সিনিয়র শিক্ষক
০২ আগস্ট, ২০২১ ০৬:০৪ অপরাহ্ণ
পৃথিবীর বিখ্যাত কিছু বিজ্ঞানীর জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু মজার ঘটনা
পৃথিবীর
বিখ্যাত কিছু বিজ্ঞানীর জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু মজার ঘটনা
মানুষের জীবনে অনেক ঘটনা থাকে,তার
ভেতর কিছু ঘটনা থাকে হাসির,কিছু থাকে কষ্টের আবার এমন অনেক
ঘটনা থাকে যেগুলো অনেক মজার।আর জগত বিখ্যাত বিজ্ঞানিরাও মানুষ ছিলেন।তাদের জীবনটাও
হাসি-কান্না অথবা মজার বাহিরে না।তাদের জিবনেও থাকে কিছু মজার ঘটনা।আমাদের আজকের
আয়োজন পৃথিবী বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবনে ঘটে যাওয়া এমন সব মজার ঘটনা নিয়ে যা
সত্যিই অনেক হাস্যকর।তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক-
ঘটনা –
১ (নিউটন)
এই ঘটনা অনেক অনেক বছর আগের।ইংল্যান্ড এর বুরি মহিলা তার ঘরের জানালা দিয়ে
দেখলেন এক বুড়ো মানুষ পানি দিয়ে বুদবুদ তৈরি করছে।তখন সেই বুড়ী ভাবল এই মানুষটা
হয়তবা পাগল।সে তখন পুলিশ কে খবর দিল।পুলিশ এসে দেখতে পেল সেই পাগল বলা লোকটি আর
কেউ না সয়ং নিউটন।যে তখন বুদবুদের কারনে বুদবুদের গায়ে যে রংধনু সৃষ্টি হয় তার
কারন নিয়ে গবেষণা করছিলেন।এটা নিউটন এর জীবনে ঘটে যাওয়া এক মজার ঘটনা।
ঘটনা –
২ (আইনস্টাইন)
একটি বিষয় হল বিজ্ঞানীদের ভুলোমন। বিজ্ঞানীদের ভুলে যাওয়ার (প্রায়) অসাধারণ
ক্ষমতা অনেক মজার ঘটনার জন্ম দিয়েছে। আইনস্টাইনের ক্ষেত্রে এই ধরণের ঘটনাগুলো
বোধহয় একটু বেশিই ঘটেছে।আইনস্টাইন কোন একটি বিষয় নিয়ে একবার ভাবতে ভাবতে তাঁর
নিজের বাড়ি গেলেন এবং দরজায় কড়া নাড়লেন।ভেতর থেকে আইনস্টাইন এর স্ত্রি জবাব দিলেন
আইনস্টাইন বাসায় নাই।তখন আইনস্টাইন ভাবলেন বাড়ির কর্তা যেহেতু বাড়িতে নেই তাই
এখানে অপেক্ষা করার কোন মানে নাই,এটা ভাবতে ভাবতে তিনি আবার চলে গেলেন।আসলেও কি বিজ্ঞানি
আইনস্টাইন এত ভুলোমনা ছিলেন?সত্যি সত্যি কি আইনস্টাইন তাঁর
চারপাশ সম্পর্কে এত উদাসীন ছিলেন?আপনার কি মনে হয় তা আমাদের
কে কমেন্ট করে জানান।
ঘটনা –
৩ (নিউটন)
জগত বিখ্যাত বিজ্ঞানী নিউটনও কম ভুলোমনা ছিলেন না।একবার তিনি তাঁর এক বন্ধুকে
তাঁর বাসায় নিমন্ত্রন করলেন।এবং স্বভাবতই নিউটন সেটা ভুলে যান এবং টেবিলের খাবার
ঢেকে রেখে বাহিরে চলে যান।এদিকে তাঁর বন্ধু এসে দেখে নিউটন বাসায় নাই।তাঁর বন্ধু
দেখলেন টেবিলের উপরে খাবার এর পাত্রে খাবার ঢাকা।তখন তিনি ভাবলেন এই খাবার গুলো
হয়ত তাঁর বন্ধু নিউটন তাঁর জন্য রেখে বাহিরে গেছে।তখন তিনি সেই খাবার গুলো খেয়ে
নিলেন এবং আগের মত সব কিছু ঢেকে রাখলেন।ইতিমধ্য নিউটন বাসায় ফিরে এসে তাঁর বন্ধুকে
দেখে ভাবলেন সে হয়ত ভুলে তাঁর বন্ধুর বাসায় চলে এসেছে।তখন তিনি খাবার এর পাত্র এর
দিকে নজর দিলেন এবং নিশ্চিত হলেন যে এটা তাঁর বাসা।তখন তিনি খাবার খাওয়ার জন্য
খাবার পাত্র হাতে নিলেন কিন্তু দেখলেন তাতে কোন খাবার নেই।তখন এই জগত বিখ্যাত
বিজ্ঞানী ভাবলেন যে তিনি হয়ত খাবার খেয়েই বাহিরে গিয়েছিলেন।
ঘটনা –
৪ (কার্ল সাগান)
বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী কার্ল সাগান ছোটবেলায় লাইব্রেরীতে গেছেন।
লাইব্রেরীরিয়ানের কাছে তিনি তারার উপরে কোন বই আছে কিনা জানতে চাইলেন।
লাইব্রেরীরিয়ান জিজ্ঞেস করল “তারার বই? সচিত্র?”“অবশ্যই।”
লাইব্রেরীরিয়ান অনেক খুঁজে একটা মোটা বই সাগানকে দিল। সাগান খুশি মনে বাসায়
এসে বই খুললো। তারার বই বটে! হলিউডের চিত্রতারকাদের নিয়ে লেখা বই। আমেরিকার
ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত ব্যক্তি বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন। তিনি শুধু বিজ্ঞানীই নয়
রাজনৈতিক এবং পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম রাজনৈতিক কার্টুনও তিনিই আঁকেন। বেঞ্জামিন
ফ্রাংকলিনের বাসার সামনে সবসময় একটা ঘোড়ার খুর টাঙানো থাকতো। তৎকালীন মানুষের
মধ্যে কুসংস্কার ছিল বাসার সামনে ঘোড়ার খুর টাঙানো থাকলে সকল বালা-মসিবৎ দূর হয়ে
যাবে।
সাংবাদিকরা যখন তাঁকে এব্যাপারে জিজ্ঞেস করল তখন তাঁর সোজাসাপ্টা জবাব, “একটুকরা ঘোড়ার খুর যদি সব
বালা-মসিবৎ দূর করে দেয় তবে ঝুলাতে অসুবিধা কোথায়?”বেঞ্জামিন
ফ্রাংকলিন নিয়মিত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করতেন। বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিনের বন্ধু
ওয়েলস একবার তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “আচ্ছা তুমি এত বড় একজন
বিজ্ঞানী হয়েও এইসব বিশ্বাস করো?” “মনে করলাম তোমার কথাই
ঠিক। ঈশ্বর নেই, পরকাল নেই- সব মিথ্যে। কিন্তু বন্ধু যদি
থাকে?…… তুমি কিন্তু ফেঁসে যাবে- আমি না।
ঘটনা –
৫
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজছে। হিটলারের প্রচণ্ড রাগ ইহুদিদের ওপর।
যেখানে ইহুদি পাচ্ছে ধরে ধরে মেরে ফেলছে হিটলারের নাৎসি বাহিনী। এমনকি নিজ দেশ
জার্মানির বিজ্ঞানীরাও রেহাই পাচ্ছে না হিটলারের হাত থেকে। আলবার্ট আইনস্টাইন
ইহুদি ছিলেন। হিটলারের ভয়ে তিনি পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। যুদ্ধের ডামাডোলে আটকা
পড়েন দুই পদার্থবিজ্ঞানী ম্যাক্স ভন লু ও ম্যাক্স ফ্রাঙ্ক। দুজনই নোবেল পেয়েছেন।
দুজনই ইহুদি। নোবেল দেওয়া হয় সুইডেন থেকে। সুইডেন আবার হিটলারের শত্রু দেশ।
শত্রুদের কাছ থেকে তাঁর দেশের দুই ইহুদি বিজ্ঞানী নোবেল নিয়েছেন! হিটলার সেটা মুখ
বুজে সহ্য করবেন কেন। লু আর ফ্রাঙ্ককে ধরার জন্য কোমর বেঁধে নেমে পড়ল নাৎসি
বাহিনী। লু আর ফ্রাঙ্ক ভাবলেন, ধরা পড়লে নির্ঘাত মরতে হবে। সেই সঙ্গে নোবেল প্রাইজটাও
কেড়ে নিয়ে নষ্ট করে ফেলবে হিটলারের সৈন্যরা। তাঁরা নিজেদের চেয়ে নোবেল প্রাইজ
নিয়েই বেশি চিন্তিত হয়ে পড়লেন। প্যাকেট ভরে মেডেল দুটো পাঠিয়ে দিলেন ডেনমার্কের
কোপেনহেগেনে। সেখানে তাঁদের বন্ধু বিখ্যাত বিজ্ঞানী নিলস বোর বাস করেন।
বোর মেডেল দুটো যত্ন করে লুকিয়ে রাখলেন। কিন্তু বেশি দিন নয়। কারণ, নাৎসি বাহিনী ডেনমার্কেও
হামলা করেছে। যেকোনো সময় বোরের গবেষণাগারেও হামলা চালাতে পারে। তখন মেডেল দুটো
বাঁচানোই মুশকিল হয়ে যাবে। বোর প্রথমে ভাবলেন, মেডেল দুটো
মাটিতে পুঁতে রাখবেন। কিন্তু নাৎসিদের বিশ্বাস নেই। ওরা ঠিক মাটি খুঁড়ে বের করে ফেলবে।
বোরের এক সহকারী ছিলেন। হাঙ্গেরিয়ান রসায়নবিদ জর্জ হাভাসি। তিনি বোরকে বুদ্ধি
দিলেন সোনাগুলো গুলিয়ে তরল করে ফেলতে। যে সে তরলে সোনা গলে না। সোনা গলাতে
লাগে রাজ অম্ল অ্যাকোয়া রেজিয়া। অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যাসিড। বোর আর হাভাসি তখন
নোবেল মেডেল দুটো অ্যাকোয়া রেজিয়ার ভেতর ফেলে গলিয়ে ফেললেন। সোনা আর অ্যাসিড
মিশে তখন হলুদ রঙের এক তরলে পরিণত হয়েছে। বোর সেই হলুদ তরল একটা বোতলে ভরে রেখে
দিলেন আলমারিতে। তারপর কোপেনহেগেন থেকে তাঁরা পালিয়ে বাঁচলেন।
শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে হিটলার হেরে যান। বোর আর হাভাসি আবার কোপেনহেগেনে ফিরে
আসেন। তাঁদের ল্যাবরেটরি লন্ডভন্ড করে রেখে গেছে নাৎসি সৈন্যরা। কিন্তু আলমারির
কোণে সেই হলুদ তরলের বোতল একেবারে অক্ষত! মাথা মোটা নাৎসিরা ওর মর্ম কী বুঝবে!
পরে নিলস বোরের ছেলে অ্যাগেই বোর অ্যাকোয়া রেজিয়া থেকে আবার সোনাগুলো
পুনরুদ্ধার করেন। নিলস বোর সেই সোনা পাঠিয়ে দেন সুইডেনের নোবেল কমিটির কাছে।
নোবেল কমিটি সেই সোনা দিয়ে আবার দুটো মেডেল তৈরি করে তাতে লু ও ফ্রাঙ্কের নাম
লিখে পাঠিয়ে দেয় বোরের কাছে। এভাবেই রক্ষা পায় বিখ্যাত দুই বিজ্ঞানীর নোবেল
প্রাইজ। সুত্রঃ
ইন্টারনেট।
জগত বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবনে ঘটে
যাওয়া কিছু মজার ঘটনা
জগত বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের জীবনে ঘটে
যাওয়া কিছু মজার ঘটনা