Loading..

ম্যাগাজিন

১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০৬:৪৪ অপরাহ্ণ

রাগ কমান- সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
img
Muhammad Ahsan Habib

সহকারী প্রধান শিক্ষক


রাগ কমান- সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
(সময় থাকলে দয়া করে একটু পড়ুন)
রাগ কি?
কারো স্বার্থের পরিপন্থি কোন সিদ্ধান্ত/পদক্ষেপ এর বিপরীতে অবস্থান গ্রহণ করা এবং উত্তেজিত অবস্থায় স্বাভাবিক আচরণের অস্বাভাবিক চারিত্রিক পরিবর্তন/আচরণই হলো রাগ।
রাগ হলে কি কি হয়?
=> চোখ বড় বড় হয়
=> চোয়াল মুখ শক্ত হয়
=> হাত-পা কাপে, প্রেশার বাড়ে
=> হাতের মুষ্ঠি শক্ত হয়ে যায়
=> উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়
=> মস্তিস্কে রক্ত ক্ষরণ হয়
=> হার্ট ব্লক হয়ে যায় / কিডনী অকেজো হয়
=> ডায়াবেটিসের মাত্রা বেড়ে যায়
=> মাথা ঝিমঝিম করে
=> মন প্রচন্ড অস্থির হয়ে পড়ে
=> উত্তেজিত অবস্থায় কাউকে আঘাত করার প্রবণতা বাড়ে
=> সারা শরীরে অস্বাভাবিক মাত্রায় রক্ত সঞ্চালন হঠাৎ করে বেড়ে যায়
=> নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে নিজেকে কোন বিপদের মাঝে ঠেলে দেয়
** প্রায় ২৭ রকমের নীরব ঘাতি রোগের জন্ম দেয় রাগ। এক কথায় রাগ করা আর জেনে শুনে বিষপান একই কথা।
রাগ কয় প্রকার?
আপনি কোন শ্রেণির রাগী মানুষ তা নির্ণয় করুন নিচের তালিকা থেকে-
(১) দ্রুত রাগ এবং দ্রুত থেমে যাওয়া
(স্বাভাবিক মানুষের লক্ষণ- এদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা যাবে)
(২) দেরীতে রাগ এবং দেরীতে থেমে যাওয়া
(স্বাভাবিক মানুষের লক্ষণ- এদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা যাবে)
(৩) দেরীতে রাগ এবং দ্রুত থেমে যাওয়া
(উৎকৃষ্ট মানুষের লক্ষণ- এই ধরণের মানুষের সংখ্যা যথেষ্ট কম)
(৪) দ্রুত রাগ কিন্ত অনেক দেরীতে থেমে যাওয়া
(নিকৃষ্ট মানুষের লক্ষণ- এদের সাথে সম্পর্ক না রাখাই ভালো)
(৫) মহামানব ( আল্লাহ প্রদত্ত যাদের কোনো প্রকার রাগ নাই-এমনটা বিরল)
রাগ প্রশমনের উপায়ঃ
ধাপ-(১)
যার সাথে আপনার রাগ হয়েছে সম্ভব হলে দ্রুত তার সামনে থেকে কেটে পড়ুন। এককথায় স্থান ত্যাগ করুন।
ধাপ-(২)
ঠান্ডা পানি পান করুন, সম্ভব হলে ওজু করে নামাজ পড়ুন। (ধর্ম ভেদে ধর্মীয় উপাসনা করুন/মেডিটেশন করুন)
ধাপ-(৩)
নীরবে নিভৃত্বে একাকী কিছু সময় কাটান এবং সেই সংগে কি জন্য রাগ হলো তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।
অর্থ্যাৎ আপনার রাগ করাটা কতটুকু যৌক্তিক ছিল বা অপর পক্ষে তার রাগ করাটা কতটুকু যৌক্তিক চুলচেরা বিশ্লেষণ করুন। এই এক্ষেত্রে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হউন, যদি আপনার রাগ করাটা অযৌক্তিক হয় তাহলে অপর পক্ষের কাছে গিয়ে কোন ভণিতা ছাড়াই Sorry বলুন, ক্ষমা চান। আর যদি অপর পক্ষের রাগ অযৌক্তিক হয় তাহলে তাকে যতটা সম্ভব খোলা মনে বুঝিয়ে বলুন যে, তোমার এমন আচরণ/বাজে কথা বা রাগ করাটা ঠিক হয় নি। তাকে তার ভুল ধরিয়ে দিন। তথাপি এই সময় যদি কোনো এক পক্ষ আবারো উত্তেজিত হয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়সহ আবারো রাগ দেখাতে থাকে তাহলে ধাপ (১), (২) ও (৩) প্রক্রিয়াটি পরবর্তী ০৩ (তিন) দিন চালিয়ে যান। যদি কোনো এক পক্ষের আচরণে এমন কোন পরিবর্তন দেখেন যে রাগ কমে এসেছে তাহলে নিজ গুণে তাকে ক্ষমা করে দিন বা ক্ষমা চেয়ে নিন। মুখ ফুটে ক্ষমা চাইতেই হবে কিংবা আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম এটা মুখে বলতেই হবে এমন কোনো মানে নেই। যদি নুন্যতম এক পক্ষের কোনো নমনীয় মনোভাব দেখেন কারোর মধ্যে তাহলে দেরী না করে তাকে কাছে টেনে নিন। সংসার জীবন সুখের হবে।
আর যদি তা না হয়, অর্থ্যাৎ ধাপ (১), (২) ও (৩) প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করার পরও যদি অপরপক্ষ রাগ দেখিয়ে যেতে থাকে এবং আপন (০৩ বার) ক্ষমা চাওয়ার পরও আপনাকে ক্ষমা করে দিচ্ছে না, তাহলে কি করবেন? যে আপনার উপর রেগে আছে, তার একদম নিকট আত্মীয় স্বজনের শরনাপন্ন হউন (যার কথা সে শোনে ও মানে); পুরো বিষয়টি তাকে খুলে বলুন, আপনি যে (০৩ বার) ক্ষমা চেয়েছেন সেই কথাও বলুন। এবার নিকট আত্মীয়কে সাথে নিয়ে তাকে আবারো বোঝানোর চেষ্টা করুন। এরপরও যদি সে না মানে, তাহলে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিন। সম্পর্ক কাট-আপ করুন। এ ধরনের মানুষের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার চাইতে না রাখাই ভালো। সে আপনার মা-বাবা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী বা বন্ধু মহলের যে কেউ হোক না কেন? প্রয়োজনে তাকে আপনার কাছ থেকে আলাদা করে দিন এবং ২/৩ মাস সময় নিন। যদি এই সময়ের মধ্যে ভুল বুঝে ফিরে আসে, তাহলে ভালো, নতুবা যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) সম্পর্ক ত্যাগ করুন। অতএব রাগ কমান- সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

আরো দেখুন

কোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যাইনি