আদি নিবাসঃ তুর্কি। তুর্কি থেকে এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশে গাছটি বিস্তার লাভ করে। সারা পৃথিবীতে এর ৪২টি প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে বাংলাদেশে দেখতে পাওয়া যায় প্রায় ১২টি প্রজাতি।
মাকাল একটি লতানো বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। মাকাল শব্দটি বাংলা প্রবাদে বাজে অর্থে ব্যবহৃত হলেও এর প্রাচীন নাম ছিল মহাকাল যা ভেষজ গুণে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই নামটি বিকৃত হয়ে কালে কালে 'মাকাল' নামে বাংলায় স্থান হয়েছে।৷
চৈত্র বৈশাখে মাকাল গাছে সাদা ধবধবে ফুল ধরে। শ্রাবণ-ভাদ্রে মাকাল ফল পাকে। তখন মনকাড়া এই ফলটিকে আপেলের মতো দেখা যায়। গাছে ধরা অবস্থায় মাকাল ফলের মতো সুন্দর ফল সত্যি খুব কম দেখা যায়, তবে ভেতরটা খুবই কদর্য। এটি জঙ্গল বা বাড়ির বড় বড় গাছকে আশ্রায় করে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। মাকাল গাছ লম্বায় ৩০ থেক ৪০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর পাতায় থাকে অনেকগুলো খাঁজ। মাকাল ফল কাঁচা অবস্থায় গাঢ় সবুজ, কিছুদিন পর হলুদ ও পাকলে লাল বর্ণ ধারণ করে।
মাকাল ফল নিয়ে বৃহত্তর ময়মনসিংহে নানা ধরনের প্রবাদ আছে। এরকম এটি প্রবাদ হচ্ছে:- এক সুন্দরী গৃহবধূ রাতের অন্ধকারে শাশুড়িকে বিষ প্রয়োগে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ওই বিষ তাকেও খেতে হয়। বিষক্রিয়ায় দুজনই মারা যায়। মৃত্যুুর আগে শাশুড়ি পুত্রবধূকে অভিশাপ দেয়। ওই অভিশাপেই গৃহবধূ মাকাল ফলে পরিণত হয়। যার বাইরের রূপই সুন্দর, কিন্তু ভেতরটা কালো।
মাকাল ফলের বীচি ও আঁশ শুকিয়ে গুড়ো করে পানিতে দ্রবীভূত করে ফসলে প্রয়োগ করা যায়। এই দ্রবণ ফসলের পোকামাকড়, ইঁদুর ও রোগ-বালাই দমনে বিষ হিসেবে কাজ করে। এর বিষ ফসলের জন্য ক্ষতিকর নয়।