নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা

আজকের শিশু আগামী দিনের নাগরিক। শিশুর জন্য জন্মের ৬ মাস পযর্ন্ত মায়ের দুধই যথেষ্ট এবং ৬ মাস থেকে ২ বছর পযর্ন্ত মায়ের দুধের পাশাপাশি আথির্ক সামথর্্য অনুযায়ী অধিক পুষ্টিকর পরিপূরক খাবার দিতে হবে। সেই সঙ্গে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত পরিবেশে খাদ্য পরিবেশন করা হয়। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশু, মা ও বৃদ্ধরা পরিবারের জন্য অথৈর্নতিক ও মানসিক বিপযর্য় ডেকে আনে। শিশু মৃত্যুর কারণ হিসেবে পেটের অসুখ, হাম, নিউমোনিয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুর মধ্যে দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি না ঘটার কারণে আত্মকেন্দ্রিকতা, অবসাদ, ব্যক্তিত্বহীনতা দেখা যায় এবং মেধাশক্তি বিকশিত হতে পারে না। ফলে এসব ছেলেমেয়ে অলস ও উদাসীন, পরনিভর্র নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে।
সঠিক রান্নার পদ্ধতি, নিদির্ষ্ট সময়ে খাওয়া ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা সবই স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকে প্রভাবিত করে। মারাত্মক পুষ্টিহীন শিশুদের শুধু ডাল, আলু, সবুজ তেল দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাইয়ে অতি অল্পসময়ের মধ্যে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো সম্ভব। শিশুর পুষ্টির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ন্ত ও কৈশোর বয়সের ছেলে-মেয়েদের পুষ্টির দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। শারীরিক, মানসিক, সামাজিক সব ক্ষেত্রেই পরিবতর্ন চ‚ড়ান্ত। তাই পুষ্টির চাহিদাও এ সময়ের পরিবতের্নর ওপর নিভর্রশীল। এ বয়সে মেয়েদের অপুষ্টি বেশি দেখা যায়। কিশোর-কিশোরীদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও ক্যালোরির চাহিদা পূরণ করতে হয়। পরিমিত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, বিশুদ্ধ পানি, নিয়মিত শারীরিক শ্রম, বিশ্রাম, খেলাধুলা ইত্যাদি বিষয়ের ওপরও নজর দিতে হবে।
মায়ের পুষ্টি শিশুর তুষ্টি। অথার্ৎ সুস্থ ও স্বাস্থ্যবতী মা-ই কেবলমাত্র স্বাস্থ্যবান সন্তানের জন্ম দিতে পারে। পুষ্টিহীন মায়ের সন্তানের জন্মকালীন ওজন কম এবং অসুস্থ, হাবাগোবা, রুগ্ণ হয়ে জন্মায়। পরে নানা রোগে ভোগে। প্রসূতি মায়েদেরও নানা রকম জটিলতা দেখা যায়। গভর্বতী ও স্তন্যদাত্রী অবস্থায় মায়েদের খাবারের প্রয়োজন সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি থাকে। এ সময় প্রয়োজন অনুযায়ী ফলিক অ্যাসিড, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম ও আয়রন, জিংকসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। অনেক সময় পুষ্টি সম্পকের্ ধারণা না থাকার ফলে পুষ্টির অভাবে নিজের চাহিদার ঘাটতির সঙ্গে সন্তানও পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের ঘাটতি নিয়ে জন্মায়। মাকে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, বিভিন্ন রঙিন শাকসবজি, ফল, টকজাতীয় ফল, পানি ও পানিজাতীয় খাবার প্রয়োজন অনুযায়ী খেতে হবে। তা ছাড়া এ সময় চিন্তামুক্ত ও আনন্দভাব নিয়ে থাকতে হবে। অনেক সময় কুসংস্কার ও ভ্রান্ত ধারণা মায়ের অপুষ্টির কারণ হয়ে দঁাড়ায়।
অন্যদিকে বৃদ্ধ বয়সেও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পুষ্টির চাহিদা রয়েছে। বয়স বাড়লে খাবারের চাহিদা, হৃৎপিÐের কাযর্ক্ষমতা, পরিপাকতন্ত্রের কাযর্ক্ষমতা, চেনতন্ত্রের কাযর্ক্ষমতা কমে যায়। রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়। দঁাত-হাড়ের সমস্যা ও বাত-ব্যাধি দেখা দেয়। এ বয়সে সাদা আটা, চাল, চিনি ময়দা ইত্যাদি খাবার কম খেতে হবে। তেল, চবির্, লবণ, মিষ্টি ক্যাফেন সমৃদ্ধ খাবারও কম খেতে হবে। এ সময়ে পানি ও পানিজাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। হজমে সহায়ক, কোষ্ঠকাঠিন্যরোধক, বাত ও ওজন নিয়ন্ত্রক খাবার খেতে হবে। লাল আটা, বিভিন্ন অঁাশজাতীয় শাক-সবজি, ফল, চবির্হীন মাছ-মাংস ইত্যাদি খাবার খেতে হবে। প্রয়াজনে নিয়মিত হঁাটতে হবে। না হলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, বাত, চোখের রোগ ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। বয়স চল্লিশের পর থেকে ডিমের কুসুম, ঘি, মাখন, অতিরিক্ত চবির্যুক্ত মাছ, মাংস, শকর্রাজাতীয় খাওয়া কমাতে হবে। বৃদ্ধবয়সে ক্যালসিয়াম ও লৌহের অভাব বেশি দেখা যায়। সর তুলে দুধ, দুধের তৈরি খাবার, পনির, পায়েস ইত্যাদি খাওয়া যায়। পুষ্টির সমস্যার জন্য অজ্ঞতা ও অসেচতনতাও দায়ী। বাজারের টিন ও প্যাকেটজাত খাবার থেকে বাড়িতে তৈরি খাবার অনেক বেশি পুষ্টিকর। যে দেশের জনগণের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির অবস্থা যত ভালো, সে দেশ তত বেশি উন্নত। সুষম পুষ্টিকর খাবারই সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারে।
বতর্মানে শিক্ষার হার বৃদ্ধির ফলে গ্রাম পযাের্য়র জনগণও অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হয়েছে। সেই সাথে আথর্-সামাজিক অবস্থার উন্নতির ফলে গ্রামে টেলিভিশনের প্রাপ্যতা অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। একটা সময় রেডিও ছিল গ্রামের মানুষের তথ্য প্রাপ্তির সবচেয়ে সহজ মাধ্যম। রেডিও শুধুমাত্র শ্রবনযোগ্য একটি যোগাযোগের মাধ্যম। সেই বিবেচনায় টেলিভিশন অধিকতর প্রভাবশালী একটি গণমাধ্যম কারণ এতে একই সাথে শোনা ও দেখা যায়। তাই টেলিভিশনে দেখানো একটি তথ্যেও প্রভাব মানুষের ওপর বেশি পড়ে। আর দৈনিক পত্রিকা সৃষ্টিলগ্ন থেকেই তথ্য প্রদানের একটি বিশ্বাসযোগ্য ও গুরুত্বপূণর্ মাধ্যম হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছে। যেহেতু বাংলাদেশ এখন খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূণর্ তাই আমাদের এখন পুষ্টিতে স্বয়ংসম্পূণর্তার দিকে বিশেষ বিবেচনা দেয়া উচিত।
সরকার সুষম খাবার, খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ে যে জোর দিয়েছে তা বাস্তবায়ন সম্ভব একমাত্র সাধারণ জনগণকে সচেতন করার মাধ্যমে। জাতীয় গণমাধ্যমগুলো সাধারণ জনগণের মধ্যে পুষ্টি বিষয়ক এই তথ্যসমূহ যথাযথ প্রচারের মাধ্যমে সঠিক যোগাযোগের একটি সেতুবন্ধন তৈরিতে গুরুত্বপূণর্ ভ‚মিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।

সাম্প্রতিক মন্তব্য


মো আব্দুল খালেক
শ্রেণি উপযোগী কন্টেন্ট তৈরী করে বাতায়ন কে সমৃদ্ধ করার জন্য ধন্যবাদ। পূর্ণ রেটিং ও লাইকসহ শুভকামনা। সেই সাথে আমার কন্টেন্ট দেখে মতামত ও রেটিং প্রদানের অনুরোধ রইল।

মোঃ আব্দুর রউফ
তথ্য সমৃদ্ধ লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শুভ কামনা রইলো।

মোসাঃশারমিন আক্তার
লাইক ও পূর্ণরেটিংসহ শুভকামনা ও অভিনন্দন। আমার কনটেন্ট দেখে আপনার মূল্যবান মতামত, রেটিং ও লাইক প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।

মাহবুবুল আলম (তোহা)
Best wishes sir, please visit https://www.teachers.gov.bd/content/details/777229https://www.teachers.gov.bd/content/details/777153

অচিন্ত্য কুমার মন্ডল
শুভকামনা রইলো এবং সেই সাথে পূর্ণ রেটিং । আপনার তৈরি কন্টেন্ট আমার দৃষ্টিতে সেরার তালিকা ভুক্ত। সে জন্য আপনাকে একটু সহযোগিতা করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। সেই সাথে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমার এ পাক্ষিকের কন্টেন্ট ও ব্লগ দেখার ও রেটিং সহ মতামত প্রদানের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। ধন্যবাদ https://www.teachers.gov.bd/content/details/777226 https://www.teachers.gov.bd/blog-details/583138

আব্দুল্লাহ আত তারিক
শুভ সকাল, আপনার দিনটি শুভ হোক । অনিন্দ্যসুন্দর নির্মাণশৈলী। পূর্ণ রেটিং ও লাইকসহ শুভকামনা ও অভিনন্দন। । আমার বাতায়ন বাড়ী আমন্ত্রণ রইল। এই পাক্ষিকের কনটেন্ট "মংড়ুর পথে" দেখে সুচিন্তিত মতামত প্রত্যাশা করছি । ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন। নিরাপদে থাকুন।


মোঃ রুকুনুজ্জামান
পূর্ণ রেটিংসহ শুভকামনা ও অভিনন্দন। আমার আপলোডকৃত ভিডিও দেখে পূর্ণ রেটিংসহ মতামত আশা করছি। লিংক - https://www.teachers.gov.bd/content/details/580132 https://www.teachers.gov.bd/content/details/681252 সেই সাথে আমার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্কাইব করার অনুরোধ রইল। ইউটিউব চ্যানেল লিংক - https://www.youtube.com/watch?v=7RDtTVO4azw&t=13s ধন্যবাদান্তে _ মোঃ রুকুনুজ্জামান, ট্রেড-ইন্সট্রাক্টর (ইলেকট্রিক্যাল), সিংগারডাবড়ীহাট বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, রাজারহাট, কুড়িগ্রাম। ICT4E জেলা এ্যাম্বাসেডর, কুড়িগ্রাম। সেরা কনটেন্ট নির্মাতা ০৪/১০/২০১৯। মোবাইলঃ ০১৭৩৬-০০০২২১।

অচিন্ত্য কুমার মন্ডল
শুভকামনা রইলো এবং সেই সাথে পূর্ণ রেটিং । আপনার তৈরি কন্টেন্ট আমার দৃষ্টিতে সেরার তালিকা ভুক্ত। সে জন্য আপনাকে একটু সহযোগিতা করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। সেই সাথে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমার এ পাক্ষিকের কন্টেন্ট ও ব্লগ দেখার ও রেটিং সহ মতামত প্রদানের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। ধন্যবাদ https://www.teachers.gov.bd/content/details/777226 https://www.teachers.gov.bd/blog-details/583138

দিলারা খানম
চমৎকার কনটেন্ট আপলোড এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। লাইক ও পূর্ণ রেটিং সহ শুভকামনা রইল।



সুমন আহমদ
লাইক ও রেটিং সহ শুভ কামনা রইলো। আমার প্রোফাইলে আপনাকে স্বাগতম।


মোঃ মেহেদুল ইসলাম
লাইক ও রেটিং সহ শুভ কামনা রইলো। আমার এ পাক্ষিকের কন্টেন্ট গুলোতে আপনার মন্তব্য ও রেটিং প্রত্যাশা করি। সুস্থ্য থাকুন, ভালো থাকুন।

গোলাম ফারুক
বাতায়নের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।চমৎকার নির্মানের জন্য লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ শুভকামনা ।আমার কন্টেন্ট দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও রেটিং প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। বাতায়ন লিঙ্ক https://www.teachers.gov.bd/profile/glm.farukict






মতামত দিন