Loading..

প্রকাশনা

২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ

শ্বেত রঙ্গন

একদিন সফিপুর থেকে ফিরছি বাড়ির দিকে। কাজী বাড়ির বহির্বাটির পথ ধরে। হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়েছি। ফুলের ঘ্রাণ নাকি ফুল কোনটি থামিয়েছিল আমায় আজ এত বছর পর সে কথা ঠিকঠাক বলতে পারছি না। আমার শরীর থেকে তখন শৈশব খসে খসে পড়ছে। হাঁসের বাচ্চার মতো পালক গজাতে শুরু করেছে। দেখি খুব কাছে ছোট ছোট সাদা গুচ্ছ গুচ্ছ ফুল। এক একটি থোকায় অগণিত ফুল, যেন সাদা রঙের খুদে মৌমাছি করিয়াছে ভিড় সবুজ পাতাকে ছাপিয়ে। চারপাশে ছড়িয়ে পড়ছে মৃদু সুরভী। গাছটি উচ্চতায় আমার থেকে কিছুটা বড়, বয়সে আমার চেয়ে ছোট হবে বলে অনুমিত হলো। তখন আমি বারো-তেরো বছর বয়স অতিক্রম করছি। খানিক থেমে আবার হাঁটতে শুরু করেছি। আমার কোনোদিনই খুব বেশি তাড়া ছিল না কোনো কিছুতে। বাড়ি থেকে সফিপুর যাওয়ার পথটি চেটে চেটে দেখতে দেখতে চলতাম। গাছের নবীন পাতার চোখমেলা দেখার জন্য যেমন দাঁড়িয়ে পড়তাম তেমনি ঝরা পাতার হলুদ-লাল রঙের মাধুরিতে দিশেহারা হতাম। পথের পাশের বনের ধারের সেই গাছটি আর চোখে পড়েনি। একদিন দেখি সবুর কাকাদের ফুলের বাগানে সেই গাছটি। সবুর কাকা তাদের বসতবাড়িটি ফুলেল করে তুলেছিলেন তখন। কাকা গাছটি গভীর করে তুলে এনে লাগিয়েছিলেন বাড়ির আঙিনায়। একে তো আমার নাজুক বয়স তার ওপর কাকা বয়োজ্যেষ্ঠ, হয়তো তাই সাহস করে ফুলের নামটি জানতে চাইনি। তারপর একদিন গ্রাম ছেড়েছি, শহরে এসেছি, নানারকম ফুল চিনেছি, নাম জেনেছি। কিন্তু সেই বুনোফুলটি চোখে পড়েনি। পড়বে কেমন করে আমি তো তারপর বহুদিন দেখার বিলাসিতা ছেড়ে কেবল দৌড়ে পথ চলেছি রিকশায় আর বাসে।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি