Loading..

মুজিব শতবর্ষ

২৩ জুন, ২০২১ ০২:৩৪ অপরাহ্ণ

আওয়ামীলীগের ৭২ তম প্রতিষ্টা বার্ষিকীতে শেখ হাসিনা। মোঃ মানিক মিয়া,সহকারি শিক্ষক(গণিত)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের লক্ষ্যই হলো দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ এবং বাঙালিদের বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে সকল নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা শত প্রতিকূলতা ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগকে আজ অত্যন্ত মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের লক্ষ্যই হলো দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ এবং বাঙালিদের বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দলের মধ্যে শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো ও গণতন্ত্রের চর্চা অটুট থাকলে কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন।

এ উপলক্ষে তিনি সংগঠনের সকল নেতা-কর্মী, সমর্থক ও শুভার্থীসহ দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করেন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও সাধারণ সম্পাদক সামসুল হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদসহ সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহিদ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের, যাদের আত্মত্যাগ/আত্মোৎসর্গের বিনিময়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি এবং আওয়ামী লীগ হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের গণমানুষের প্রাণের সংগঠন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে স্বৈরাচারী ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে পরাজিত করে সরকার গঠন করে। একই বছরে ১২ নভেম্বর ‘দায়মুক্ত অধ্যাদেশ বাতিল আইন, ১৯৯৬’ সংসদে পাশ করে। এর মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু হয়। আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, দারিদ্র্য দূরীকরণ, অর্থনীতি ও অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করি। আমরা আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করি, পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও গঙ্গা পানি বন্টন চুক্তি সম্পাদন করি এবং ’৯৮-এর মহাদুর্যোগ বন্যা মোকাবিলা করি। ২০০১-২০০৬ বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে দেশ উন্নয়নের সকল মাপকাঠিতেই পশ্চাদপসরণ করে।’

তিনি বলেন, দেশ হয়ে ওঠে - দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়্ন, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের স্বর্গরাজ্য এবং পুনরায় গণতন্ত্রকে বিপন্ন করে। অতঃপর, সকল ষড়যন্ত্রের নাগপাশ ছিন্ন করে আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘দিন বদলের সনদ’ ঘোষণা দিয়ে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে এবং সেই থেকে পরপর তিনদফা নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে। “আমাদের সরকার জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর করেছে। ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে, ফলে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ হয়েছে, বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে বারো বছরে উন্নয়নের সকল সূচকে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতির মানদন্ডে বিশ্বের প্রথম ৫টি দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৪১তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে। মাথাপিছু আয় ২,২২৭ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ‘আমাদের মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছর। ৯৯ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দিচ্ছি। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে এবং কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সড়ক, রেল, বিমান ও নৌ/সমুদ্র যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আধুনিক করেছি। দেশকে আমরা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এ রূপান্তরিত করেছি।”

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ছাড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশিতে স্বার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করেছি। রূপকল্প-২০২১ এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে আমরা ২০২০-২১ সময়ে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপন করছি। ১৭-২৬ মার্চ ২০২১ আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি। সেখানে বিশ্বনেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। মুজিববর্ষে আমরা অঙ্গীকার করেছি কেউ গৃহহীন থাকবে না। শহরের সকল সুযোগ-সুবিধা প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও পৌঁছে দেব। আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক নির্মূলে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি। ২০৩০ সালের মধ্যে ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা- দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ গ্রহণ করেছি।”

 

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি