Loading..

ব্লগ

রিসেট

৩০ জুন, ২০২৪ ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ

চুরি যাওয়া ক্যামেরা,বাঘশুমারির ক্যামেরা চুরি।

খালচুরি, পুকুরচুরি, নদীচুরি—এমন অনেক রকম চুরির কথা আমরা শুনেছি। কিন্তু বাঘশুমারির ক্যামেরা চুরির কথা শুনিনি। চুরির ইতিহাসে ঘটনাটি অভিনব। অবশ্য এতে খুব বেশি অবাক হওয়ার কোনো কারণ নেই। কথায় আছে, চুরিবিদ্যা বড় বিদ্যা। এই চুরিবিদ্যা দশ মহাবিদ্যার অন্তর্গত প্রধান এক বৃত্তি। যদিও ধর্মগ্রন্থে চৌর্যকর্ম বা চুরিকে নিষিদ্ধ কর্ম হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। কিন্তু চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনি। 

চুরি বা চৌর্যবৃত্তি অত্যন্ত প্রাচীন পেশা। ঋগ্বেদে চোরদের কথা উল্লেখ আছে, বাইবেলেও আছে। যে সময় ঋগ্বেদ রচিত হয়েছিল তখন প্রধান ক্রাইম ছিল চুরি। তখনকার সমাজে প্রধান সম্পত্তি ছিল গরু। ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলের ১০৮ সূক্তে রয়েছে এরকম এক গল্প—বিদেশি একদল ডাকাত বা বেনে, যাদের নাম ‘পণি’, তারা লুকিয়ে এসে দেবতাদের গরু চুরি করে চম্পট দেয়। দেবতারা তাদের হারানো গরুর খোঁজ পেতে নিয়োগ করেছিল কুক্কুরী সরমাকে। এই সরমা থেকেই পরবর্তী কালে ‘সারমেয়’ শব্দটার উৎপত্তি। যাহোক, সরমার দেওয়া খবরের সুবাদে দেবতারা তাদের হূত সম্পদ পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছিলেন। জাতক-মালা বা অন্যান্য সংস্কৃত সাহিত্যেও উল্লেখ রয়েছে চৌর্যবৃত্তির। বেদের কাল থেকে আজ পর্যন্ত চলে আসা এই পেশার মানুষকে ভয়ে ও শ্রদ্ধায় কত নামই দিয়েছে তা বলা মুশকিল, তার মধ্যে কিছু শ্রুতিমধুরও, যেমন—নিশি-কুটুম্ব বা স্কন্দোপজীবী।

প্রশ্ন উঠতে পারে চোর কি সবাই হতে পারে? না পারে না। ভালো চোর হতে গেলে যে বিস্তর গুণাগুণের অধিকারী হওয়া আবশ্যক তার বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে মৃচ্ছকটিক নাটকে। সেখানে কীর্তিমান চোর স্বগতোক্তি করেছে :‘আমি বিড়ালের ন্যায় নিঃশব্দে গমন করতে পারি। মৃগের ন্যায় দ্রুতবেগে দৌড়াইতে পারি। শ্যেন পক্ষীর ন্যায় সহসা গ্রাহ্য বস্তু ধরিতে ও খণ্ড খণ্ড করিতে পারি। কুক্কুরের ন্যায় নিদ্রিত ও জাগরিত ব্যক্তির বল পরীক্ষা করিতে পারি। সর্পের ন্যায় বক্ষোপরিও গমন করিতে পারি। এবং আমি নানাবিধ রূপ ধারণে ও বিবিধ বেশ বিন্যাসে ঐন্দ্রজালিকের সদৃশ, সর্বদেশীয় ভাষার উচ্চারণে দক্ষ, এবং স্থলপথে ঘোটকের ও জলপথে নৌকার তুল্য।’

সংগৃহীত 

আরো দেখুন