মহান আল্লাহ বিনা মূল্যে অফুরন্ত অক্সিজেন দেন

আব্দুল মাজিদ ৩০ জানুয়ারি,২০২৩ ৪২ বার দেখা হয়েছে লাইক কমেন্ট ৫.০০ ()

বিনা মূল্যে অফুরন্ত অক্সিজেন দেন মহান আল্লাহ । চারদিকে বাড়ছে অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। বর্তমানে অক্সিজেন সিলিন্ডার এ দেশের সবচেয়ে প্রার্থিত ও দুর্লভ জিনিসগুলোর মধ্যে একটি।  প্রিয়জনদের বাঁচানোর প্রয়োজনে অনেক মানুষ এখন হন্যে হয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারের খোঁজ করছে। সিলিন্ডার বাসায় বা হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। মহামারিতে মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে যে প্রতিদিন তারা মহান আল্লাহর কত অমূল্য নিয়ামত ভোগ করে।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। আল্লাহ তো অবশ্যই ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১৮)

মানুষের অস্তিত্বই মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। তিনি মানুষের পার্থিব জীবনের প্রয়োজনীয় উপকরণ সহজসাধ্য করে দিয়েছেন। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহ তাদের জীবন-জীবিকার পথ সুগম করেছেন। চাষাবাদের জন্য জমিন উর্বর করেছেন। বাতাস, ছায়া ও অক্সিজেনের জন্য বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন। প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ গড়ে ৫৫০ লিটার বা ১৯ কিউবিক ফুট বিশুদ্ধ অক্সিজেন গ্রহণ করে। (হেলথ ডট হাউ স্টাফ ওয়ার্কস ডটকম)

যার জন্য কাউকে কোনো দিন কোনো অর্থ গুনতে হয় না। ধনী-গরিব সবাই একইভাবে এই নিয়ামত ভোগ করে। অথচ করোনা আক্রান্ত হয়ে বা অন্য কোনো কারণে যদি কাউকে কৃত্রিমভাবে অক্সিজেন গ্রহণ করতে হয়, তাহলে বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী ১.৪ কিউবিক মিটারের একটি সিলিন্ডার কিনতে গুনতে হচ্ছে ৪৭ হাজার টাকা পর্যন্ত। যার মধ্য থেকে খালি সিলিন্ডারের দাম বাবদ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বাদ দিলেও শুধু ১.৪ কিউবিক অক্সিজেনের দাম দাঁড়ায় ২২ থেকে ২৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ দুই লাখ ৭১ হাজার থেকে তিন লাখ ৩৯ হাজার টাকার অক্সিজেন বিনা মূল্যে গ্রহণ করে। সুবহানাল্লাহ।

অক্সিজেন মহান আল্লাহর নিয়ামত। মানুষের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন, খাবার, ওষুধ সরবরাহের জন্য তিনি গাছ সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি তোমাদের জন্য সবুজ গাছ থেকে আগুন উৎপাদন করেন, ফলে তোমরা তা থেকে আগুন প্রজ্বলিত করে থাকো।’ (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৮০)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা যে আগুন প্রজ্বলিত করো সে ব্যাপারে আমাকে বলো, তোমরাই কি এর গাছ সৃষ্টি করো, নাকি আমরা সৃষ্টি করি?’ (সুরা : ওয়াকিয়া, আয়াত : ৭১-৭২)

উল্লেখ্য, আগুন কখনো একা জ্বলতে পারে না। জ্বলতে হলে বাতাসের দরকার হয়। বাতাসে নানা ধরনের গ্যাস থাকে। এর মধ্যে একটি গ্যাসের নাম অক্সিজেন। আগুন অক্সিজেন গ্যাসের সাহায্য নিয়ে জ্বলে ওঠে। অক্সিজেন গ্যাস নিজে জ্বলে না, কিন্তু অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে।

মহান আল্লাহ যখন ইউনুস (আ.)-কে মাছের পেট থেকে মুক্তি দিলেন, তখন তাঁর প্রয়োজনীয় খাদ্য ও অক্সিজেনের জন্য তরুলতাহীন ভূমিতেই একটি লতাবিশিষ্ট গাছের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। কারণ দীর্ঘদিন মাছের পেটে অবস্থান করার কারণে তিনি বেশ অসুস্থ ছিলেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর এক বড় আকারের মাছ তাঁকে গিলে ফেলল, আর তিনি ছিলেন ধিকৃত। অতঃপর তিনি যদি আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণাকারীদের অন্তর্ভুক্ত না হতেন, তাহলে তাঁকে উত্থানের দিন পর্যন্ত (কিয়ামত পর্যন্ত) থাকতে হতো তার (মাছের) পেটে। অতঃপর ইউনুসকে আমরা নিক্ষেপ করলাম এক তৃণহীন প্রান্তরে এবং তিনি ছিলেন অসুস্থ। আর আমি তাঁর ওপর ইয়াকতিন প্রজাতির এক গাছ উদ্গত করলাম...।’ (সুরা : সফফাত, আয়াত : ১৪২-১৪৬)

ইয়াকতিন আরবি ভাষায় এমন ধরনের গাছকে বলা হয়, যা কোনো গুঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে থাকে না। বরং লতার মতো ছড়িয়ে যেতে থাকে। যেমনলাউ, তরমুজ, শসা ইত্যাদি।

অনেক তাফসিরবিদদের মতে, এটি ছিল লাউগাছ। রাসুল (সা.) নিজেও লাউ খেতে পছন্দ করতেন। মোটকথা, সেখানে অলৌকিকভাবে এমন একটি লতাবিশিষ্ট বা লতানো গাছ উৎপন্ন করা হয়েছিল, যার পাতাগুলো ইউনুস (আ.)-কে ছায়া ও অক্সিজেন দিচ্ছিল এবং ফলগুলো একই সঙ্গে তাঁর জন্য খাদ্য সরবরাহ করছিল এবং পানিরও জোগান দিচ্ছিল।

এভাবেই মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের অসংখ্য নিয়ামতে আবৃত করে রাখেন, যা স্বাভাবিক অবস্থায় তারা কোনো দিন উপলব্ধিই করে না। এ কারণেই রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা পাঁচটি অবস্থায় পতিত হওয়ার আগে পাঁচটি জিনিসকে মূল্য দাও। ১) বৃদ্ধ হওয়ার আগে যৌবনকে। ২) রোগ আক্রমণ করার আগে সুস্থতাকে। ৩) কর্মব্যস্ততার আগে অবসর সময়কে। ৪) মৃত্যু আসার আগে জীবনকে। ৫) দরিদ্রতা আসার আগে সচ্ছলতাকে।’ (মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস : ৭৯১৬)

অর্থাৎ জীবনের সুস্থতা, অবসর, যৌবন ও সচ্ছলতাকে সঠিক নিয়মে কাজে লাগাতে হবে। এগুলো আল্লাহর অমূল্য নিয়ামত, তবে মানুষ সঠিক সময়ে এগুলোর মূল্যায়ন করে না। এত এত নিয়ামত পেয়েও মহান আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করে না। পরে যখন হারিয়ে যায়, তখন আর কিছুই করার থাকে না।

তাই আমাদের উচিত, সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর প্রতিটি নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা। তাঁর নির্দেশিত পথে জীবনকে পরিচালিত করা। মহান আল্লাহ সবাইকে তাঁর শুকরিয়া জ্ঞাপনকারী অনুগত বান্দা হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

মতামত দিন
সাম্প্রতিক মন্তব্য
রুমানা আফরোজ
৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:৪২ অপরাহ্ণ

🌷🌷🌷 লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ আপনার জন্য শুভকামনা। শিক্ষক বাতায়নে এ পাক্ষিকে আমার আপলোডকৃত ১২৩ তম কনটেন্ট ও ব্লগ দেখে আপনার মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ প্রত্যাশা করছি। আমার কন্টেন্ট লিঙ্কঃ https://www.teachers.gov.bd/content/details/1375930


ফিরোজ আহমেদ
৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ১০:৩০ অপরাহ্ণ

লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ শুভকামনা ও ধন্যবাদ। আমার আপলোডকৃত এ পাক্ষিকের আজকের সমাবেশ ভিডিও সম্পর্কিত কনটেন্টটি, দেখে লাইক, রেটিংসহ ও আপনার সু-চিন্তিত মতামত দেয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল । কনটেন্টটির লিং-https://www.teachers.gov.bd/content/details/1376772


শেখ মোহাম্মদ আজিজুল হক
৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৯:২৫ অপরাহ্ণ

লাইক ও পূর্ণ রেটিংসহ আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।


মোঃ শফিকুল ইসলাম
৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৮:৫৯ অপরাহ্ণ

পূর্ণ রেটিংসহ আপনার জন্য শুভকামনা ও অভিনন্দন। আমার ৮৩তম কনটেন্ট দেখে আপনার মূল্যবান মতামত, রেটিং ও লাইক প্রদান করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।


তন্ময় কুমার মণ্ডল
৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০৮:০২ অপরাহ্ণ

লাইক ও রেটিংসহ আপনার জন্য শুভকামনা। বেশ প্রাণময় কর্ম-তৎপরতা, আপনার উজ্জ্বল ভবিষৎ কামনা করছি। উপস্থাপন অসাধারণ ও চমৎকার। সামনে এগিয়ে যান, চলার পথ সুগম হোক এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমার প্রোফাইল দর্শন করে কন্টেন্ট ও ব্লগে লাইক রেটিং দেওয়ার অনুরোধ রইল। আপনার মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য চির কৃতজ্ঞ থাকব।