
সহকারী অধ্যাপক

১২ জুন, ২০২৫ ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ
সহকারী অধ্যাপক
“ ঈদুল আজ্জাহা আমাদের ত্যাগ শিক্ষা দেয়”
ভূমিকা:
ইসলামের দুইটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবের একটি হলো ইদুল আজ্জাহা,
যা কুরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। এই উৎসবের মূল শিক্ষা হলো ত্যাগ ও
আত্মসমর্পণ। মহানবী ইব্রাহিম (আ.)-এর নিঃস্বার্থ আনুগত্য এবং আল্লাহর পথে ত্যাগের
দৃষ্টান্ত আমাদের জীবনে এক অসাধারণ শিক্ষা দিয়ে যায়।
ইদুল
আজ্জাহার পটভূমি:
ইদুল আজ্জাহার ইতিহাস জড়িয়ে আছে হজরত
ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর সঙ্গে। আল্লাহর আদেশে ইব্রাহিম (আ.)
প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কুরবানি দিতে প্রস্তুত হন। এটি ছিলো তাঁদের আনুগত্য ও
ত্যাগের পরীক্ষা। আল্লাহ তাঁদের এ ত্যাগ কবুল করেন এবং ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে
জান্নাত থেকে একটি পশু কুরবানির জন্য পাঠান। সেই ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বে প্রতি
বছর ইদুল আজ্জাহা পালন করা হয়।
ত্যাগের
গুরুত্ব:
ইদুল আজ্জাহা কেবল পশু কুরবানির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি আমাদের আত্মিক ও পার্থিব জীবনে ত্যাগের শিক্ষা দেয়। আল্লাহর
সন্তুষ্টির জন্য ব্যক্তিগত স্বার্থ, লোভ, হিংসা, অহংকার পরিত্যাগ করাও এক ধরনের
কুরবানি। ঈদের এই দিনে ধনী-দরিদ্র সকলেই একত্র হয়ে প্রমাণ করে যে ইসলাম শান্তি,
সহানুভূতি ও সামাজিক সাম্যবাদের ধর্ম।
সমাজে এর
প্রভাব:
ইদুল আজ্জাহা সমাজে সহানুভূতি ও
ভ্রাতৃত্বের বন্ধন দৃঢ় করে। কুরবানির পশুর মাংস আত্মীয়-স্বজন ও গরিব-দুঃখীদের মাঝে
ভাগ করে দেওয়ার মাধ্যমে সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা হয়। এই উদারতা ও সাম্যবোধ সমাজকে
মানবিক ও সংহত করে তোলে।
উপসংহার:
ইদুল আজ্জাহা আমাদের জীবনে গভীর তাৎপর্য বহন করে। এটি শুধু
ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এক শক্তিশালী নৈতিক শিক্ষা
– যেখানে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ দান করতে আমরা প্রস্তুত হই। তাই
ইদুল আজ্জাহার প্রকৃত শিক্ষা কেবল উৎসব পালনে নয়, বরং তা
আমাদের প্রতিদিনের জীবনে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, ত্যাগ ও
মানবতার সেবায় প্রতিফলিত হওয়া উচিত।
৫৮
১১৩ মন্তব্য