Loading..

ম্যাগাজিন

২৭ জুলাই, ২০২১ ০২:১০ অপরাহ্ণ

বেগুনের পুষ্টি গুণ

বেগুন ভিটামিন 'এ', 'সি', 'ই' এবং 'কে' সমৃদ্ধ সবজি। ভিটামিন 'এ' চোখের পুষ্টি জোগায়, চোখের যাবতীয় রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। আর ভিটামিন 'সি' ত্বক, চুল, নখকে করে মজবুত। দেহে রক্ত জমাট বাঁধার বিরুদ্ধে কাজ করে ভিটামিন 'ই' ও 'কে'।বেগুনের বৈজ্ঞানিক নাম হল সোলানাম মেলঞ্জেনা (Solanum melongena) ও এটি প্রথম দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়াতে চাষ করা শুরু হয়। বেগুন ভারতবর্ষে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, হাইপারটেনশন, ত্বকে ব্রণর সমস্যা ও চুলের সমস্যার জন্যে দারুন উপকারী বেগুন।


বেগুন একটি বেশ চেনা সবজি যা প্রায় প্রত্যেকের রান্নাঘরেই মজুত থাকে। বেগুনকে আমরা সবজি হিসেবেই জানি, কিন্তু উদ্ভিদ বিদ্যা অনুযায়ী এটি একটি ফল। বাঙালির কাছে বেগুন ভাজা থেকে শুরু করে বেগুনি, বেগুন ভর্তা, পোড়া এই সবই হলো অত্যন্ত প্রিয়। 


বেগুনের বৈজ্ঞানিক নাম হল সোলানাম মেলঞ্জেনা (Solanum melongena) ও এটি প্রথম দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়াতে চাষ করা শুরু হয়। বেগুন ভারতবর্ষে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, হাইপারটেনশন, ত্বকে ব্রণর সমস্যা ও চুলের সমস্যার জন্যে দারুন উপকারী বেগুন।


বেগুনের প্রকাররভেদ:


সারা বিশ্বে প্রায় সাত প্রকারের বেগুন দেখতে পাওয়া যায়। যেমন:


জাপানি বেগুন : বেগুনের মধ্যে সব থেকে সুস্বাদু ও সেরা প্রকার হল জাপানি বেগুন যা আকারে লম্বাটে ও সরু হয়ে থাকে এবং এর রং প্রায় কালচে ও চকচকে হয়। এটি রান্না করার পর একদম নরম ও স্বাদে ভরপুর হয়ে যায় যা মুখে দিলেই গোলে যায়।চীনা বেগুন – এই ধরণের বেগুন মূলত চীন দেশে চাষ করা হয়। এটি অনেকটা জাপানি বেগুনের মতোই খেতে ও দেখতে।  শুধু এটি একটু কম মিষ্টি হয় তবে বেশ রসালো ও নরম হয়ে থাকে। আকারে এটি একটু লম্বাটে হয় ও এর মধ্যে বীজ খুবই কম থাকে।গ্রাফিটি বেগুন – এই ধরণের বেগুনের গায়ে সরু ও লম্বা দাগ থাকে যা একে দেখতে খুব সুন্দর করে তোলে। এর বীজও খুব ছোট হয় ও বিশেষ করে ভর্তা, ভাপা বা রোস্ট করার জন্যে এই বেগুন খুবই ভাল। এমনকি, এর খোসাও ছাড়ানোর প্রয়োজন পড়ে না। এই ধরণের বেগুন পৃথিবীর প্রায় বেশিরভাগ অঞ্চলেই জনপ্রিয়।


বিয়াঙ্কা বেগুন:এটি ইতালির একটি জাত। এই বেগুন আকারে গোলাকৃতি এবং এটি দেখতে হালকা বেগুনি ও সাদা রঙের হয়ে থাকে। এর স্বাদ বেশ মিষ্টি ও নরম এবং বিশেষ করে কোনো গ্রেভি বা তরকারি বানানোর জন্যে এই বেগুন খুবই ভালো ।ট্যাংগো বেগুন – এই বিশেষ ধরণের বেগুনের রং সাদা ও আকারে অনেকটা ডিমের মত হয়ে থাকে। এর খোসা বেশ মোটা হয় কিন্তু ভেতরের অংশ বেশ নরম। গাছ থেকে তোলার পর এটি হলদে রঙের ও শক্ত হয়ে যায়।


স্যান্টানা বেগুন: এই ধরণের বেগুন  ইতালিতে চাষ করা হয়। এটি তুরস্কের একটি জনপ্রিয় খাবার বাবা ঘানুষ (baba ghanoush) এর মূল উপকরণ । এটি বেগুনি রঙের ও আকার সরু প্রকৃতির হয়।  এটি চটজলদি গ্রিল বা রোস্ট করার জন্যে উপযোগী।থাই বেগুন – থাই সবজি হিসেবে প্রচলিত এই বেগুন অনেকটা ছোট আকারের বলের মত দেখতে।  খাওয়ার আগে এর বীজ ছাড়িয়ে নেওয়া খুব প্রয়োজন ও এটির স্বাদ একটু তেতো প্রকৃতির । এই ধরণের বেগুন নানা রঙের হয়ে থাকে কিন্তু সব থেকে জনপ্রিয় হল হালকা সবুজের গায়ে সাদা বা হলদে লম্বা দাগ সমৃদ্ধ থাই বেগুন।


বেগুনের উপকারিতা :


বেগুনকে যতই আমরা সবজি বলে থাকি না কেন, এটি আসলে বৈজ্ঞানিক ভাবে একটি ফল। টমেটো বা আঙুরের মত এটি এক ঝাঁকে চাষ করা হয়ে থাকে। বেগুনের উপকারিতা প্রচুর।


স্বাস্থ্যের জন্য বেগুনের উপকারিতা:


বহু বছর ধরেই খাদ্য তালিকায় বেগুন যোগ করার কথা বলা হয়েছে। এর প্রধান কারণ হল বেগুনের স্বাস্থ্য উপকারিতার জন্য। দেখে নিন কিভাবে বেগুন স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারিতা প্রদান করে।


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ


বেগুন খুব সহজ ভাবেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে বলে জানা যায় । এর প্রধান কারণ হল বেগুনে রয়েছে উচ্চ পরিমানে ফাইবার ও নিম্ন পরিমানে কার্বোহাইড্রেট যা রক্তে শর্করার মাত্রা কম করতে সাহায্য করে ও বেশি পরিমানে গ্লুকোজ শোষণ করতে দেয় না (১)। বিশেষ করে যাদের টাইপ ২- ডায়াবেটিস আছে, তাদের জন্যে বেগুন খুবই উপকারী। কিন্তু এক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন।


হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে


হার্টের জন্যে বেগুনের উপকারিতা অনেক কারণ এটি কোলেস্টরলের মাত্রা ও উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এমনকি, পটাশিয়াম থাকার ফলে এটি আপনার শরীরকে বেশ আর্দ্র রাখে । ফলে হার্টের অসুখ রোধ করে বলে জানা গেছে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না যেন।


স্মৃতি শক্তি প্রখর করে


স্মৃতি শক্তি দীর্ঘকাল প্রখর রাখতে আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই যোগ করুন বেগুন। বেগুনে রয়েছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট যা মস্তিষ্কের কোষগুলিকে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচায় এবং এর ফলে আপনার স্মৃতি মজবুত হয় । কিন্তু মনে রাখবেন, বেগুনের এই গুনাগুন কিন্তু এর খোসার মধ্যেই থাকে। তাই খোসা সমেতই বেগুন খাওয়ার অভ্যেস করুন।


ধূমপান ছাড়াতে


ধূমপানের নেশা থাকলে তা ছাড়ানো বেশ কঠিন হয়ে ওঠে। তাহলে বেগুন কিভাবে এক্ষেত্রে সাহায্য করে? বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, বেগুনে অন্যান্য কোনো সবজির তুলনায় সব থেকে বেশি নিকোটিন রয়েছে । বেগুনে উপস্থিত এই নিকোটিনিক অ্যাসিড আপনার ধূমপান ছাড়ানোর কষ্টকে অনায়াসে লাঘব করতে পারে ও এর সাহায্যে আপনি ধীরে ধীরে ধূমপান ত্যাগ করতে পারেন।


হজম ক্ষমতা বাড়ায়


আপনার কি ঘন ঘন হজমের সমস্যা লেগে থাকে? তাহলে আপনি বেগুন খাওয়ার অভ্যেস করুন। কারণ, বেগুনে রয়েছে উচ্চ পরিমানে ফাইবার যা পায়খানা পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ও হজম শক্তি বাড়ায় । বেগুন অন্ত্রের কার্যকারিতা সঠিকভাবে হতে ও গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রোধ করে। ফলে আপনার শরীরে সঠিক পুষ্টি প্রবেশ করতে পারে।


ওজন কমায়


আপনি কি ওজন কমানোর চেষ্টায় আছেন তাহলে খাদ্য তালিকায় আজ থেকেই যোগ করুন বেগুন।  বেগুনে উচ্চ পরিমানে জল থাকার ফলে এর ক্যালোরি খুবই কম মাত্র ৩৫ ক্যালোরি  । তাই এটি খেলে কিছুতেই ওজন বৃদ্ধি হয় না। এছাড়া বেগুনে উচ্চ পরিমানে থাকা ফাইবারও ওজন কমানোর প্রধান কারণ।


ক্যান্সার রোধ করে   


 বেগুনে উপস্থিত অ্যান্থোসায়ানিন শরীরে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষগুলির কাজে বাধা সৃষ্টি করে ও তাই বলা যেতে পারে বেগুন কিছু মাত্রায় এই মরণ ব্যাধিকে রোধ করতে সক্ষম। তবে এ ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই প্রয়োজন।


রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়


যদিও বেগুনে ভিটামিন সি এর পরিমান কম, কিন্তু এটি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ  যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। এছাড়া বেগুনে রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান যা সহজে কোনো বাইরের জীবাণুকে শরীরে প্রবেশ করতে দেয়না। এই জন্যেই বেগুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক বলা হয়ে থাকে।


রক্তাল্পতা সারিয়ে তোলে


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনুযায়ী, গত দুই দশক ধরে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে ক্রমশ। । এর প্রধান কারণ হল শরীরে আয়রনের অভাব। এর ফলে মাথা ধরা, বিষন্নতা, দুর্বলতা, মনোযোগের অভাব, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। তাই ডাক্তাররা এই রোগে প্রচুর পরিমানে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খেতে পরামর্শ দেন। বেগুনে প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে ০.২৩ মিলিগ্রাম আয়রন। এছাড়া এতে প্রতি ১০০ গ্রামে ০.১৭৩ মিলিগ্রাম কপারও থাকে যা লোহিত রক্তকণিকা (RBC) গঠনে সাহায্য করে। এই দুটি উপাদানই রক্তে সঠিক পরিমানে লোহিত রক্তকণিকা তৈরীতে সহযোগিতা করে আপনাকে আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে ও হিমোগ্লোবিনের মাত্রাও বাড়িয়ে দেবে।


কোলেস্টেরল কম করে


জানেন কি ওজন কমার সাথে সাথে বেগুন খেলে শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমে যায়? একটি গবেষণায় জানা গেছে, বেগুনের রস নাকি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। 


চটজলদি শক্তি বাড়াতে


অনেক্ষন ব্যায়াম বা জিম করার পর যখন খুব ক্লান্ত লাগে তখন বেগুন সমৃদ্ধ কোনো খাবার খেলে চটজলদি শক্তি পাওয়া যায়। বেগুনে রয়েছে নিয়াসিন (ভিটামিন বি ৩) যা খুব সহজেই জলের সাথে মিশে যায় ও এটি শরীরের প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ভেঙে তা শক্তিতে রূপান্তরিত করে ।


হাড়কে মজবুত করে


বেগুনের সাহায্যে হাড়ের নানা রকমের সমস্যা দূর করা যায় যেমন অস্টিওপোরোসিস, হাড়ের ভঙ্গুরতা ইত্যাদি ।


অনিদ্রা দূর করে


বেগুনে অ্যসিটাইলকোলিন ও ডোপামিন নামক এই দুই নিউরো কেমিক্যাল ট্র্যান্সমিটার ( এগুলি হলো একপ্রকার রাসায়নিক বার্তাবাহক ) রয়েছে । জানা যায় যে, এগুলি মস্তিষ্কের বিকাশের পাশাপাশি উদ্বেগ এবং অনিদ্রার সমস্যা সমাধানে কার্যকরী। তাই বলাই যায় যে, বেগুন অনিদ্রা দূর করতে উপযোগী।


ত্বকের জন্য বেগুন 


বেগুনে রয়েছে নানারকমের পুষ্টিকর উপাদান যা ত্বকের জন্যে খুবই উপকারী। ত্বককে নরম ও মোলায়েম করে তোলা ছাড়াও এটি বয়সের ছাপ দূর করতেও দারুন কার্যকরী।যেমন:


দাগহীন উজ্জ্বল ত্বক


দাগহীন ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে বেগুনের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই।


কেন ও কিভাবে এটি সাহায্য করে?


বেগুনে রয়েছে প্রচুর পরিমানে মিনারেল, ভিটামিন ও ফাইবার যা আপনার ত্বককে ভিতর থেকে পরিষ্কার করে উজ্জ্বল ও দাগ মুক্ত করে তোলে। 


কিভাবে ব্যবহার করবেন?


একটি পাত্রে ৩ চামচ কাঁচা দুধ নিয়ে তাতে একটি বেগুনের টুকরো অনেক্ষন ভিজিয়ে রেখে দিন। তারপর বেগুনের টুকরোটি তুলে সারা মুখে ঘষে ঘষে লাগিয়ে আধ ঘন্টা পর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৪ দিন এটি করলে খুব শীঘ্রই ফল পাবেন।


মোলায়েম ও নরম ত্বক


নরম ও মোলায়েম ত্বকের পাওয়ার জন্যেও বেগুনের উপকারিতা অনেক ।


কেন ও কিভাবে এটি সাহায্য করে?


শীতকালে ত্বক রুক্ষ ও শুস্ক হয়ে ওঠে যার ফলে ত্বকে চুলকানি হতে শুরু করে। বেগুনে রয়েছে উচ্চ পরিমানে জল যা ত্বককে তার প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বক নরম ও মোলায়েম হয়ে ওঠে।


কিভাবে ব্যবহার করবেন?


  •  একটি পাত্রে ৫০ গ্রাম বেগুন টুকরো করে নিয়ে তাতে ২ চামচ অ্যালোভেরা জুস ও ১ চামচ মধু নিন।


  •  সবকটি একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরী করুন।


  •  এরপর মুখে ও ঘাড়ে ভালো করে লাগিয়ে বেশ খানিক্ষণ রেখে দিন।


  • ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে একটি ভেজা তুলো দিয়ে আসতে আসতে ঘষে তুলে ফেলুন।


  • ভালো করে জল দিয়ে ধুয়ে একটি বরফের টুকরো দিয়ে মুখে ঘষুন ও তারপর একটি যেকোনো ক্রিম মেখে নিন।


  • সপ্তাহে দুবার করলে খুব শীঘ্রই ফল পাবেন।


বার্ধক্যের ছাপ কমে


নিজেকে বয়সের ছাপ থেকে মুক্ত করে যৌবনময় ত্বকের অধিকারী হতে চান? তাহলে বেগুন  দিয়ে নিজের ত্বক পরিচর্যা করুন।


কেন ও কিভাবে এটি সাহায্য করে?


বেগুনের খোসায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা বার্ধক্যের ছাপ সহজে ত্বকে পড়তে দেয়না। 


  • বেগুনের খোসা ভালো করে ছাড়িয়ে সেটি মিক্সারে একটু দই ও মধুর সাথে ভালো করে পেস্ট তৈরী করুন।


  • তারপর সেটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রাখুন।


  • শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিন।


  • সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করলে খুব শীঘ্রই ফল পাবেন।


চুলের জন্য বেগুনের উপকারিতা:


স্বাস্থ্য ও ত্বক ছাড়া চুলের জন্যেও দারুন কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে বেগুন। বিস্তারিত ভাবে দেখে নিন কিভাবে বেগুনের উপকারিতা চুলের জন্যে প্রভাব ফেলে:


  • লম্বা ও মজবুত চুলের জন্যে


  • লম্বা ও মজবুত চুলের জন্যে বেগুন দারুন উপকারি।


কেন ও কিভাবে এটি সাহায্য করে?


বেগুনে জলের পরিমান বেশি থাকার ফলে এটি আপনার মাথার স্ক্যাল্পকে পুষ্ট করে তোলে ও গোড়া থেকে চুল মজবুত করতে সাহায্য করে (১৫)।


কিভাবে ব্যবহার করবেন?


এক টুকরো বেগুন হাতে নিয়ে ভাল করে স্ক্যাল্পে ঘষুন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট ঘষার পর উষ্ণ গরম জল ও শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে তাতে কন্ডিশনার লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একবার করে করলে দারুন ফল পাবেন।


কেন ও কিভাবে এটি সাহায্য করে?


বেগুনে রয়েছে উচ্চ পরিমানে জিঙ্ক ও ভিটামিন ই যা স্ক্যাল্পের নানা সমস্যা যেমন খুশকি, চুলকানি, চুল পড়া এইসব সমস্যা এড়াতে সাহায্য করে।


কিভাবে ব্যবহার করবেন?


  • ব্লেন্ডারে একটি বেগুন, ১/২ শসা, ১/২ অ্যাভাকাডো নিয়ে ভালো করে একটি পেস্ট তৈরী করে নিন।


  • তারপর ভালো করে সিঁথি বরাবর সারা চুলে লাগান।


  • এক ঘন্টা রেখে একটি হালকা শ্যাম্পু ও উষ্ণ গরম জল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।


  • সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করলে অসাধারণ ফল পাবেন।


যাদের চুল খুব রুক্ষ ও শুষ্ক তাদের প্রয়োজন প্রতিদিন বেগুন খাওয়া। নিয়মিত বেগুন খেলে চুল মোলায়েম ও ঝলমলে হয়ে ওঠে। এর প্রধান কারণ হল বেগুনে থাকা ভিটামিন সি ও প্রোটিন। 


বেগুনের পুষ্টিগত মান:


বেগুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা এতখানি থাকার প্রধান কারণ হল এর পুষ্টিগত মান। বেগুনের পুষ্টিগত মান প্রচুর একথা আগেই বলা হয়েছে। বিস্তারিত ভাবে এর পুষ্টিগত মান জানতে হলে একটি গোটা বেগুনের মাপ করে আমরা সঠিক পুষ্টির শতাংশ জানতে পারবো। বেগুনের মূল পুষ্টি হল ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়াম। এতে রয়েছে প্রতি ১০০ গ্রামে ৯ গ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.২৩ মিলিগ্রাম আয়রন, ০.৯৮ গ্রাম প্রোটিন, ৩ গ্র্রাম ফাইবার, ০.২৩২ মিলিগ্রাম ম্যাঙ্গানিজ, ২২৯ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ০.০৮৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি, ২.২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি ও ১৪ গ্রাম ম্যাগনেসিয়াম।


বেগুনের ব্যবহার :


সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলেই আপনি বেগুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা জানতে পারবেন! তবে, বেগুনের ব্যবহার সম্পর্কে জানার আগে জেনে নিন কিভাবে আপনি বাজারে বেগুন কেনার সময় তা বাছাই করবেন:


  • প্রথমে দেখুন বেগুনটি যেন বেশ ভারী ও শক্ত পোক্ত হয় এবং সেটির গা একেবারে মখমলে থাকে। চেষ্টা করুন কম বীজ সমেত বেগুন কিনতে।


  • বেগুনের গায়ে যেন কোনো কাটা বা ফুটোর দাগ না থাকে।


  •  কেনার সময় একটু টিপে দেখে নিন যেন সেটি নরম বা অতিরিক্ত পাকা না হয়। এই ধরণের বেগুন তাড়াতাড়ি পচে যায়।


  •  বেগুনের বোঁটাটিও ভালো করে দেখে নিন। যদি তাতে বেশি দাগ থাকে, তার মানে হল তাতে বীজ কম রয়েছে।


বেগুন কেনা তো হল, এবার দেখে নিন কিভাবে তা বহুদিন সুরক্ষিত রাখতে পারবেন


  •  বেগুন কেনার কিছুদিনের মধ্যেই তা রান্না করে নেওয়া ভালো, কারণ বেগুন খুব বেশিদিন রাখা যায় না।


  •  কেনার পর সেটি ফ্রিজে রাখুন। তবে মনে রাখবেন বেগুন কিন্তু অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম কোনো অবস্থাই বেশিদিন সহ্য করতে পারেনা।


  •  কাটা বেগুন কখনোই রাখবেন না, কারণ বেগুন কাটার কিছুক্ষন পর থেকেই হাওয়ার সংস্পর্শে এসে কালো হয়ে যায়। বরং গোটা অবস্থায় বেগুনটি একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে মুড়ে ফ্রিজে রাখুন। আবার কিছুদিন পর আবার সেটি খুলে বের করে রেখে বাইরে শুকিয়ে পুনরায় রাখুন।


এবার জানুন কিভাবে আপনি বেগুনের ব্যবহার করবেন


  • বেগুন কাটার সময় একটি স্টিলের ছুড়ি ব্যবহার করুন, কারণ অন্য কোনো ধাতু ব্যবহার করলে সেটি কালো হয়ে যেতে পারে।


  •  বেগুন সবসময় খোসা সমেত খাওয়ার চেষ্টা করুন কারণ খোসার মধ্যেই রয়েছে বেগুনের স্বাস্থ্য উপকারিতা।


  •  বেগুন ভাজা খাওয়ার মজাই আলাদা। তবে তার আগে বেগুনগুলি কেটে তার মধ্যে একটু নুন ও হলুদ ছড়িয়ে আধ ঘন্টা রেখে দিন। এতে বেগুনের জলের পরিমাণটি কমে আসবে ও তাতে তেল কম শোষণ হবে।


  •  নুন দেওয়া হলে বেগুনের মধ্যে যে হালকা তেতো ভাব থাকে সেটিও কমে যায়। তবে কড়াইতে ছাড়ার আগে ভালো করে বেগুনটি চিপে নিন যাতে অতিরিক্ত নুন বেরিয়ে যায়।


  • বেগুন পোড়া বানানোর আগে গোটা বেগুনটির গায়ে ছোট ছোট ফুটো করে নিন। এতে ভালোভাবে বেগুনটি সেদ্ধ হবে ও খাবার সময় নরম থাকবে।


  • বেগুন আপনি নানারকমের তরকারি বা মাছের ঝোলে ব্যবহার করতে পারেন।


বেগুনের ক্ষতিকারক দিক:


বেগুনের উপকারিতা এতখানি হওয়ার সত্বেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ক্ষতিকারক দিকও দেখা যায়।


নিচে বিস্তারিত ভাবে দেওয়া হল বেগুনের অপকারিতা কি কি ক্ষেত্রে দেখা যায়:


১. বেগুন খাওয়ার ফলে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে। তাই আপনার যদি অ্যালার্জির ধাঁচ থাকে, তবে বেগুন এড়িয়ে চলুন ।


২. বেগুন রক্তে উচ্চ রক্তচাপ ( High Blood Pressure) কমাতে সাহায্য করে, তাই যাদের রক্তচাপের ধরণ কমের দিকেই থাকে তাদের এটি এড়িয়ে চলা উচিত ।


তবে যাই হোক না কেন, সাবধানে খেলে বেগুনের উপকারিতা আপনি কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারবেন না। বেগুন আপনার স্বাস্থ্য, ত্বক ও চুলের জন্যে কতখানি উপকারী তা আপনি নিজেই দেখলেন। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই যোগ করুন বেগুন।



আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি