ব্লেন্ডেড লার্নিং মূলত একটি হাইব্রিড টিচিং মেথড তবে বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য ব্লেন্ডেড লার্নিং পদ্ধতিতে পড়াশোনা এখন আর শুধু বিকল্প কিছু নয় বরং এটি একটি প্রয়োজনীয়তা।

ব্লেন্ডেড লার্নিং নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য |
ব্লেন্ডেড লার্নিং মূলত একটি হাইব্রিড টিচিং
মেথড তবে বর্তমানে বাংলাদেশের
জন্য ব্লেন্ডেড লার্নিং পদ্ধতিতে
পড়াশোনা এখন আর শুধু বিকল্প কিছু নয়
বরং এটি একটি প্রয়োজনীয়তা। ব্লেন্ডেড
লার্নিং গত দু বছরে আমরা শিখেছি
কীভাবে প্রতিকূল পরিবেশেও শিক্ষার্থীদের
পাঠদান অব্যহত রাখা যায়। আর তাই এখন আমাদের ডিজিটাল দক্ষতা, শিক্ষাগত
উদ্ভাবন, মূল্যায়ন কৌশল, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল
পর্যবেক্ষণ এবং জবাবদিহিতা ইত্যাদির দিকে মনোনিবেশ করতে হবে এবং ধীরে ধীরে
প্রাতিষ্ঠানিক নীতি এবং চর্চায় সেগুলো যোগ করতে হবে যাতে করে ভবিষ্যতে কোনো দুর্যোগকালীন সময়ে
আমাদের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সবকিছু বন্ধ করে বসে থাকতে না হয়।
|
|
প্রশ্ন
ও উত্তর |
||
করোনা মহামারীকালীন সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থা
চলমান রাখার অভিজ্ঞতার আলোকে শিক্ষকরা বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্লেন্ডেড
শিক্ষায় রুপান্তর করতে কি কি কৌশল/পদক্ষেপ নিতে পারে?
|
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইন্টারনেট
ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের বিষয়টি
ছিল একেবারেই নতুন বিষয়। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠকার্যক্রমের যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে
তাতে করে এই সময়ে এসে নিঃসন্দেহে বলা যায় ব্লেন্ডেড শিক্ষার
ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এর অগ্রযাত্রা
অনেক দূর এগিয়েছে।
করোনা মহামারীকালীন সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থা
চলমান রাখার অভিজ্ঞতার আলোকে শিক্ষকরা বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে ব্লেন্ডেড
শিক্ষায় রুপান্তর করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করতে পারেন যেমনঃ-
১) শিক্ষার্থীর শিখন স্থায়ী ও ফলপ্রসু করার জন্য অনলাইন ও অফলাইনের সংমিশ্রন ঘটিয়ে শ্রেণিতে পাঠদান। ২) আধুনিক শিক্ষা উপকরন যেমনঃ ই-বুক,
মোবাইল, ট্যাব, ইন্টারনেট, ডিজিটাল কন্টেন্ট,
স্মার্টবোর্ড, ল্যাপটপ, স্পীকার, মাল্টিমিডিয়া ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে
শ্রেণি কর্যক্রমকে আনন্দদায়ক ও ফলপ্রসু করা। ৩) শ্রেণিকক্ষে সরাসরি পাঠদান কমিয়ে প্রতিদিন অন্তত ১টা পাঠ জুম, গুগল মিটের মাধ্যমে নেওয়া , যাতে করে সময় ও অর্থ সাশ্রয়
হয়। ৪) প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপ ও পেইজের মাধ্যমে লাইভ কিংবা রেকর্ড ক্লাশ প্রচার করা, যা শিক্ষার্থীর শিখন ঘাটতি দূরীকরণে সহায়তা করবে। ৫) শ্রেণি কার্যক্রমের বাইরে নির্দিষ্ট সময়ে অনলাইন ফ্লাটফর্ম ব্যবহার করে পাঠদান কিংবা মূল্যায়নের
মাধ্যমে শিখন ঘাটতি দূর করা । ৬) পাঠকার্যক্রমের সময় শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের শিক্ষামূলক বিভিন্ন
অনলাইন প্লাটফর্ম যেমন-মুক্তপাঠ, শিক্ষক বাতায়ন ইত্যাদির
সাথে পরিচয় করিয়ে দেবার মাধ্যমে তাদের জ্ঞানকে আরো সমৃদ্ধ করতে পারেন।
মুলত এভাবেই অনলাইন এবং
অফলাইনের সংমিশ্রণে পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষকরা বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে
ব্লেন্ডেড শিক্ষায় রুপান্তর করতে পারেন।
|
|
ব্লেন্ডেড
শিক্ষার কৌশলসমূহ বাস্তবায়নে শিক্ষকদের কি/কোন ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন? |
প্রত্যেক মানুষের শেখার ধরন
আলাদা । আবার প্রত্যেক শিক্ষকের শেখানোর কৌশল
ও এক নয়। কেউ শুনে শিখে, কেউ
দেখে শেখে, কেউ লিখে শেখে আবার কাউকে বহুবার
বহু কসরত করেও শেখানো যায় না। তবে ব্লেন্ডেড লার্নিং মূলত সব ধরণের মানুষকে স্বাধীনভাবে নিজের ইচ্ছেমত লেখাপড়া করাকেই সমর্থন
দেয়। এবারে আলোচনা করবো ব্লেন্ডেড শিক্ষার জন্য উপরোক্ত কৌশলসমূহ বাস্তবায়নে শিক্ষকদের যে সকল সহযোগিতা প্রয়োজন ১) গতানুগতিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এবং শিক্ষাপদ্ধতি,
শিক্ষাবিজ্ঞান, শিক্ষাক্রম ও শিখন-শেখানো
কৌশলগুলোতে যে পরিবর্তন এসেছে তার সাথে শিক্ষকদের যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে; ২) শিক্ষককদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও একুশ শতকের দক্ষতাগুলোর অর্জন কৌশল ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে
প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে; ৩) শিক্ষকদের টিচিং ম্যাটেরিয়াল সংগ্রহ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তা পাঠদানে প্রস্তুত করার
ক্যাপাসিটি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে; ৪) নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা এবং উচ্চগতির নেটওয়ার্ক সার্ভিস প্রদান করতে
হবে। ৫) প্রয়োজনীয় ডিভাইসের সুবিধা দেওয়া অর্থাৎ কৌশল বাস্থবায়নে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সামগ্রীগুলো শিক্ষকদের প্রদান করতে হবে । তাছাড়া প্রযুক্তি ব্যবহার
করে শিক্ষার্থী মূল্যায়ন কত সহজভাবে করা যায় সে সম্পর্কে পর্যাপ্ত দেশি বিদেশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে
হবে;
এই
পদক্ষেপগুলোর যথাযথ বাস্থবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে ব্লেন্ডেড
শিক্ষায় বিপ্লব ঘটবে এবং অভুতপূর্ব সফলতা আসবে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ।
|
|

মতামত দিন