Loading..

খবর-দার

১৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৭:২৫ অপরাহ্ণ

সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ঃ মোবাইল, ইন্টারনেটের লাগামহীন অপব্যবহার দেশের নতুন প্রজন্মের সর্বনাশ করছে।

বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বিশ্বায়নের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তির ব্যবহারে আমরা যেভাবে দৌড়াচ্ছি; এতে অদূর ভবিষ্যতে জাতি চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।বাচ্চারা দিন নেই, রাত নেই, সব সময় মোবাইলে পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেইম খেলছে। এমনকি খেতে না চাইলে মা-বাবা বাচ্চাদের হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিয়ে খাওয়ান। বোঝার আগেই এভাবে শিশুরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েন মোবাইল ফোনে। শিক্ষিত অথচ অচেতন অনেক অভিভাবককে গর্ব করে বলতে শোনা যায়, আমার ছেলে-মেয়ে এই বয়সেই ‘মোবাইল বিশারদ’। ফোন সেটের কোন ফোল্ডারে কী আছে; কোথায় কোন যন্ত্রাংশ, গেম সবই তার মুখস্থ। শিশুরা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। ছোট শিশু এবং প্রাইমারি স্কুলপড়ুয়া ছেলে-মেয়েদের অ্যাপ, গেম, ভিডিও, চ্যাটিং নেশায় পরিণত হয়েছে। ইন্টারনেটের ভেতরে আছে জ্ঞানের মহাসমুদ্র। বিজ্ঞানের বদৌলতে গুগলে গেলে ভালো-মন্দ সব তথ্যই পাবেন। প্রশ্ন হলো মোবাইল ব্যবহার করে আমাদের ছেলেমেয়ে কী সেই জ্ঞানার্জনে সে তথ্যই ভালোটা নিচ্ছে? নাকি মোবাইল-ইন্টারনেটের অপব্যবহারে নেশার রাজ্যে ডুবে যাচ্ছে? বলে রাখি, ছুরি অতি প্রয়োজনীয় বস্তু। ছুরি নানা কাজে ব্যবহৃত হয়। ডাক্তার ছুরি রোগীর অপারেশনের কাজে ব্যবহার করেন; সেই ছুরি সন্ত্রাসী-ছিনতাইকারী খুনের কাজে ব্যবহার করেন। ছুরির দোষ নেই; সেটা কী কাজে ব্যবহার হচ্ছে সেটাই মুখ্য। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মোবাইলের প্রয়োজনীয়তা ও গুণাগুণ বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। কিন্তু আপনি কিভাবে ব্যবহার করছেন বা ওই সবের ভালোমন্দ কোনটা নিচ্ছেন, সেটাই মুখ্য। মোবাইল, ইন্টারনেটের লাগামহীন অপব্যবহার দেশের নতুন প্রজন্মের সর্বনাশ করছে। মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেটের ‘অতি’ ব্যবহারে শিশুরা অসামাজিক হয়ে উঠছে। শিশুদের কল্পনাশক্তি হ্রাস, পড়াশোনায় অমনোযোগী, চোখের সমস্যা, ঘুম কম, অতিরিক্ত ওজন ও আত্মকেন্দ্রিক হওয়ার জন্য দায়ী ওই মোবাইল।এ থেকে উত্তরণের পথ অনেকটা চ্যালেঞ্জিংও বটে। তারপরেও শিক্ষাব্যবস্থার সাথে যারা জড়িত আছেন, তাদের বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।বিশেষ করে অভিভাকদের এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।কারণ সন্তানই আপনার -আমার শ্রেষ্ট সম্পদ। আজ আর নয়। খোদা হাফেজ।

ফয়সল আহমদ

সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান)

লক্ষণাবন্দ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়

গোলাপগঞ্জ,সিলেট।

ICT4E জেলা শিক্ষক অ্যাম্বাসেডর।