উত্তাল পদ্মার তীরে দাঁড়িয়ে জান্নাতুন (৬০) হাত উঁচু করে তাঁদের আগের বাড়ি দেখানোর চেষ্টা করলেন। তিনি বললেন, এখন যেখানে নদীর মাঝখান বলে মনে হচ্ছে, সেখানেই তাঁদের বাড়ি ছিল। নদীর ভাঙনে তাঁরা রাজশাহী শহরের কেশবপুর এলাকায় এসে বাড়ি করেছেন। তবে সময়ের ব্যবধানে তাঁদের বাড়ি আবার নদীর কিনারে এসে ঠেকেছে। সপ্তাহখানেক আগে কেশবপুর এলাকায় পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ব্লকগুলো নিচে নেমে গেছে। এই এলাকায় নদীর পাড় থেকেই মানুষের বসবাস। ব্লকগুলো নিচে নেমে যাওয়ায় এলাকাবাসীর আশঙ্কা, যেকোনো সময় তাঁদের ঘরও নদীতে ভেসে যাবে।মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, ব্লক নেমে যাওয়ার পর নদীর ধারের রাস্তা স্থানীয় লোকজন বাঁশ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডও (পাউবো) ইতিমধ্যে বালুর বস্তা ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এলাকাবাসীর দাবি, স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না করলে বালুর বস্তায় কাজ হবে না।
নদীর তীরেই আলী নেওয়াজের বাড়ি। তাঁর স্ত্রী কহিনুর বেগম (৫০) বললেন, ‘গত বছরই বাঁধের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তখনো শুধু বস্তাই ফেলা হয়েছিল। পানি কমে যাওয়ার কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড আর কাজে হাত দেয়নি। সারাটা বছর গেল, তাঁদের তো কোনো খবর নেই। আবার এখন নাকি বস্তা ফেলবে। বস্তা দিয়ে তো বড় বিপদ ঠেকানো যাবে না।রাজশাহী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘আপাতত বালুর বস্তা ফেলেই সমাধান করতে হবে। ইতিমধ্যে বস্তায় বালু ভরার কাজ শুরু করা হয়েছে। শিগগিরই বস্তা ফেলা হবে। একটি প্রকল্প ছাড়া তো স্থায়ী কাজ করা যায় না। প্রকল্প অনুমোদন হতেও সময় লাগে।’ শফিকুল ইসলাম আরও জানান, বুলনপুর থেকে বাঘা উপজেলা পর্যন্ত পদ্মা নদীর বাঁ তীরের যেসব জায়গায় ব্লক নেমে গেছে, সেই জায়গাগুলোতে স্থায়ী কাজ করার জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরির কাজ করা হয়েছে।