
সহকারী অধ্যাপক

১২ জুন, ২০২৫ ০৮:৩২ পূর্বাহ্ণ
সহকারী অধ্যাপক
ঈদুল আজ্জাহার তাৎপর্য
ভূমিকা:
ইসলাম ধর্মে দুইটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব রয়েছে—ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজ্জাহা।
ঈদুল আজ্জাহা ‘কুরবানির ঈদ’ নামেও পরিচিত। এটি জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পালিত হয় এবং
বিশ্ব মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিবস। এই দিনটি মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির
জন্য ত্যাগ ও কুরবানির মহিমায় উজ্জ্বল।
ঐতিহাসিক
পটভূমি:
ঈদুল আজ্জাহার মূল ইতিহাস জড়িয়ে আছে হজরত ইব্রাহিম (আঃ) ও তাঁর
পুত্র হজরত ইসমাইল (আঃ)-এর সঙ্গে। মহান আল্লাহর নির্দেশে ইব্রাহিম (আঃ) স্বপ্নে
প্রাপ্ত বার্তার প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও আনুগত্য প্রকাশ করে তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল
(আঃ)-কে কুরবানি করতে উদ্যত হন। আল্লাহ তাঁদের এই নিষ্কলুষ ত্যাগ ও আনুগত্যের
পরীক্ষাকে কবুল করে স্বর্গ থেকে একটি দুম্বা পাঠিয়ে ইসমাইল (আঃ)-এর পরিবর্তে তা
কুরবানি করতে বলেন। এই ঘটনা থেকেই শুরু হয় ঈদুল আজ্জাহার রীতি।
ধর্মীয়
তাৎপর্য:
ঈদুল আজ্জাহা মূলত ত্যাগ ও আত্মসমর্পণের প্রতীক। এটি মুসলমানদের
শিক্ষা দেয় যে, আল্লাহর আদেশের প্রতি আনুগত্যই মানুষের
সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। এই দিনে ধনী মুসলমানরা পশু কুরবানি করে এবং এর মাংস
আত্মীয়স্বজন, গরীব-দুঃখী ও নিজ পরিবারে বণ্টন করে থাকে।
এতে সমাজে সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং সাম্যবাদের চর্চা
হয়।
সামাজিক
ও নৈতিক গুরুত্ব:
ঈদুল আজ্জাহা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সমাজে একতা, সহানুভূতি ও সাম্যের বার্তা
পৌঁছে দেয়। ধনী ও দরিদ্র সকলেই ঈদের আনন্দে শামিল হয়। পশু কুরবানির মাধ্যমে আত্মিক
পবিত্রতা অর্জনের সুযোগ হয় এবং অহংকার ও স্বার্থপরতা দূর করার এক অনন্য অনুশীলন
ঘটে।
উপসংহার:
ঈদুল আজ্জাহা আমাদের শেখায় সত্যিকার ঈমান, আত্মত্যাগ, এবং মানবিক মূল্যবোধের চর্চা। এটি
মুসলিম জীবনে গভীর তাৎপর্য বহন করে এবং আমাদের আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও দানের
মানসিকতায় উদ্বুদ্ধ করে। এই দিনটি উদযাপনের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের আত্মা ও সমাজকে
আরও পবিত্র ও মানবিক করে তুলতে পারি।
৫৮
১১৩ মন্তব্য