প্রজেক্টর হলো এক ইলেকট্রো-অপটিকাল যন্ত্র যা দিয়ে ভিডিও, ছবি ও বিভিন্ন তথ্য বড় স্ক্রিনে করে দেখা যায়। এটি একটি আউটপুট ডিভাইস যা একটি কম্পিউটার বা ব্লু-রে প্লেয়ার থেকে তৈরি ছবি নেয় এবং প্রজেকশনের মাধ্যমে স্ক্রীন, প্রাচীর বা যেকোনো পৃষ্ঠে তা প্রদর্শন করে । এর ব্যবহার আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ক্রমশই বেড়েই চলছে। বিভিন্ন সেমিনার, সভা, ক্লাসরুম, ট্রেইনিং, ওয়ার্কশপ ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রোজেক্টরের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। যে কোন ধরনের প্রোজেক্টরের দাম জেনে নিতে পারবেন বিডিস্টল.কম থেকে।
প্রজেক্টরের কাজ:
প্রজেক্টরের প্রধান কাজ হচ্ছে কম্পিউটারের ডেটা বহুগুন বড় করে প্রর্দশন করা বা একসাথে বহু সংখ্যক মানুষের সামনে বড় করে ডেটা প্রর্দশন করা। এছাড়াও ভিডিও টেপ প্লেয়ার বা ডিজিটাল ভিডিও ডিস্ক প্লেয়ার থেকে চলমান ইমেজ দেখানোর কাজ করে প্রজেক্টর। একটি প্রজেকশন স্ক্রিন প্রজেক্টরের মাধ্যমে তৈরি চিত্রগুলি উপস্থাপন করতে ব্যবহৃত হয় যা জীবন্ত-আকারের চিত্র সরবরাহ করে। এ কারণে সিনেমা হলে প্রজেক্টর বেশি ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন রেজুলেশনের প্রোজেক্টর পাওয়া যায়।সেগুলো হলো - XGA (1024 x 768),WXGA (1280 x 800), HD (1920 x 1080) এবং (4096 x 2160) । তবে এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল HD রেজুলেশন। প্রজেক্টর কয়েক ইঞ্চি লম্বা এবং প্রায় এক ফুট চওড়া হয়। এগুলো বহনযোগ্য বা ফ্রিস্ট্যান্ডিং হয়ে থাকে এবং সিলিংয়ে মাউন্ট করা যায়।একটি প্রজেক্টর সাধারণত একটি টোস্টার (টোস্ট মেকার) আকারের এবং ওজন খুব কম হয়ে থাকে। কিছু প্রজেক্টর ওয়াই-ফাই এবং ব্লুটুথ সংযোগ সমর্থন করে। বিভিন্ন ধরনের পোর্ট যেমন HDMI ইত্যাদি সংযোগ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রজেক্টরের প্রকারভেদ:
প্রজেক্টর প্রধানত তিন ধরনের আছে।
১.ক্যাথোড-রে টিউব (সিআরটি) প্রজেক্টর
২.লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে (LCD) প্রজেক্টর
৩.ডিজিটাল লাইট প্রসেসিং (DLP) প্রজেক্টর
প্রজেক্টরের ব্যবহার:
আলোর ব্যবহারে ছবি-সিনেমা তৈরি ও প্রজেক্ট করা হয়। বিভিন্ন প্রজেক্টরে বিভিন্ন আলোর উৎস ব্যবহার করা হয়। পুরানো প্রজেক্টরে ল্যাম্প বাল্ব ব্যবহার করা হয়।যেসব কাজে প্রজেক্টর ব্যবহৃত হয় তা নিম্নরূপ:
• গ্রাহকদের বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য বেশিরভাগ ব্যবসায়ে প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়। রেস্তোরাঁর মেনু, খবর, ক্যালেন্ডার এবং অন্যান্য তথ্য ডিজিটাল সাইনবোর্ডে দেখানো হয়ে থাকে।
• শ্রেণীকক্ষে শিশুদের শেখানোর জন্য প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়। এখানে ডায়াগ্রামের মাধ্যমে, চার্ট বা অন্যান্য উপাদান প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়। ভিডিও বা ফটো প্রজেক্টরের সাহায্যে আরও উপভোগ্য হয়ে ওঠে এবং বাচ্চারা মজার সাথে সহজেই পড়া শিখতে পারে।
• আর্ট প্রজেকশনের জন্যও প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়।
• অফিসের মিটিং বা সম্মেলনের সময় প্রজেক্টর ব্যবহার করা হয়। প্রজেক্টর কোম্পানির কর্মীদের সাথে তথ্য, ধারণা এবং পরিকল্পনা ইত্যাদি শেয়ার করতে সাহায্য করে।
• বাড়িতে বিনোদনের জন্য ও প্রজেক্টর ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলো টিভির পরিবর্তে ব্যবহার করা যেতে পারে।এর মাধ্যমে সিনেমার মতো বড় পর্দায় টিভি সিরিয়াল ও গেম উপভোগ করা যায়।
• বর্তমান সময়ের বেশিরভাগ প্রজেক্টরগুলো সব রকম ইলেক্ট্রিক ডিভাইসের সাহায্যে ব্যবহার করা যায় যেমন ল্যাপটপ, কম্পিউটার, টিভি এবং মোবাইল ফোন থেকে প্রজেক্টর ব্যবহার করা যায়।আবার পেনড্রাইভ, কার্ড রিডার, সরাসরি ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের সঙ্গে তার দিয়ে সংযোগ দেওয়া যায়।
প্রজেক্টরের সুবিধা ও অসুবিধা:
সুবিধা:
• একটি প্রজেক্টর আপনাকে হোম থিয়েটার সিস্টেমের মাধ্যমে যেকোনো সিনেমা দেখার সুবিধা দেয়।
• প্রজেক্টরের স্ক্রীনকে নিজের ইচ্ছা মতো বড় বা ছোট যেকোনো আকারে সামঞ্জস্য করা যায়।
• প্রজেক্টর বড় ইমেজ প্রদর্শন করে। যা দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যায়। এতে চোখের কোনো ক্ষতি হয় না।
• ওজন কম হওয়ায় প্রজেক্টর যেকোনো জায়গায় সহজেই বহনযোগ্য।
• প্রজেক্টর আনবক্স এবং সেটআপ করা সহজ।
• প্রজেক্টরের আরেকটি সুবিধা হল এটি দিয়ে পর্দার উপর প্রতিবিম্ব ফেলে ভিডিও দেখা যায় আবার ঘরের দেয়ালে প্রতিবিম্ব ফেলেও দেখা যায়। সেক্ষেত্রে দেয়ালের রঙ সাদা, অফ হোয়াইট, ক্রিম রঙের হলেই হয়।
• অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে প্রজেক্টর কিনতে পাওয়া যায়।একটি টিভির তুলনায় কম মূল্যেও প্রজেক্টর কেনা যায়।
• সাধারণত সব প্রজেক্টরে এক বছরের ওয়ারেন্টি থাকে।
অসুবিধা:
• প্রজেক্টর শুধুমাত্র কম আলোর জায়গায় ভালো কাজ করতে সক্ষম।তাই এজন্য অন্ধকার ঘর প্রয়োজন।
• হোম থিয়েটার প্রজেক্টরের রক্ষণাবেক্ষণ টিভির তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে।
• প্রজেক্টরের জন্য আলাদা স্পিকার কিনতে হয়। কারণ প্রজেক্টরের অডিও খুব কম থাকে।
• প্রজেক্টরের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় যেমন :পরিষ্কার করা এবং যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন।
৩৪
৬৫ মন্তব্য