Loading..

ম্যাগাজিন

১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:২৮ অপরাহ্ণ

শিউলি ফুল, মোছাঃ মার্জুয়ারা বেগম, প্রধান শিক্ষক, দক্ষিণ বালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডিমলা, নীলফামারী।


আজ তোমরা জানবে শিউলি সম্পর্কে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুড়ি প্রদেশে শিউলি রাষ্ট্রীয় ফুল। লিখেছেন মৃত্যুঞ্জয় রায়
শরৎ মানেই শিউলি আর শিউলি মানেই শরৎ। শীতে যে শিউলি গাছ পাতা ঝরিয়ে হতশ্রী, গ্রীষ্মে আবার সে পাতায় ভরা সবুজ সুন্দরী। শিউলির উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম ঘুপঃধহঃযবং ধৎনড়ৎ-ঃৎরংঃরং এবং পরিবার ঙষবধপবধব.


গ্রিক শব্দ ‘নিকট্যানথাস’ অর্থ নিশিপুষ্প এবং ‘আরবরট্রিসটিস’ অর্থ বিষাদিনী। গ্রীষ্মের বিষাদিনী শিউলি শরতে ফোটায় নিশিপুষ্প। রাতের ঐশ্বর্যময়ী ফুলভরা শিউলি গাছ সকালে ফুল ঝরিয়ে রিক্ত বিষাদিনী। রাতে ফোটা শিউলির সতেজতা দিনের আলো বাড়ার সাথে সাথেই মলিন হতে শুরু করে। শিউলি ফুল রাতের বেলায় ফুটে বেশ কিছুটা দূর পর্যন্ত সৌরভে ভরিয়ে তোলে চার দিক।
শরতের শিশিরভেজা ঘাসে কমলা রঙের নলাকার বোঁটায় সাদা পাপড়ির অজস্র ফুল পড়ে থাকার দৃশ্য লোভনীয়। শিশিরভেজা ঘাসে খালি পা মাড়িয়ে শিউলি ফুল কুড়ানোর একটা আলাদা সুখ আছে। রাতে ফুটে সকাল না হতেই ঝরে পড়ে বলে এই ফুলকে বলে ‘নাইট জেসমিন’। শিউলি ছাড়াও এর আরো অনেক নাম আছে; যেমন শিউলি, শেফালি, শেফালিকা (বাংলা), শেওয়ালি (মণিপুরী), ঘরমযঃ ঔধংসরহব ও ঈড়ৎধষ ঔধংসরহব (ইংরেজি), পারিজাত (মারাঠি), পারিজাতম (তেলেগু), গঙ্গা শিউলি (উড়িষ্যা) হরসিংগার, রাগাপুষ্পী, মালিকা ইত্যাদি।

শিউলি আমাদের দেশজ ফুল। শিউলি গাছ ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এর গাছ কাষ্ঠল, ঝোপাল, গুল্ম ও বহুবর্ষজীবী। বাকল সাদাটে ধূসর ও মসৃণ। পাতা ছয় থেকে ১২ সেন্টিমিটার লম্বা ও দুই থেকে ৬.৫ সেন্টিমিটার চওড়া, পাতা খসখসে, কিনারা খাঁজকাটা, পুরু, যৌগিক এবং স্বাদে তেতো। এ জন্য পাতার রস কৃমিনাশক হিসেবে কাজ করে। শিউলি পাতা বেটে রস করে খাওয়া যায়, ভাতা ঘিয়ে ভেজে গরম ভাত দিয়ে মেখে খাওয়া যায়। ফুল তারকা আকৃতি, পাঁচ পাপড়িবিশিষ্ট, পাপড়ি সাদা, বোঁটা কমলা। দুই থেকে সাতটি ফুল একটি থোকায় ফোটে। ফুল অনেক সময় কাপড়ে হলুদ রঙ করতে ব্যবহৃত হয়। ফুল থেকে সুগন্ধি তৈরি হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও থাইল্যান্ডের কাঞ্চনাবুড়ি প্রদেশে শিউলি রাষ্ট্রীয় ফুল। বীজ দিয়ে শিউলির চারা তৈরি করা যায়। ফুল ফোটা শেষ হলে সেসব গাছ থেকে শুকনো বীজ সংগ্রহ করে পানিতে ভিজিয়ে মাটিতে পুঁতে দিলে সেখানেই গাছ জন্মে। চারা রক্ষা করে যতœ নিলে পরের বছরই ফুল ফোটে। এ এক দারুণ ব্যাপার।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি