১:১৪ অপরাহ্ণ

অসংখ্য ধন্যবাদ


আব্দুল্লাহ আত তারিক
২৩ জুলাই, ২০২০ ০২:৪৮ অপরাহ্ণ

ঘরে থাকুন, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন । আপনি ভালো থাকলে ভালো থাকবে দেশ । চমৎকার নির্মাণের জন্য লাইক, কমেন্ট ও পূর্ণ রেটিংসহ শুভেচ্ছা ও ভালবাসা রইল । আমার কনটেন্ট দেখে লাইক, রেটিং সহ মতামত প্রদানের জন্য বিনীত অনুরোধ রইল।


মফিজুল ইসলাম
২৬ জুলাই, ২০২০ ১১:১৪ অপরাহ্ণ

অসংখ্য ধন্যবাদ


বিশ্ব নাথ দাস
২৩ জুলাই, ২০২০ ১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ

সুন্দর ও শ্রেণি উপযোগী কন্টেন্ট আপলোড করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। লাইক ও পূর্ন রেটিংসহ শুভকামনা রইল। আমার তৈরীকৃত এ পাক্ষিকের উদ্ভাবনের গল্প দেখে আপনার সুচিন্তিত মতামত সহ আমার মেয়ে বিজয়ার স্পোকেন ইংলিশ ক্লাশগুলো দেখে বিজয়ার ইউটিউব চ্যানেলটি Bijoya Dot Net সাবস্ক্রাইব করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। ইউটিউব লিংক-https://youtu.be/svmW_wd1Ls8


মফিজুল ইসলাম
২৬ জুলাই, ২০২০ ১১:১৪ অপরাহ্ণ

অসংখ্য ধন্যবাদ


আবু হোসাইন মোঃ আসাদুল ইসলাম
২৩ জুলাই, ২০২০ ০৯:৪১ পূর্বাহ্ণ

লাইক ও পূর্ণরেটিংসহ ধন্যবাদ ও শুভকামনা। আমার এ পাক্ষিকের ৩৬তম আপলোডকৃত ৫ম শ্রেণির আয়ত, নির্দেশনামুলক চিত্র অঙ্কন (পৃষ্টা-১০১) কনটেন্ট দেখে মূল্যবান লাইক, রেটিং ও মতামত দানের জন্য বিনীত অনুরোধ রইল।


মফিজুল ইসলাম
২৬ জুলাই, ২০২০ ১১:১৪ অপরাহ্ণ

অসংখ্য ধন্যবাদ