প্রভাষক
২৪ জুন, ২০২১ ০৭:২২ অপরাহ্ণ
ডিআইজি প্রিজন্স পার্থের জামিন বাতিল চেয়ে আপিল করবে দুদক নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ০৬:২৩ পিএম, ২৪ জুন ২০২১ | আপডেট: ০৬:৩৪ পিএম, ২৪ জুন ২০২১
ডিআইজি প্রিজন্স পার্থের জামিন বাতিল চেয়ে আপিল করবে দুদক
নিজস্ব
প্রতিবেদক প্রকাশিত: ০৬:২৩ পিএম, ২৪ জুন ২০২১ | আপডেট: ০৬:৩৪ পিএম, ২৪ জুন ২০২১
ঘুষ গ্রহণ ও অর্থপাচার
আইনের মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এ বরখাস্ত সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের উপ-মহাপরিদর্শক
(ডিআইজি প্রিজন্স) পার্থ গোপাল বণিকের জামিন মঞ্জুর করে দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল
আবেদন করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আপিলে তার জামিন বাতিল চাইবে দুদক।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুন)
গণমাধ্যমকে এমন তথ্য জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। এর আগে গত ১৭
জুন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেনের ভার্চুয়াল আদালত ১৫ জুলাই
পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর তিনি কারামুক্ত হন।
খুরশীদ আলম খান জানান,
দুদক তার জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রোববারের মধ্যে জামিন
বাতিল চেয়ে আপিল করব। এরপর আপিলটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।
গত বছরের ৪ নভেম্বর তার
বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর ১৫ ডিসেম্বর এ
মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
একই বছরের ২৪ আগস্ট
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ডিআইজি প্রিজন্স
পার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে মোট ১৪ জনকে সাক্ষী করা
হয়েছে।
রাজধানীর নর্থ রোডের
ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় বরখাস্ত ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল
বণিকের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়,
পার্থ গোপাল বণিকের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে
পারেননি। অর্থাৎ তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনকালে ৮০ লাখ টাকা বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ,
দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে উপার্জন করে অর্থপাচারের উদ্দেশ্যে নিজ বাসায়
লুকিয়ে রেখেছেন মর্মে প্রমাণিত হয়।
অভিযোগপত্রে আরও বলা
হয়, ২০১৪ সালে তিনি ৩১ হাজার ২৫০ টাকা বেতন স্কেলে কারা উপ-মহাপরিদর্শক পদে
পদোন্নতি লাভ করেন। তার এই বেতন স্কেলের সঙ্গে এত টাকা অর্থ উপার্জন
অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি তার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তা উত্তোলন করেননি বা তিনি
কখনো এই অর্থ আয়কর বিবরণীতেও প্রদর্শন করেননি, যা দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা, দুর্নীতি
দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫ (২) ধারা
এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
২০১৯ সালের ২৮ জুলাই
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের
পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফের নেতৃত্বে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ গোপাল বণিককে। ঘুষ ও
দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে এদিন বিকেল সাড়ে
৪টার দিকে পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ
করা হয় এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে দুদকের ঢাকা
সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা মো.
সালাউদ্দিন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পরে ২০১৯ সালের ৩০
জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে পার্থ
গোপাল বণিককে গ্রেফতারের দিন থেকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
জানা যায়, সিলেটে
দায়িত্ব পালনের আগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে দায়িত্ব পালন করেন পার্থ গোপাল
বণিক। চট্টগ্রাম কারাগারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ
হিসেবে তাকে এবং চট্টগ্রামের সাবেক সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিককে
জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। তারপরই অভিযানে নামে সংস্থাটি।
টাকা জব্দের পর অভিযানে
নেতৃত্ব দেয়া দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফ বলেছিলেন, ‘তার ঘোষিত আয়কর ফাইলে এ
টাকার ঘোষণা নেই। আমাদের মনে হয়েছে, এই টাকা অবৈধ আয় থেকে অর্জিত।’
সাবেক ডিআইজি পার্থ
দাবি করেছিলেন, ওই ৮০ লাখ টাকা তার বৈধ আয় থেকে অর্জিত। এর মধ্যে ৩০ লাখ টাকা
শাশুড়ি তাকে দিয়েছেন। বাকি ৫০ লাখ টাকা তার সারা জীবনের জমানো।