Loading..

প্রকাশনা

১৬ আগস্ট, ২০২১ ০৪:২০ অপরাহ্ণ

যে ৫টি কারণে এখনও আপনি সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারেন না

যে ৫টি কারণে এখনও আপনি সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারেন না

১. কোন কাজ করার আগে নিজেকে প্রশ্ন করা

আপনার যেকোনো কাজের সময় নষ্ট করার ক্ষেত্রে প্রথমেই নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে। আপনি বর্তমানে যে কাজটি করছেন কিংবা করবেন সেই কাজটি কি আপনাদের জীবনের ভবিষ্যত আরো ভালো করে তুলবে? যদি এর উত্তর আসে না এবং এটি বরং আপনার জীবনকে আরো খারাপ করে তুলবে তবে সেই কাজটি আপনাকে বন্ধ করে দিতে হবে। কেননা সেই কাজটি দিয়ে যদি আমার ভবিষ্যতে কোন উপকার ই না হয়, তবে আমি সেই কাজটি কেনই বা করব। যেখানে আমাদের প্রত্যেকটা কাজের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ লাভ দেখা উচিত এবং কোন ভাবেই আমাদের অহেতুক সময় নষ্ট করে ভবিষ্যতের কাজকে ফেলে রাখা উচিত নয়।

কিভাবে আপনি আপনার কাজের সময় নির্ধারণ করবেন‍?

আপনি আপনার প্রতিদিনের সময়কে সঠিকভাবে ব্যবহার করার জন্য কিছু করে পরিকল্পনা করে রাখতে পারেন। ‌ যেখানে আপনার মনোবল থাকতে হবে অনেক শক্তিশালী। আপনি চাইলেও যেন আপনার মনোবল থেকে কখনোই ফিরে না জান। চলুন তবে এবার পর্যায়ক্রমে দেখে নেওয়া যাক আপনি কিভাবে আপনার সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাবেন।

২. সকালবেলা ঘুম থেকে উঠার পর পরিকল্পনা

আপনার প্রতিদিনের কাজের সময় নির্ধারণ করার জন্য সকাল বেলা থেকে টাইমিং নির্ধারণ করতে হবে। এবার ধরে নিচ্ছি আপনি সকালবেলা ঘুম থেকে উঠলেন। এবার আমরা প্রতিদিন যে কাজটি করে থাকি তা হচ্ছে, ঘুম থেকে উঠে আমাদের এই স্মার্টফোনটি চেক করা। যেখানে আমরা এটাই বলে থাকি বা এটি মনে মনে পরিকল্পনা করি, শুধু মাত্র ৫ মিনিট দেখেই মোবাইলকে রেখে দেবো। হয়তোবা সারা রাতে কেউ না কেউ আমাকে মেসেজ করেছে কিংবা আমার টিউনে কিরকম Like, Comment পড়েছে।

কিন্তু আমরা যে সময়টি মনে করে আমাদের ফোনটি সে সময় হাতে নিয়েছিলাম, সেখানেই দেখা যায় কখন যে এক ঘন্টা কিংবা দুই ঘন্টা চলে গিয়েছে সেটা আমরা খেয়ালই করিনি। আমরা হয়তোবা মেসেজ চেক করার বদলে চলে গিয়েছি ফেসবুকে কিংবা ইউটিউব এ। এবার সেখানে গিয়ে আমরা হয়তোবা একটি ভিডিও দেখার পর আরো অন্য একটি ভিডিও দেখা শুরু করে দিয়েছি। যেখানে পূর্বের ভিডিও চাইতে পরবর্তী ভিডিও থাকে আরো ইন্টারেস্টিং এবং তথ্যবহুল। আর এভাবে করে আমরা কোন কনটেন্টকে আর মিস করতে চাইনা।

আপনি আপনার কাজ গুলো কে সঠিকভাবে করার জন্য একটি রুটিন তৈরি করে নিতে পারেন। যেখানে আপনার প্রতিদিন-এর রুটিনে একটি নির্দিষ্ট সময় থাকবে যেখানে আপনি ইচ্ছামতো যেকোনো কাজ করবেন। যখন সেই সময় আপনি মোবাইল চালাবেন কিংবা আপনার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিবেন। এভাবে করে আপনি যখন সময়ের দিকে দেখবেন, তখন আপনার মনে হবে এই সময়ে তো আমার অন্য একটি কাজ করার কথা। আর তখনই আপনি সেই কাজটি ফেলে রেখে অন্য একটি কাজ করবেন।

যদিও আমাদের ক্ষেত্রে এই রুটিনটি করা হয় না। রুটিন করলেও আমরা সেই রুটিন টিকে মেনে চলতে পারি না। যেটি আমাদের সবার ক্ষেত্রে দেখা যায়। আমরা হয়তোবা সারা জীবনেও আমাদের রুটিন অনুযায়ী কাজ করতে পারবোনা। কিন্তু আমাদের এটি মাথায় রাখা উচিত আমাদের সময় টি যেন কোন অহেতুক কাজে নষ্ট না হয়।

৩. জীবনের লক্ষ্য কে বাস্তবে রূপান্তরিত করার জন্য পরিশ্রম

অনেকের জীবনে অনেক লক্ষ্য থাকে। কিন্তু সেই লক্ষ্যকে পূরণ করার জন্য যে কাজটি করা দরকার সেই  অনুযায়ী সেই ব্যক্তি কাজ করে না। আর এই জন্যই বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে তার সেই লক্ষ্যটি পূরণ হয়না। তেমনি ভাবে আপনারও কিছু ভবিষ্যৎ স্বপ্ন রয়েছে।

আপনাকে আপনার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য অনুযায়ী প্রথম থেকেই কাজ করতে হবে। যেমন ধরুন, আপনি যদি সারা বছর পড়াশোনা না করে পরীক্ষার আগে আগে পড়াশোনা করেন তবে এটি আপনার জন্য বিপদ। কেননা সারাবছর আপনি পরীক্ষার ব্যাপারে না ভেবে শুধুমাত্র পরীক্ষার আগে আগে পড়াশোনা করলে একেবারে এত পড়া একসাথে পড়তে পারবেন না। আপনি পরীক্ষার আগে আগে যেরকম ভাবে পড়াশোনা করেছেন এভাবে করে আপনি যদি বছরের পুরোটা সময় পড়তেন, তবে আপনি হয়তো বা পরীক্ষায় অনেক ভালো ফলাফল করতেন। আপনি নিজেই একবার ভেবে দেখুন যে, আপনি পরীক্ষার আগে ঠিক একই রকমভাবে পড়েন এবং সারা বছর কিভাবে পড়াশোনা করেন।

যদি আপনি শুরু থেকেই এভাবে করে পড়াশোনা করতেন তবে আপনার পরীক্ষার আগে না পড়লেও চলত। যেখানে আপনি পুরো বছরের মতো স্বাভাবিকভাবে পরীক্ষার আগে পড়লেই হবে। আর এই বিষয়টি আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি সময়ে কাজে লাগে। যেখানে আমাদের লক্ষ্য থাকে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার, কিন্তু এর জন্য দরকার প্রথম থেকেই আমাদের ভালোভাবে পড়াশোনা করা। আর তাহলেই আমাদের লক্ষ্য টি সঠিকভাবে পূরণ হবে।

এভাবে আপনার লক্ষ্য অনুযায়ী প্রতিনিয়ত কাজ করে যেতে হবে। যেখানে আপনার সময় অপচয় করে সেই লক্ষ্য নিয়ে না ভেবে সেই লক্ষ্য পূরণ করার কাজটি করে যেতে হবে। আর তাহলেই বসে বসে অযথা সময় নষ্ট হবে না।

৪. কাজকে কখনো ফেলে না রাখা

আমরা প্রতিদিন একটি করে বাহানা খোঁজি, যেখানে আমরা সেই কাজটি পরের দিন করব বলে পরিকল্পনা করে নেই। আর এভাবে করে দিনের পর দিন যেতেই থাকে এবং আমাদের কাজটিও সেভাবেই চলতে থাকে। এভাবে করে আপনার যখন কোন সময়ে কোন কাজের প্রতি মন বসবে না, অর্থাৎ কোন কাজ করতে গেলে মনে হবে এই কাজটি পরের দিন করব, তবে আপনি কাজটি তখনই শুরু করে দিন। এখানে আপনাকে সেই কাজটি‌ পুরো সময় ধরে করার জন্য ধীর স্থির করতে হবে না। ‌বরং আপনি মনে মনে এটা পরিকল্পনা করবেন, আপনি সেই কাজটি মাত্র কয়েক মিনিট ধরে করবেন।

আপনি যদি ভাবেন যে, কাজটি পরবর্তী দিনে করবেন তবে সেটি ভুল হবে। আপনার যখন মনে হবে এই কাজটি আপনি পরবর্তী দিন থেকে পুরোদমে এবং মনোযোগ দিয়ে শুরু করবেন, তবে আপনার উচিত হবে সেই কাজটি সেই দিন থেকেই শুরু করা। যখন আপনি কোন কাজকে পরের দিন থেকে শুরু করার জন্য প্রতিজ্ঞা করবেন, তার মানে সেই কাজে আপনার দুর্বলতা রয়েছে। আর এজন্যই আপনি প্রতিনিয়ত সেই কাজটি পরের দিন করার জন্য ভাবেন। যেমনভাবে কেউ পড়াশোনা করার কথা ভেবে থাকে।

আপনি যদি এই সময়টুকু আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে কাজ করতে পারেন তবে দেখবেন যে, পরবর্তীতে আপনার সেই কাজটি করার ক্ষেত্রে আর কোন দূর্বলতা থাকবে না। আপনি নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যে একটুও কাজ করলেন এটি আপনার কনফিডেন্স কে আরো অনেকটা বাড়িয়ে তুলবে। আর এভাবে করে আপনি কোন কাজ ফেলে না রেখে সেই কাজটি করার কারণে আপনার অপচয় করা সময় গুলো অনেকটা কাজে লাগবে। যেখানে প্রতিদিন পরিকল্পনা করে থাকি আমরা এই কাজটি পরের দিন করব। সেখানে আমরা যদি কাজটির কিছু অংশ সেইদিনই করে থাকি; তবে এটি হবে আমাদের সময়ের সদ্ব্যবহার করার সামান্যতম হলেও চেষ্টা।

৫. আপনার কাজের পরিধি কিছুটা হলেও বাড়ানো

আপনি যে কাজটি করেন সেটি প্রতিদিন কিছুটা হলেও বাড়িয়ে চলবেন। যেমনঃ আপনি যদি প্রথম দিন ব্যায়াম করার সময় দুইটি পুশ আপ দেন তবে পরের দিন চেষ্টা করবেন তার চাইতে আরো বেশি দেবার। আপনার পরবর্তীতে কম ব্যায়াম করার পরিকল্পনা থাকলেও সেটি যেন চলতে থাকে। প্রতিদিন এভাবে করে আপনার সেই কাজে অগ্রগতি আসতে থাকলে আপনার মধ্যে এক ধরনের অনুপ্রেরণা চলে আসবে পরবর্তী দিনে সেই আবার কাজটি করার। তাই কোন কাজ শুধুমাত্র ক্লান্ত হয়ে করে গেলেই হবে না, বরং এক্ষেত্রে প্রতিদিন-এর প্রতিজ্ঞা টিকে ও মনিটর করতে হবে।

সময়কে অপচয় করার কথা চলে আসলে অনেক সময় বলা হয়, আমার তো করার মত কিছুই নেই, তো আমি কি করবো? আসল কথাটি হলো, আপনি আপনার মাথা খাটিয়ে কোন কিছু বের করতে চান না এবং এজন্য আপনি সারাদিন ফেসবুক এবং ইউটিউবে সময় কাটিয়ে যাচ্ছেন। এতে কিছুই হবে না, বরং এতে করে আপনার মস্তিষ্ক অলস হতে থাকবে। আপনার মস্তিষ্কের মাসেল এর মতো, আপনার মস্তিষ্কের যত চর্চা করা হবে ততই সেটি আরও বেশি দক্ষ হবে। তাই প্রত্যেকটি জিনিস থেকে কিছু না কিছু শিখতে থাকতে হবে।

মোঃ লুৎফর রহমান (এম. এ., এম. এড)

সহকারী শিক্ষক,

ওয়েব ডিজাইনার,

গ্রাফিক্স ডিজাইনার,

ব্লগা্‌র,

ইউটিউব কন্টেন্ট ক্রিয়েটর,

ICT4E জেলা এম্বেসেডর এটুআই, দিনাজপুর

নির্বাচিত ইংরেজী মাস্টার ট্রেনার (TMTE Project of British Council Under DPE)

বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষক ইংরেজী, চারু ও কারুকলা এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়,

কুন্দারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

ঘোড়াঘাট, দিনাজপুর।

E-mail: [email protected]

প্রাথমিক শিক্ষার সকল আপডেট পেতে আমার সাইটে প্রতিদিন ভিজিট করুন। লিঙ্কঃ

https://lutfor11.blogspot.com


আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি